বায়রা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । একইসঙ্গে কোম্পানিটি পরিচালনায় সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ভূতপূর্ব যুগ্ম সচিব হুমায়ুন কবিরকে প্রশাসক নিয়োগ করেছে কর্তৃপক্ষ। গত ২৮ জুন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপ-সচিব) মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

এর আগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বীমা দাবি পরিশোধ না করাসহ ১২টি অভিযোগে বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নতুন পলিসি ইস্যু সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোম্পানিটি আর কোন পলিসি ইস্যু করতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশে।

আইডিআরএ’র তথ্য মতে, বীমা আইনের বিভিন্ন ধারা ও কর্তৃপক্ষের বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন অব্যাহত থাকায় এবং তা ব্যাপক আকার ধারণ করায় ২০১৯ সালের ২১ মে বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কেন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে না ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম কেন সাময়িক স্থগিত করা হবে না মর্মে বীমা কোম্পানিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

ওই নোটিশে বায়রা লাইফের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৮টি অভিযোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। নোটিশের জবাবে বীমা কোম্পানিটি কর্তৃপক্ষের আরোপিত সকল অভিযোগ স্বীকার করে নেয়। তবে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বিষয়ে বীমা কোম্পানিটির বক্তব্য কর্তৃপক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়নি। এই প্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় আইডিআরএ।

বায়রা লাইফের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- বীমা আইন অনুসারে বছর বছর কোম্পানির একচ্যুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন না করানো, দায় মূল্যায়ন প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষে দাখিল না করা, কর্তৃপক্ষের চাহিদার প্রেক্ষিতে তথ্যাদি দাখিল না করা, বছরের পর বছর অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করা, বীমা দাবি পরিশোধ না করা এবং দীর্ঘ সময় ঝুলিয়ে রাখা।  

এ ছাড়াও আইন লঙ্ঘন করে কোম্পানির ৪ জন উপদেষ্টা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা, দীর্ঘ সময় মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদান না করে পদটি শূন্য রাখা, আইন লঙ্ঘনের কারণে জরিমানা আরোপ করা হলে জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইন লঙ্ঘনের নজির রয়েছে বায়রা লাইফের বিরুদ্ধে।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর, ২০১৯ বায়রা লাইফের নতুন পলিসি ইস্যু বন্ধের নির্দেশনায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ আনা হয়। সেগুলো হলো- বীমা দাবি পরিশোধ না করা, তামাদি পলিসির পরিমাণ অধিক হওয়া, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, দীর্ঘ দিন মূখ্য নির্বাহীর পদ শূন্য রাখা, পরিচালকদের নির্ধারিত শেয়ার ধারণ না করা, নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালনা পর্ষদে উপদেষ্টা সদস্য রাখা।

এ ছাড়াও নিবন্ধনের তিন বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে না যাওয়া, বিধি মোতাবেক বিনিয়োগ না করা, বিধি বহির্ভূতভাবে অধিক মূল্যের গাড়ি ব্যবহার করা, সঠিক সময়ে একচ্যুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন না করানো, কর্তৃপক্ষে বিভ্রান্তিমূলক/ মিথ্যা তথ্য প্রদান করা, কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটিকে সঠিকভাবে সহযোগিতা না করা, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পরিচালনে ব্যর্থতা।