৩ মাসের মধ্যে সিইও নিয়োগ না দিলে ৬ কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩ মাসের মধ্যে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ না দিলে ৬টি লাইফ বীমা কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ দেবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। ইতোমধ্যেই কোম্পানিগুলোতে ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো- আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।এরমধ্যে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তথা ৭ বছরের বেশি সময় ধরে মূখ্য নির্বাহী পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া অন্য কোম্পানিগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। 

আইডিআরএ বলছে, আইন অনুসারে বীমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ একাধারে তিন মাসের অধিক সময়ের জন্য শূন্য রাখার বিধান নেই। তবে কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনায় উক্ত সময়সীমা আরো তিন মাস বর্ধিত করতে পারবে। এ সময়ের মধ্যে কোন বীমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ পূরণ করা না হলে কর্তৃপক্ষ প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।

তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট থেকে আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদ শূন্য রয়েছে। কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আপেল মাহমুদ চাকরি ছেড়ে দিয়ে প্রাইম ইসলামী লাইফে যোগদান করলে শূন্য হয়ে পড়ে সিইও পদ। বর্তমানে নুরে আলম সিদ্দিকী (অভি) কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই অনুমোদন লাভের পর থেকেই মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাড়া বীমা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বর্তমানে কোম্পানিটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম জিয়াউল হক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল তিনি কোম্পানিটিতে যোগদান করে এই দায়িত্ব নেন।

গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে রয়েছেন কোম্পানিটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এডি.এমডি) আমজাদ হোসেন খান চৌধুরী। এর আগে কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়া। তিনি ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ ছেড়ে দেন। তখন থেকেই শূণ্য হয়ে আছে গোল্ডেন লাইফের মূখ্য নির্বাহীর পদ।

যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্বজিৎ কুমার মণ্ডলের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল। এরপর থেকে মূখ্য নির্বাহী শূন্য হয়ে আছে বেসরকারি এ বীমা প্রতিষ্ঠান। তবে কোম্পানিটির চীফ মার্কেটিং অফিসার (অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক) কামরুল হাসান খন্দকারকে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল থেকে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম শরিফুল ইসলামের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ৩ জুন। এরপর থেকেই শূন্য পড়ে আছে বীমা কোম্পানিটির শীর্ষ এ পদ। তবে কোম্পানিটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহিদুল ইসলামকে বর্তমানে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য হয়েছে ২০১৮ সালের ২ মার্চ। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে বীমা কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অনুমোদন লাভ করেন মো. মাহফুজুল বারী চৌধুরী। বর্তমানে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে রয়েছেন মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

এ বিষয়ে গোল্ডেন লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিসি) আমজাদ হোসেন খান চৌধুরী বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে আমরা এ বিষয়ে নোটিশ পেয়েছি। নোটিশে তিন মাসের মধ্যে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, আজই আমরা আইডিআরএ'র কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। ডিসেম্বরের ৬ তারিখের মধ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।