ফণীর দাপটে বীমা দাবি যতো

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: কিছুদিন আগে সাইক্লোন ফণী’তে বেশ উদ্বিগ্ন ছিল মানুষ। সব উৎকণ্ঠার পর এখন অনেকটা চিন্তামুক্তি। তবে ফণীর দুশ্চিন্তা কাটলেও এর ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব এখনও রয়েছে। ভারতের উড়িষা রাজ্যের উপকূলে গত ৩ মে ফণী আঘাত হানে। এর প্রভাবে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়। ঝড়ের উন্মাদনা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। ফলে কিছু এলাকায় ফসলি জমি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

বীমাকারীরা বলছে, শস্য ও সম্পদের গ্রাহকদের থেকে বেশি বীমা দাবি উঠবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফণী হামলায় দুই হাজার কোটি রুপি বীমা দাবি উঠবে।

দেশটির বেসরকারি বীমা কোম্পানির ক্লেইম বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করছি। প্রাথমিকভাবে অনুমাণ করা হচ্ছে যে দুই হাজার কোটি রুপি ক্ষতি হতে পারে। তবে সম্পদ বিনষ্ট হওয়ার কারণে বীমা দাবি আরও বাড়তে পারে।

সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইক্লোন ফণীর আঘাতে উড়িষাতে ৫০০ ভবন, ৩০০ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার হওয়ার রাজ্যটিতে অবকাঠামোগত এই ক্ষতি হয়।

বীমা কোম্পানিগুলো উড়িষাতে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পদের বীমা করা আছে কিনা সে সংক্রান্ত জরিপ করছে। শস্যের ক্ষতি স্যাটেলাইট ও ড্রোনের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এরপর কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানিগুলো তথ্য নেবে। বীমা দাবি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা এসব খতিয়ে দেখছে।

এদিকে ফণীর প্রভাবে রাজ্যটির ৩৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রাদেশিক রাজধানী ভুবনেশ্বর এবং তীর্থ নগরী পুরী সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়টি মোকাবিলার জন্য ওড়িশা সরকার আগেই উপকূলবর্তী ১০ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়।

২০১৮ সালের জুলাই ও আগস্টে কেরালা বন্যায় বীমা কোম্পানিগুলো তিন হাজার ২০০ কোটি রুপি দাবি গ্রহণ করেছে। রাজ্যটিতে অধিকাংশ গাড়ি ও বাইক অতিবৃষ্টির কারণে ডুবে যায়। ফলে অধিকাংশ বীমা দাবি ছিল মোটর ইন্স্যুরেন্সের।

ভারতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বীমা দাবি দিনে দিনে বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে সাইক্লোন হুদহুদ ও পাইলিন এবং উত্তরখানে আকস্মিক বন্যায় বীমা দাবি উঠেছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি রুপি।

সুইস রি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বীমা দাবি উঠেছিল ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০১৭ ও ১৮ সাল মিলে বীমা কোম্পানির মোট ক্ষতি হয়েছে ২১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

প্রসঙ্গত, সাইক্লোন 'ফণীর' নাম দিয়েছে বাংলাদেশ, এর অর্থ সাপ (ফণা আছে যার)। এটি এ বছর উত্তর ভারত মহাসাগরের প্রথম তীব্র সাইক্লোন।