লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের ওপর নজর দেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়

মো. মামুনুল হাসান, এসিআইআই: আমরা জানি যে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্থান লাভ করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ তার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা অংশ হিসেবে বৈদেশিক অর্থদাতাদের (Global Financers) নিকট থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাবে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।

এক্ষেত্রে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের পূর্বে বিনিয়োগকৃত দেশের সাথে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে থাকে। আরোপকৃত শর্তের মধ্যে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পদের ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা।

আর্থিক এই ক্ষতিপূরনের নিশ্চয়তা মূলত বিনিয়োগকৃত দেশের বীমা কোম্পানিগুলো সম্পাদন করে থাকে। আমরা সাধারণত দেখতে পাই বিভিন্ন বীমা চাহিদার মধ্যে প্রথমেই লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স (Liability Insurance) এর চাহিদা থাকে।

কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ বীমা কোম্পানি লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের প্রতি আগ্রহ দেখায় না বা এড়িয়ে যান। কারণ বীমা কোম্পানিতে লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স সর্ম্পকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জনবলের অভাব। ফলে বীমা কোম্পানিগুলো এ ধরনের প্রিমিয়াম আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এমতাবস্থায়, এখনই বীমা কোম্পানিগুলোকে দক্ষ জনবল তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে যে সকল মেগা প্রজেক্ট আমাদের দেশে আসবে সেসব মেগা প্রজেক্টের জন্য লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের কভার আমাদের দেশীয় বীমা কোম্পানিই দিতে পারে।

লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের বাজার ও চাহিদা:

লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে যে কয় ধরনের বীমা বাধ্যতামূলক তার মধ্যে লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স অন্যতম। যদিও আমাদের দেশের লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের উল্লেখযোগ্য কোন অবদান নেই।

তবে আমাদের পার্শ্ববতী দেশ ভারতের এর বিশাল বাজার রয়েছে। দেশটির বিগত কয়েক বৎসরের লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স খাতের প্রিমিয়াম আয়ের চিত্র তুলে ধরা হলো-

১) ২০১৬-১৭- ১৮৯২ কোটি রুপি।

২) ২০১৯-১৮- ১৯৭২ কোটি রুপি।

৩) ২০১৮-১৯- ২৩৮২ কোটি রুপি।

৪) ২০১৯-২০- ২৭২১ কোটি রুপি।

যুক্তরাজ্য (UK) গত ৫ বছরের লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম অর্থ ছিল নিম্নরূপ-

২০১৪: ৩১৬০ মিলিয়ন পাউন্ড

২০১৫: ২৪৮৪ মিলিয়ন পাউন্ড

২০১৬: ১৯০৭ মিলিয়ন পাউন্ড

২০১৭: ৩০৪১ মিলিয়ন পাউন্ড

২০১৮: ৩০১৭ মিলিয়ন পাউন্ড

এ ছাড়াও প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী এই বীমার বাজার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

লেখক: সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।