সহবীমা (CO-INSURANCE) –সহজ সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: সহবীমা (CO-INSURANCE) বীমা কোম্পানির মধ্যে যৌথ এবং পৃথক চুক্তি। এই ব্যবস্থায় একাধিক বীমা কোম্পানি অংশগ্রহণ করে থাকে।

সহবীমা স্লিপে (Co-insurance slip) বীমা কোম্পানির অনুমোদিত অফিসার/ ম্যানেজার নিজ নিজ অংশের বিপরীতে দস্তখত এবং কোম্পানির সিল প্রদান করে থাকে। সহবীমা স্লিপ মূল পলিসির অংশ হিসেবে সংযুক্তি করা হয়। বীমাগ্রহীতা শুরু থেকেই সহবীমা সম্পর্কে অবগত থাকে।

এই পদ্ধতিতে প্রত্যেক বীমা কোম্পানি স্বীয় অংশের প্রিমিয়াম গ্রহণ করে থাকে। একইভাবে দাবির বেলায় প্রত্যেক কোম্পানি নিজ নিজ অংশ অনুযায়ী দাবি পূরণে অংশগ্রহণ করে থাকে।

এখানে উল্লেখযোগ্য যে, বীমাগ্রহীতা ইচ্ছা করলে ক্ষতির শহভাগ মূল বীমা কোম্পানির (যে কোম্পানি পলিসি ইস্যুর জন্য দায়ী) নিকট থেকে আদায় করতে পারে বা সহবীমা কোম্পানির কাছ থেকে প্রত্যেকের অংশ অনুযায়ী আদায় করতে পারে।

সাধারণত অপেক্ষাকৃত বৃহৎ ঝুঁকির বেলায় সহবীমা ব্যবস্থা করা হয়।

পুনর্বীমা (REINSURANCE):

সহজ ভাষায় বীমার পুনরায় বীমাকরণকে পুনর্বীমা বলা হয়। পুনর্বীমাকে বীমার মেরুদণ্ড (Backbone) বলা হয়।

এই ব্যবস্থায় প্রাথমিক বীমা কোম্পানি (Primary Insurer) বা প্রধান বীমা কোম্পানি (Original Insurer) বীমাগ্রহীতার নিকট থেকে শতভাগ ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে।

প্রাথমিক বা প্রধান বীমা কোম্পানি অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা হিসাবে ঝুঁকির একটি নির্দিষ্ট অংশ একাধিক বীমা কোম্পানি বা পুনর্বীমা কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে থাকে।

বীমা চুক্তি প্রথমত বীমা কোম্পানি এবং বীমাগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত হয়। কিন্তু পুনর্বীমা চুক্তি প্রাথমিক বীমা কোম্পানি এবং পুনর্বীমা কোম্পানির মধ্যে সম্পাদিত হয়।

পুনর্বীমা চুক্তির সাথে বীমাগ্রহীতার কোন সম্পর্ক নাই। এটি প্রথম চুক্তি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং স্বতন্ত্র। পুনর্বীমা সম্পর্কে সচরাচার বীমাগ্রহীতা অবগত থাকে না।

দাবির বেলায় বীমাগ্রহীতা দাবির শতভাগ প্রাথমিক বীমা কোম্পানির নিকট থেকে আদায় করে থাকে।

দাবি পূরণ বা নিষ্পত্তির পর প্রাথমিক বীমা কোম্পানি পুনর্বীমা কোম্পানির নিকট থেকে দাবির স্বীয় অংশের টাকা পুনরুদ্ধার (Recover) করে থাকে।

এখানে উল্লেখযোগ্য যে, প্রাথমিক বীমা কোম্পানি কোন কারণে যেমন- পুনর্বীমা কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার কারণে দাবির টাকা পুনরুদ্ধার করতে অসমর্থ হলে তা প্রাথমিক বীমা কোম্পানির আর্থিক ক্ষতির সামিল। যার সাথে বীমাগ্রহীতার কোন প্রকার সম্পর্ক বা লেনদেন নাই।

পুনর্বীমার উপকারিতা:

১। পুনর্বীমার মাধ্যমে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ঝুঁকি বিস্তার করা সম্ভব।

২। পুনর্বীমা বীমা বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

৩। পুনর্বীমা প্রাথমিক বীমা কোম্পানির অবলিখন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

৪। পুনর্বীমা আকস্মিক মহা-দুর্যোগের সময় (Natural Calamity) সুরক্ষা প্রদান করে।