ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ারনেস কমিটি গঠনের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমাখাত প্রসারে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ জনসচেতনতা। তাই দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে বীমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ারনেস কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বীমা সচেতনতামূলক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশ বীমাখাত উন্নয়ন প্রকল্প (বিআইএসডিপি)’র উদ্যোগের রেইজিং অ্যাওয়ারনেস রিগার্ডিং ইন্স্যুরেন্স শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের সভাপতি আইডিআরএ চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমাদের বীমার ইতিহাস অনেক পুরাতন। কিন্তু আমি আইডিআরএতে যোগদানের পর দেখলাম কোন উন্নয়ন নেই, সবকিছু অগোছালো। আমরা বীমা দাবি নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়েছি। গত দেড় বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা দাবি নিষ্পত্তি করেছি।

তিনি বলেন, আমরা দু’টি কাজ করা উদ্যোগ নিয়েছি। বীমাখাতে যে ইমেজ ক্রাইসিস আছে তা আমরা দূর করা চেষ্টা করছি। বীমা গ্রাহকের দাবি পাওয়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। এ জন্য আমরা একটি সেলও গঠন করেছি। বীমার টাকা পেতে কেউ অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেই।

শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমরা বীমাখাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। বীমার ইতিহাসে কেউ নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত কমিশন বন্ধ করতে পারেনি। আমরা এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। আশা করি এবার অতিরিক্ত কমিশন দেয়া বন্ধ হবে। কেউ ১৫ শতাংশের উপরে কমিশন দিতে পারবে না।

বীমাখাতের উন্নয়নে ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ারনেস কমিটি গঠনের প্রস্তাব জানিয়েছে জেবিসি’র চেয়ারম্যান শেলীনা আফরোজ বলেন, বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। তাই এবারের প্রকল্পটি সঠিকভাবে সাজাতে হবে। তা না হলে এ প্রকল্পও সফল হবে না। এ জন্য প্রকল্পের কার্যক্রম মূল্যায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, বীমা সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট সচেতনতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে বীমার বিষয়ে তার শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে। তা না হলে বীমা সম্পর্কে সচেতনতা আসবে না। তিনি গ্রাম পর্যায়ে এজেন্ট তৈরির পরামর্শ দেন। ফ্যামিলি প্ল্যানিং যেভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে সেভাবে তিনি কাজ করতে বলেন। এ জন্য আইডিআরএ’কে ভূমিকা পালন করতে হবে।

শেলীনা আফরোজ আরো বলেন, শ্রম আইনে বলা আছে সব শ্রমিককে বীমার আওতায় আনতে হবে। সরকারি চাকরিজীবীদেরও বীমার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বীমাখাতের প্রসারে এসব বিষয় বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।

শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি বাড়ছে। বীমাখাতও বাড়ছে। কিন্তু অর্থনীতিতে বীমার অবদান বাড়ছে না। এর মূল কারণ বীমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঠিক ধারণা নেই। তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে না। তাই বীমাখাত প্রসারে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা বলেন, বীমার ক্ষেত্রে প্রতারণার বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত। প্রতারণার অভিযোগ উঠার কারণ এ খাতে স্বচ্ছতার অভাব। আমরা দেখলাম আইডিআরএ গঠনের পর বীমাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওার চেষ্টা করা হচ্ছে, একই সঙ্গে নানা অভিযোগও আসছে।