বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি (২) গঠন করছে আইডিআরএ, আসছে নতুন মুখ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বড় অঙ্কের বীমা দাবির অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি (২) গঠন করতে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এ লক্ষ্যে গঠিত সার্চ কমিটি এরইমধ্যে নতুন একজন চেয়ারম্যান ও ৩ জন সদস্যের নাম প্রস্তাব করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০১২ এর প্রবিধি ৩ অনুসারে ‘বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি (২)’ গঠনের জন্য গত ১৫ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষের সদস্য আইন-কে আহবায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি ‘সার্চ কমিটি’ গঠন করা হয়।

সার্চ কমিটি সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্য থেকে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির জন্য বাছাইকৃত চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নাম নির্বাচন সংক্রান্ত ‘প্রতিবেদন’ এবং পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের জীবন বৃত্তান্ত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করেছে।

বিধান অনুসারে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির চেয়াম্যান হবেন- সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। বাকী তিনজন সদস্য হবেন কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় বীমা বিজ্ঞান, একচ্যুয়ারিয়াল বিজ্ঞান, অর্থ, অর্থনীতি, আইন বা হিসাব বিজ্ঞানে ব্যবহারিক ও বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি।

সার্চ কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি (২) গঠনের জন্য সুপারিশ প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি মো. আলী আসগর খান, তিনি কমিটির প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও মো. হাসমত আলী, আবু সরফ মঞ্জুরুল হক ও এস এম ইব্রাহীম হোসেন কমিটির প্রস্তাবিত সদস্য।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আলী আসগর খান ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। মো. হাসমত আলী সর্বশেষ কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। আবু সরফ মঞ্জুরুল হক বর্তমানে চার্টার্ড একাউন্টেন্টস এফএএমইএস এন্ড আর এর ম্যানেজিং পার্টনার। এস এম ইব্রাহীম হোসেন বর্তমানে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির চীফ ফ্যাকাল্টি মেম্বার।

বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে নিয়োগের বিষয়ে তাদের সাথে প্রাথমিক আলোচনা করা হয়েছে বলেও সার্চ কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আরায়েস উদ্দিন ছিলেন ওই কমিটির চেয়ারম্যান। আর এসবিসি’র তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. সোহরাব উদ্দিন, আইডিআরএ’র সদস্য মো. কুদ্দুস খান এবং ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফিন্যান্সের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক এম এ বাকী খলীলী ছিলেন সদস্য।

আইন অনুসারে, লাইফ বীমার ক্ষেত্রে যেকোনো সংক্ষুব্ধ বীমা গ্রাহক ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বীমা দাবি নিষ্পত্তির আবেদন করতে পারেন আইডিআরএ’তে। আর নন-লাইফ বীমার ক্ষেত্রে এ পরিমাণ সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। উভয় ক্ষেত্রে দাবির পরিমাণ এর বেশি হলেই আবেদন করতে হয় বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে।

এই আবেদন করতে হয় বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর। আবেদনের সঙ্গে আবেদনকারীকে মোট বীমা দাবির ২ শতাংশ টাকা পে-অর্ডার বা ডিডি করে আইডিআরএ বরাবর জমা দিতে হয়। এরপর উভয় পক্ষকে শুনানিতে ডেকে সিদ্ধান্ত দেন কমিটি। তবে কমিটির সিদ্ধান্তে কোনো পক্ষ অসন্তুষ্ট হলে তিনি এর বিরুদ্ধে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।