কোভিড-১৯ বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত হেনেছে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: কোভিড-১৯ বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দোরে এক প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে। এর বিষাক্ত ছোবলে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে পড়ার যোগাড় হয়েছে। বিশ্বের শক্তিশালী উন্নত দেশগুলোও এর প্রতিকূল প্রভাবের স্বীকার হয়েছে। এই সমস্ত প্রভাবশালী ধনী দেশ করোনা ভাইরাস সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছে।

করোনা মহামারী যেন বিশ্বের সকল দেশকে আচমকা আক্রমন করেছে। প্রকৃতপক্ষে এই মহাদুর্যোগের জন্য কোন দেশই প্রস্তুত ছিল না। এই পরিণতির জন্য বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারকে মূলত দায়ি করা যেতে পারে। এই সমস্ত দেশগুলো স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেবার পরিবর্তে বছরের পর বছর অবহেলা করে আসছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় স্বাস্থ্যখাতে বাৎসরিক বাজেটে জিডিপি’র যৎসামান্য অংশ বরাদ্দকরণ।

বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বসবাস করে যাদের জীবিকা বহুলাংশে কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। সরকারি হাসপাতাল এবং চিকিৎসাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার অভাবে এরা উন্নত চিকিৎসা তো দূরের কথা সাধারণ চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত। বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা গ্রহণ এই বিশাল গরীব জনগোষ্ঠীর এক প্রকার অসম্ভব বা বিলাশবহুল ব্যাপার।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে এই বৃহৎ গরীব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজতর করার সাথে সাথে স্বল্প এবং সহনীয় মূল্যে চিকিৎসাসেবা সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে বর্তমান দূর্বল এবং ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাৎসরিক বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি’র কমপক্ষে ৪-৫ ভাগ টাকা বরাদ্দ করতে হবে, যার পরিমাণ বর্তমানে দেড় শতাংশেরও কম। ভবিষ্যতে সরকারের স্বাস্থ্যখাতকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অন্যথায় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা যে তিমিরে অবস্থান করছে সেখানেই মুখ থুবড়ে পরে থাকবে। এর পরিবর্তন সম্ভব নয়, যা কোনভাবেই কাঙ্খিত বা গ্রহণযোগ্য নয়।

লেখক: জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস) ।