গ্রুপবীমায় প্রিমিয়াম আয় হতে পারে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে: এম. এম. মনিরুল আলম

শ্রমআইন ২০১৩ অনুসারে কোনো প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন স্থায়ী শ্রমিক থাকলে গ্রুপবীমা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। অথচ সরকারের এ আইন কেউ মানছে না। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো তা মানছে কি না তা নিয়েও সরকারের কোনো তদারকি নেই। অথচ সরকার নজরদারি বাড়ালে এ খাত থেকে বছরে প্রিমিয়াম আয় হবে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

ইন্স্যুরেন্সনিউজ বিডির সঙ্গে আলাপকালে এমন চিত্রের কথা জানালেন গ্রুপবীমা খাতে ব্যবসাসফল ব্যক্তিত্ব প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এম. এনিরুল আলম ।
মনিরুল আলম বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণে গ্রুপবীমা ব্যাপক সম্ভাবনাময় একটি খাত। অথচ বীমা কোম্পানিগুলো এ দিকটির প্রতি নজর না দেয়ায় এ খাতে ব্যবসা বাড়ছে না। এর কারণ হিসেবে সরকারের অবহেলা ও বীমা কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের গ্রুপবীমার বিষয়টি না বোঝাকেই দায়ি বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও রয়েছে গ্রুপবীমাখাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব।
তিনি বলেন, গ্রুপবীমা ব্যবসা প্রসারিত হলে বীমা কোম্পানিগুলোরেই শুধু ব্যবসা বাড়বে তাই নয়। এতে বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে খুব সহজেই বীমাসুবিধার আওতায় আনা যাবে। তিনি জানান, গ্রুপবীমায় মাত্র ৫০০ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে একজন শ্রমিকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। এতে একজন শ্রমিক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হলে বা মারা গেলে পাবেন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
মনিরুল আলম বলেন, দেশে বর্তমানে মাত্র ১ হাজার বা তার কিছু বেশি প্রতিষ্ঠান গ্রুপবীমার আওতায় এসেছে। অথচ দেশে হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাত্র ১০ জন শ্রমিক থাকলেই তাদের গ্রুপবীমার আওতায় বীমাসুবিধা দেয়া যায়।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত হতে হলে গ্রুপবীমা থাকতে হবে, শিক্ষা বোর্ড থেকে এমন নির্দেশও রয়েছে অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রুপবীমা আছে কি না তা কখনও তদারকি হয় না। প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমআইন মানছে কি না তা শ্রমঅধিদফতর তদারকি করে। অথচ এ তদারকির চেক লিস্টে গ্রুপবীমার কোনো অপশন নেই। দেশে হাজার হাজার এনজিও থাকলেও তাদের গ্রুপবীমা আছে কি না তাও তদারকি করা হয় না। উল্টো অনেক এনজিও এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়েলফেয়ার ফান্ডের নামে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে। এ চর্চাটি বেআইনি হলেও তা দেখার কেউ নেই।
গ্রুপবীমার বর্তমান বাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে গ্রুপবীমা খাত থেকে ২শ থেকে ২শ ২০ কোটি টাকার প্রিমিয়াম আয় হয়। এর অর্ধেক, প্রায় ১শ কোটি টাকার ব্যবসাই বিদেশি বীমা কোম্পানি মেটলাইফ আলিকোর হাতে। বাকি ব্যবসার মধ্যে প্রগতি লাইফ ৬০ কোটি, ডেল্টা লাইফ ২৫ কোটি জীবন বীমা করপোরেশন ২০ কোটি ন্যাশনাল লাইফ ৬ কোটি টাকার প্রিমিয়াম আয় করে। বাকি ব্যবসা অন্যান্যদের হাতে।
গ্রুপবীমার মার্কেটিং পলিসি সম্পর্কে তিনি বলেন, কমিশনের পাশাপাশি বেতনভুক্ত জনবল দিয়ে গ্রুপবীমার পণ্য বাজারজাত করা যায়। গ্রুপবীমায় সঞ্চয়, পেনশন, মেয়াদি, স্বাস্থ্য, ব্যাংক এস্যুরেন্সসহ সব ধরনের বীমাপণ্যই বাজারজাত করা যায়।

প্রকাশের তারিখ- ৩ মে, ২০১৪