অর্থায়ন হতে পারে ভৌত কাঠামো নির্মাণে, প্রয়োজন আইনের সংস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ভৌত অবকাঠোমো নির্মাণে অর্থায়ন করতে পারে বীমাখাত। এজন্য প্রয়োজন আইনের সংস্কার, সরকারের সহযোগিতা। প্রথম আলো'র আয়োজনে 'দেশে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ সুপারিশ করেন বক্তারা। বীমাখাত থেকে ওই বৈঠকে অংশ নেন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার এ বিষয়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী আমাদের জীবন বীমা তহবিলের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আমাদের সম্পদের পরিমাণ হলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা কোথায় বিনিয়োগ করতে পারব, এ জন্য সকারের নিয়ম রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে আমাদের জমা আছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। সকারের নিয়ম অনুযায়ী ৩০ শতাংশ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ডে জমা আছে। কিছু স্থায়ী সঞ্চয়, পুঁজিবাজার ইত্যাদি ক্ষেত্রে আছে।

আমাদের আরও অনেক টাকা আছে, যা বিনিয়োগ করার ক্ষেত্র নেই। ১৯৫৮ সালের বীমা আইন এখনো চলছে। ফলে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারছি না। কারণ, আইন  সংস্কার করা প্রয়োজন।

২০১০ সালে সংসদে আইন পাস হয়েছে। আমাদের ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের নিরাপদ উৎস পাই না। আমাদের টাকা মানুষের জীবন বীমার টাকা। নির্দিষ্ট সময় পর এগুলো ফেরত দিতে হবে। এ জন্য আমরা ইচ্ছা করলেই সব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারি না।

ভারতের জীবন বীমা কোম্পানিগুলো ভৌত কাঠামোতে বিনিয়োগ করছে। তারা এখন আমাদের দেশেও ব্যবসা করছে। তারা ভৌত কাঠমোতে প্রায় দুই লাখ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া তারা রাস্তা, বন্দর, সেতু, সেচ, টেলিকমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করেছে। ভারতের কয়েকটি রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা করে তাদের দেশের জীবন বীমা কোম্পানিগুলো।

আমাদের দেশে বিনিয়োগের এসব সুযোগ নেই। এখন অবশ্য নিয়ম হচ্ছে। ১৫ শতাংশ টাকা ভৌত অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের একটা প্রক্রিয়া চলছে। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে ২০ শতাংশ টাকা বিনিয়োগ করতে পারব।

বীমার নিয়ম অনুযায়ী ৮ শতাংশ লাভ করতেই হবে। তা না হলে বীমাধারীদের টাকা দিতে পারব না। পদ্মা সেতুর যখন উদ্যোগ নেয়া হয়, তকন আমদের ২০ হাজার কোটি টাকা বীমা তহবিল ছিল। বনেট্ডর মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলাম। সেটা হয়নি।

সরকার আইন করলে আমরা রাস্তা, বন্দর, সেতু, সেচ, টেলিকমিউনিকেশন, বিুদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারি। তাহলে আমাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে, দেশও এগিয়ে যাবে।

প্রথম আলো'র সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুমের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়েক সারকারের অর্থ উপদেষ্টা ও ব্রাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, সাবেক বিদ্যুৎ সচিব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফয়সাল আহমেদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের পরিচালক ও এনার্জিপ্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ,

পিপিপি অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন, দ্য সিটি ব্যাংক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সোহেল আর কে হুসেইন, আবদুল মোনের লি. এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এ এস এম মাইনুদ্দিন মোনেম, ইডকল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ মালিক, ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনুদ্দিন হাসান রশিদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কান্ট্রি হেড অব গ্লোবাল ব্যাংকিং নাসের এজাজ।