পুনঃবীমা নিয়ে জটিলতায় বেসরকারি বীমা কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রি-ইন্স্যুরেন্স ট্রিটির মেয়াদ এক মাসে আগে শেষ হলেও এখনো তা নবায়ন করেনি সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)। এতে করে পূন:বীমা চুক্তি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বীমা সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতি বছর ৩১ মার্চ রি-ইন্স্যুরেন্সের চুক্তি শেষ হয়। ১ এপ্রিলের মধ্যে চুক্তি নবায়ন করে চুক্তিপত্র সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে হস্তান্তর করতে হয়। কোনো কারণে মূল চুক্তিপত্র হস্তান্তরে দেরি হলে সাময়িক একটি চুক্তিপত্র দেয়ার নিয়ম রয়েছে। 

কিন্তু এর কোনোটিই দেয়নি সাধারণ বীমা করপোরেশন। ফলে গত এক মাসে যেসব পলিসি করা হয়েছে তার মধ্যে কোনোটির দুর্ঘটনা ঘটলে পুনঃবীমা দাবি আদায় নিয়ে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। কারণ পুনঃবীমা চুক্তি হয়েছে এমন কোন প্রমাণ কোম্পানিগুলোর হাতে নেই।

এসবিসি বলছে, বেসরকারি খাতের ৪৫টি সাধারণ বীমা কোম্পানির কাছে বকেয়া পুনঃবীমা প্রিমিয়াম বাবদ পাওনা রয়েছে ৩০০ কোটি টাকারো বেশি। আর এ বকেয়া আদায় না হওয়ায় বীমা কোম্পানিগুলোকে রিইন্স্যুরেন্স ট্টিটি হস্তান্তর করা হচ্ছে না।

অন্যদিকে কোম্পানিগুলো বলছে, বকেয়া প্রিমিয়ামের সঙ্গে রিইন্স্যুরেন্স ট্টিটি কোন সম্পর্ক নেই। আর এসবিসি যে পরিমাণ বকেয়া প্রিমিয়ামের কথা বলছে তা সঠিক নয়। হিসাব করলে দেখা যাবে বকেয়া প্রিমিয়ামের পরিমাণ আরও কম। এমনকি সঠিকভাবে হিসাব করা হলে প্রিমিয়ামের তুলনায় দাবির পরিমাণও বেশি হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে এসবিসির পুনঃবীমা বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসাইন বলেন, ট্টিটি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এ বছরই আমরা একটু কঠোর হয়েছি। কারণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পুনঃবীমা প্রিমিয়াম বকেয়া রেখেছে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। তবে আমাদের সঙ্গে কোম্পানিগুলোর রিইন্স্যুরেন্স ট্টিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যার একটি খসড়াও তৈরি আছে। শুধু কাগজপত্রগুলো ঠিকঠাক করতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন।

গত একমাসের মধ্যে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায় এসবিসি নেবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে থাকে এবং কোম্পানি যদি প্রমাণ করতে পারে যে আমাদের সঙ্গে ট্টিটি সম্পন্ন হয়েছে তাহলে অবশ্যই আমরা দাবী পরিশোধ করবো।

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ট্টিটি স্লিপ হচ্ছে একটি ডকুমেন্ট। তা যতদ্রুত সম্ভব কোম্পানিগুলোকে হস্তান্তর করা উচিৎ। তা না হলে পরবর্তিতে সমস্যা তৈরী হতে পারে। বিদেশী রিইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো ট্রিটি স্লিপ দ্রুত হস্তান্তর করে দিলেও এসবিসি বরাবরই কালক্ষেপন করছে।
জানা গেছে, বিপুল পরিমাণ বকেয়া প্রিমিয়াম আদায়ে এসবিসিকে একাধিকবার তাগদা দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তবে বেসরকারি খাতের সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে বাকিতে ব্যবসার অভিযোগে জরিমানা করা হলেও এসবিসির ক্ষেত্রে নীরব থাকছে সংস্থাটি।

এ প্রসঙ্গে আইডিআরএর এক সদস্য বলেন, প্রিমিয়ামের বিপুল পরিমান অংক বকেয়া থাকা খাতটির জন্য আশঙ্কাজনক। তবে এ বকেয়া আদায়ে নিয়ম না ভেঙে আইনের সাহায্য নিতে পারে এসবিসি।