ফারইস্টের সিলেট সার্ভিস সেন্টার ইনচার্জের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা দাবির টাকা না দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জেএসভিপি ও সিলেট সার্ভিস সেন্টারের ইনচার্জ মস্তাক হোসেনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন লন্ডন প্রবাসী এক বীমা গ্রাহক। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা হেলেন বেগমের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়।

লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বীমা গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা দাবির টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত যোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে বীমা গ্রাহকের ওই নোটিশে।

নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, বীমা গ্রাহকের নাম আলী আহমেদ আব্বাস। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার পূর্ব মুড়িয়ার সারপার গ্রামের বাসিন্দা তিনি, বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী। ২০০৬ সালের ৩ অক্টোবর তিনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফে ১২ বছর মেয়াদী ১০ লাখ টাকা বীমা অংকের একটি পলিসি করেন, যার নম্বর ১৩০০০০৮৩৩৩-০। ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর এর মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে।

বীমা গ্রাহক নোটিশে জানিয়েছেন, বীমার প্রিমিয়াম নিয়মিত পরিশোধ করা হয়েছে এবং পলিসির মেয়াদকালে তিন দফায় ৬ লাখ টাকা সার্ভাইবেল বেনিফিট (এসবি) পেয়েছেন। যা বীমা গ্রাহকের আপন ছোট ভাই আতিকুর রহমান রুবেলের মাধ্যমে তার ব্যাংক একাউন্টে জমা করা হয়েছে।

সবশেষ ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর মেয়াদোত্তর বীমা দাবি পরিশোধের জন্য নির্বাহী রশিদ ইস্যু করে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ। নির্বাহী রশিদে বীমা গ্রাহকের পাওনা উল্লেখ করা হয়েছে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৭ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত এই টাকা পরিশোধ করেনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ।

বীমা গ্রাহকের ছোট ভাই আতিকুর রহমান রুবেল ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, বড় ভাই লন্ডনে থাকেন। তাই বীমার সব কাজ আমার মাধ্যমেই করেন। মেয়াদ পূর্তির পর নির্বাহী রশিদসহ সব কাগজপত্র সই-স্বাক্ষর করে তিনি আমার মাধ্যমে কোম্পানিটির কর্মকর্তা মস্তাক হোসেনের কাছে জমা দিয়েছেন।

কিন্তু এখন ওই কর্মকর্তা বলছেন লন্ডন থেকে তার ঠিকানায় কুরিয়ারের মাধ্যমে ম্যাচুরিটির ফাইলটি পাঠাতে হবে। কিন্তু যদি নতুন আরেকটি পলিসি করা হয় তাহলে এসব লাগবে না। আর তাই নতুন পলিসি না করায় তারা বীমার পাওনা টাকা দিচ্ছে দিবে করে সময় ক্ষেপন করছে।

বীমা গ্রাহকের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের জেএসভিপি ও সিলেট সার্ভিস সেন্টারের ইনচার্জ মস্তাক হোসেন ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। এর কোন সত্যতা নেই। বাস্তবতা হচ্ছে বীমা গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে এখনো আমাদের কাছে দাখিল করেননি।

সবশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর বীমা গ্রাহকের পাসপোর্টের কপি আমার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাগজপত্রের ব্যাপারে বীমা গ্রাহকের কোন লিখিত বক্তব্য আমাদের দেয়া হয়নি। নিয়ম হচ্ছে- বীমা গ্রাহক বিদেশে থাকলে লোক মারফত জমা দেয়া কাগজপত্রের বিষয়ে তার লিখিত স্বীকৃতি দিতে হবে।

কারণ এমনও ঘটতে পারে যে, বীমা গ্রাহকের টাকা তার নাম দিয়ে অন্য কেউ তুলে নিচ্ছে। এ জন্যই বীমা গ্রাহকের স্বাক্ষরিত লিখিত স্বীকৃতি থাকতে হবে। কিন্তু বারবার ফোন করে বলার পরও যা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। অথচ এ ঘটনায় তারা উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে।

মস্তাক হোসেন বলেন, সবগুলো কাগজপত্র সঠিকভাবে আমাদের হাতে আসলে আমরা সেগুলো প্রধান কার্যালয়ে পাঠোবো। এরপর কত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করবে সেটা প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। আমাদের কিছু করার থাকবে না। কারণ এখান থেকে কোন টাকা পরিশোধ করা হয় না। আর নতুন পলিসি করতে বলাটা দোসের কিছু না বলে দাবি করেন তিনি।