করোনায় নন-লাইফ বীমাখাতে প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ২০%

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাস মহামারী দেশের নন-লাইফ বীমাখাতের প্রিমিয়াম সংগ্রহে বড় ধরণে প্রভাব ফেলেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক তথা এপ্রিল, মে ও জুন মাসে খাতটিতে গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ২০.৪২ শতাংশ। খাতটিতে এই সময়ে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৮০১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যা আগের তিন মাসে ছিল ১ হাজার ৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে। নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাস সম্পূর্ণ সাধারণ ছুটি থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্য অনুসারে, দেশের নন-লাইফ বীমার অগ্নি, নৌ- কার্গো, নৌ- হাল, মটর এবং বিবিধ খাতে চলতি বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৮০১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর আগে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে এই সংগ্রহ ছিল ১ হাজার ৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আর ২০১৯ সালে নন-লাইফ বীমায় সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে এককভাবে নৌ- হাল বীমার প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে, ১৪.৫৩ শতাংশ। এ খাতে প্রথম প্রান্তিকে মোট সংগ্রহ ছিল ২২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অগ্নি বীমাখাতে প্রথম প্রান্তিকে মোট সংগ্রহ ৪১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৩৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ অগ্নি বীমার প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ৮.৫৫ শতাংশ।

নৌ- কার্গো বীমাখাতে প্রথম প্রান্তিকে গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২৯৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ২১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ নৌ- কার্গো বীমার প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ২৯.০১ শতাংশ। এ ছাড়াও প্রথম প্রান্তিকে মটর বীমার গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ কমেছে ২০.১৮ শতাংশ। আর বিবিধ বীমায় প্রথম প্রান্তিকে সংগ্রহ ১৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১০১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কমেছে ৩৯.৫১ শতাংশ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।  সংক্রমণ রোধে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। দেশের ইতিহাসে ২ মাস ৪ দিনের এই দীর্ঘ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে খোলা হয় অফিস-আদালত। চালু হয় গণপরিবহনও।