পদ্মা ইসলামী লাইফের ব্যবসায় ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা ইসলামী লাইফ বিক্রি করে দেন পরিচালকরা। কোম্পানির সকল দায়সহ ১২ পরিচালক এবং ৬ শেয়ারহোল্ডারের হাতে থাকা ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৯০০ শেয়ার কিনে নেয় এস আলম গ্রুপ।  

কোম্পানিটির মালকিানা বদলরের এ খবর ছড়িয়ে পরার পরই কর্মীদের মাঝে তৈরী হয় অস্থিরতা। যার ফলে ব্যবসায় বড় ধরনের ধসের সম্মুখীন হয় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এক বছরের ব্যবধানে ৭৩ শতাংশ প্রিমিয়াম আয় কমেছে এ কোম্পানির।

এ প্রসঙ্গে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোহাম্মদ ওয়াসিউদ্দীন বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই কোম্পানির মালিকানা বদল নিয়ে আমাদের কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছিল। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়।

কোম্পানিটি ২০১৮ সালে সর্বমোট নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৭ সালে নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৪২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আইডিআরএ’তে দাখিল করা কোম্পানিটির ব্যবসায়িক প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

এদিকে, দ্বিতীয় বর্ষ ও তদুর্ধ্ব নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ২৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে পদ্মা ইসলামী লাইফ সর্বমোট নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৪৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৭ সালে কোম্পানিটির সর্বমোট নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৬৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ সালে ১১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে পদ্মা লাইফ। একইসময়ে দ্বিতীয় বছরের নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে ৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ সময় তৃতীয় ও তদুর্ধ বছরের নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

২০১৭ সালের চেয়ে ২০১৮ সালে কোম্পানিটি ৩০ কোটি ৭০ লাখ টাকা কম প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি ৭৩ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে।

তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে পদ্মা ইসলামী লাইফ ৪২ কোটি ১৩ লাখ টাকা প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। ২০১৮ সালের এসে এসব পলিসি থেকে প্রিমিয়াম আসে ৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা বা ৮৬ শতাংশ প্রিমিয়াম তামাদি হয়েছে।

এদিকে, সম্প্রতি গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধ ও গ্রাহক হয়রানি বন্ধে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থেকে পাঠানো এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে আইডিআরএকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

আইডিআরএ’র একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যাসহ ৭ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে চিঠি দেয়া হয়েছে। অন্যথায় গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় বীমা আইন ২০১০ অনুসারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।