দীপেনের পারফর্মেন্স এবারো খারাপ: ব্যবসা হারিয়েছে প্রগ্রেসিভ লাইফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীপেন ‍কুমারের পারফর্মেন্স এবারো খারাপ। সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছরেও ব্যবসা কমে গেছে ৭.৯৫ শতাংশ। অতিরিক্ত ব্যয় করেছে সোয়া ১০ কোটি টাকা। তবে এমন পারফর্মেন্সেও দীপেনকেই মূখ্য নির্বাহী হিসেবে চায় প্রগ্রেসিভ লাইভের চেয়ার‌ম্যান জাকারিয়া আহাদ। আর তাই বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়নি বলে পরবর্তী বোর্ড সভা পর্যন্ত সময়ের জন্য চলতি দায়িত্বে মূখ্য নির্বাহী পদে নিয়োগ দিতে আবেদন করেছেন তিনি।  এমন আবেদন নিয়ম বহির্ভুত ও হাস্যকর বলে মনে করছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মূখ্য নির্বাহী পদে আবেদন করা ব্যক্তিকে চলতি দায়িত্ব হিসেবে আবেদন করা নিয়ম বহির্ভুত।

দীপেন কুমার প্রগ্রেসিভ লাইফে ৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ পান ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর। এই হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৬ অক্টোবর।

দীপেনকে প্রগ্রেসিভ লাইফে নিয়োগ দেয়ার পূর্বেই তার ব্যবসায়িক পারফমেন্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।

দীপেনের নিয়োগের বিষয়ে আইডিআরএ’র একাধিক সদস্য মতামতে জানান, স্বদেশ লাইফে থাকাকালে দীপেন কুমারের ব্যবসায়িক পারফর্মেন্স অত্যন্ত দুর্বল ছিল। তাই প্রগ্রেসিভ লাইফে তার নিয়োগ যৌক্তিক হবে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন মতামতের পরেও কোম্পানিটিতে নিয়োগের অনুমোদন পান দীপেন কুমার সাহা রয়। কথিত আছে, এক প্রভাবশালী ব্যবসায়িক নেতার সুপারিশে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

অন্যদিকে অভিজ্ঞতার সনদে মিথ্যা তথ্য ও শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেই মূখ্য নির্বাহী হন দীপেন কুমার সাহ রয়। এমন অভিযোগ নিয়ে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

দীপেন কুমার প্রগ্রেসিভ লাইফে নিয়োগ পান ২০১৬ সালে ১৭ অক্টোবর। এর পর থেকেই কোম্পানিটির ব্যবসায়ীক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০১৮ সালেও কোম্পানির ব্যবসায়ীক অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।

সূত্র মতে, ২০১৮ সালে নতুন ব্যবসা কমে গেছে ২৮.০৪ শতাংশ। বছরটিতে নতুন ব্যবসা (১ম বর্ষ প্রিমিয়াম) সংগ্রহ হয়েছে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যা আগের বছর ২০১৭ সালে ছিল ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ১১ হাজার টাকা।  আর ২০১৮ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমে গেছে ৭.৯৫ শতাংশ।  ২০১৮ সালে কোম্পানিটি ব্যবসা করে ৬৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের বছর ২০১৭ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৭৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। 

অপর দিকে ব্যবসা কমলেও বেড়েছে ব্যয়। প্রতি বছর অতিরিক্তি ব্যয় কমানোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানেনি কোম্পানিটি। অতিরিক্ত ব্যয় কমাতো দূরের কথা ২০১৮ সালে আরো বেড়েছে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে অতিরিক্ত ব্যয় বেড়েছে ১.০৬ শতাংশ।

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ৬৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহে কোম্পানিটি অতিরিক্ত ব্যয় করেছে ১০ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।  যা মোট প্রিমিয়ামের ১৪.৮৯শতাংশ।

২০১৭ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। অতিরিক্ত ব্যয় ১০ কোটি ৩২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। যা মোট প্রিমিয়ামের ১৩.৮৪ শতাংশ।

এসব বিষয়ে কথা বলতে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দীপেন কুমার সাহা রায়’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।  

আরো পড়ুন-

দীপেনের পারফরমেন্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আইডিআরএ: ৩ বছরে ৩৯ % ব্যবসা হারিয়েছে প্রগ্রেসিভ লাইফ