1450

04/16/2024

নেপাল বিমান দুর্ঘটনার দাবি পরিশোধ ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: শফিক শামিম

প্রকাশ: ৮ নভেম্বর ২০১৮

২০১৩ সালে চতুর্থ প্রজন্মের বীমা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের নন-লাইফ বীমাখাতে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড শুরু করে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। দেশের বীমাখাতের বিদ্যমান নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সেনাকল্যাণ নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা, অনৈতিক কমিশন, দাবি পরিশোধ না করার নেতিবাচক বিষয়গুলোর কোনটিই কলুষিত করতে পারেনি সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সকে।

এরইমধ্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় ইউএস-বাংলার নিহত ২৭ যাত্রীর মধ্যে ১৬ জনের বীমার টাকা পরিশোধ করে বীমাখাতে ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে। ননলাইফ বীমা খাতের অবৈধ কমিশন প্রদান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় সুসাশেনর অভাব সর্বপরি ইমেজ সংকট মোকাবেলা করে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি বীমা খাতের উন্নয়ণ ও সম্ভাবনা নিয়ে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম’র সঙ্গে কথা হয় ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র। এ আলোচনা নিয়েই সাজানো হয়েছে সাক্ষাতকারটি। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন আবদুর রহমান আবির:

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

নেপাল বিমান দুর্ঘটনা দেশের ইতিহাসে মর্মান্তিক একটি ঘটনা। এতে ২৭ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮কিউ৪০০ মডেলের বিমান। বেসামরিক ওই বিমান সংস্থার বীমাকারী সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিমান ও যাত্রীদের বীমা দাবি আপনারা কিভাবে পরিশোধ করলেন। সেই গল্পটি যদি পাঠকদের শোনাতেন-

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

দুর্ঘটনার দিন বিকালে আমরা যখন খবর পেলাম সেদিনই প্রথমে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের ম্যানেজমেন্টের সাথে আমার প্রথম কথা হয়। তাতে প্রথম কথাই ছিল যে, আইন কানুনের মধ্যে থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ যতটুকু বেশি দেয়া সম্ভব সেটা দিতে হবে।

ঘটনার পরদিন সকালে আইডিআরএ চেয়ারম্যান একটি মিটিং ডাকেন। ওই মিটিংয়ে আমি, সাধারণ বীমা করপোরেশনের এমডি এবং আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান ও মেম্বররা ছিলেন। সেখানেও আমরা একই রকমের একটি নির্দেশনা পাই যে, ক্ষতিপূরণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এবং যতটুকু বেশি সম্ভব দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এই দু’টি বিষয় আমাদের প্রথম গাইডলাইন ছিল।এরপর আমরা প্রথম থেকেই শুরু করি যে, কিভাবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কতটা বেশি বাড়ানো যায় এবং যতটা তাড়াতাড়ি করা যায়।

এক্ষেত্রে আমাকে যারা সবেচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন তাদের প্রথমে আমাদের ব্রোকার কেএম দস্তুর এন্ড কোম্পানি এবং সাধারণ বীমা করপোরেশন। সাধারণ বীমা করপোরেশনের এমডি এবং আমি একসাথে মিলেই সার্ভেয়ারদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছি, যাতে আমাদের এই ক্ষতিপূরণ বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।

সাধারণ বীমা করপোরেশনে সার্ভেয়ারদের সাথে আমাদের প্রথম বৈঠকেই আমরা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিবর্গের জন্য সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির বিষয়টিকে সামনে রেখেছি। অবশ্য সার্ভে প্রতিষ্ঠানও চেষ্টা করেছে যে, আমাদের যাত্রীরা যেন সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পায়।

আমাদের প্রধান রিইন্স্যুরার ছিল ক্যাটলিন (যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একাধিক স্বনামধন্য কোম্পানি) । তারাই সার্ভেয়ার নিয়োগ করে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠান এইচডব্লিউএফ তাদের সিঙ্গাপুরের অফিস থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা বাংলাদেশে এসেছে, নেপালেও গেছে।

নেপাল বিমান দুর্ঘটনা ছিল আমাদের বীমাখাতের জন্য সবচেয়ে বড় ধরণের আঘাত। এরআগে এত বড় বিমান দুর্ঘটনা হয়নি। যার ফলে এই দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক হোল্ডার বিশেষ করে সাধারণ বীমা করপোরেশন, ব্রোকার, সেনাকল্যাণ সংস্থা এবং আইডিআরএ- সবাই আমাকে সাহায্য করেছে। সবাই ছিলেন পজিটিভ।

কারো কাছ থেকে আমি নেগেটিভ কিছু পাইনি। সর্বোপরি আমি যেটা বলব, যাদের কথা না বললে ভুল হবে সেটা হলো পুরো মিডিয়া।আমাদের মিডিয়ায় কখনোই নেগেটিভলি কিছু আসেনি। এই পজিটিভ রিপোর্টিং আমাকে খুব সহযোগিতা করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে। দুর্ঘটনার পর তারা তো খুব হতাশ অবস্থায় ছিল।

মিডিয়ার পজিটিভ রিপোর্টিংটা আমাদের জন্য একটা উদাহরণ যে, কাজটা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে এটা কতটা সাহায্য করে। তাদের মধ্যে প্রথম তো আপনাদের নিজেরটাই ছিল। ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি তো ফার্স্ট রিপোর্ট করে। এক্সিডেন্টের পর আমার সাথে প্রথম কথা হয়েছে আপনাদের। এই পজিটিভ রিপোর্টিংটা খুব সাহায্য করেছে।

বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী দু’টো প্রটোকল ওয়ারশো এবং মন্ট্রিল। এ দু’টোর মধ্যে বাংলাদেশ সিগনেটরি হলো ওয়ারশো’র। এটাতেও কিন্তু ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট মাত্রা বলা নেই। এটাতে ৩৩ হাজার ইউএস ডলার দিয়ে শুরু হয়ে দেড় লাখ ডলার। পর্যন্ত গেছে। আবার মন্ট্রিল প্রটোকলেও সর্বোচ্চ ২ লাখ ডলার পর্যন্ত গেছে।

এখানে ৩৩ হাজার ডলার থেকে যে ৫২ হাজার ডলার পর্যন্ত গেছে, এটা সাভেয়ার, কেএম দস্তুর এন্ড কোম্পানি, সাধারণ বীমা করপোরেশন,আইডিআরএ এবং সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে আমরা এই অধিক পরিমাণে ক্ষতিপূরণ আনতে পেরেছি।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ নির্ধারণী বিধিমালা, ২০১৮ এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার । এটাকে আপনি কিভাবে গ্রহণ করছেন বা মূল্যায়ন করছেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের  সর্বোচ্চ  সীমা নির্ধারণী বিধিমালা, ২০১৮ এর গেজেট’টি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইন্স্যুরেন্স সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আর্থিক অসঙ্গতি দূর হয়ে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার সৃষ্টি হবে বলে আমি মনে করি ।

তবে এই গেজেটের সুফল পেতে হলে, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে যথাযথ পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হবে তাদের জন্য যেমন উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ঠিক তেমনি যেসব প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে এই নির্দেশনাসমূহ পালন করবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

বিশ্বজুড়ে নিত্যনতুন প্রোডাক্ট আসছে নন-লাইফ-বীমা বাজারে, বাংলাদেশের বীমা খাতে তেমন কোন নতুনত্ব নেই । এই বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

এই প্রশ্নটির সাথে আমি একমত নই। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বীমাখাতও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ বীমাখাত যেভাবে সংগঠিত হয়ে নতুনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা প্রশংসার যোগ্য। নতুন বীমা কোম্পানিগুলো পুরাতন বীমা কোম্পানিগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কিছু নতুন সেবা নিয়ে।  

আসলে নতুন প্রোডাক্ট বা গ্রাহক সেবাই নতুন কোম্পানিগুলোর টিকে থাকার প্রধান উপায় বলে আমি মনে করি। নতুন প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য হলো- নারীদের জন্য নিবেদিতা,হাজীদের জন্য হজ্ব পলিসি ইত্যাদি। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি “স্বাস্থ্য বীমা পলিসি”  নিয়ে বীমা সেক্টর কাজ করে যাচ্ছে।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

নন-লাইফ বীমাখাতে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলা হয় কমিশন। আপনারা কম কমিশনের ব্যবসা করছেন। এটা কিভাবে করছেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

আমিও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, অননুমোদিত কমিশন বীমাখাতের উন্নতির অন্তরায়গুলোর মধ্যে প্রধান একটি বিষয়। আমরা শুরু থেকে চেষ্টা করছি অনুমোদিত বা সহনীয় কমিশন প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে। এক্ষেত্রে আমরা যে বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি তা হোল স্লো এন্ড স্টেডি প্রোগ্রেস। আমরা তড়িৎ সেবা, যথোপযুক্ত দাবি পরিশোধ ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রাহক রিটেনশন (ধারণ)’র ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যে সকল ব্যবসায় প্রচলিত কমিশনের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আছে সেগুলোতে ঝুঁকি বেশি থাকলেও আমরা তা গ্রহণ করে পুনর্বীমার মাধ্যমে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করে থাকি। আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ভর ব্যবসার চেয়ে ইমেজ ইনহানসমেন্ট’র ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। এতে করে সার্বিকভাবে কম কমিশনে ব্যবসা করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

নন-লাইফের পলিসিগুলো হয় বাধ্যবাধকতা থেকে। ফলে সেবার মনোভাব গ্রাহকদের মাঝে যেমন নেই, তেমন নেই বীমা কোম্পানিগুলোতেও । এটা থেকে বের হওয়ার উপায় কি ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

হ্যাঁ, এটা সত্যি হলেও কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সেবার নতুন নতুন বিষয়টি মূখ্য হয়ে উঠেছে ধীরে ধীরে। ফলে সেবার ব্যাপারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামনে চলে আসছে। সুতরাং ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে সেবার মান বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই বলে আমি মনে করি।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

বীমাখাতের উন্নয়নে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র ভূমিকা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

বাংলাদেশের বীমাখাত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । তাদের দিক নির্দেশনা আর কার্যকরী ভূমিকার ফলেই সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে চলছে বীমাখাত। বীমা শিল্পের ইমেজ সংকট কাটাতে আইডিআরএ’র বর্তমান বিবিধ ও বহুমুখী উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

বীমাখাত নিয়ে সব সময় ইমেজ সংকটের কথা বলা হয়। এ থেকে বের হতে কোম্পানিগুলোর ভূমিকা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

হ্যাঁ, আপনার সাথে আমি একমত যে, বীমাখাতে ইমেজ সংকট বা আস্থাহীনতা রয়েছে। অনেকেই এখনও এ খাতকে আস্থার সাথে গ্রহণ করতে পারেনি। অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ করে এ খাতকে আস্থায় আনতে হবে। বীমা কোম্পানিগুলোকে অতি মুনাফা অর্জনের জন্য পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ত্যাগ করে সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।

বীমাখাতের আস্থাহীনতার জন্য কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বীমা গ্রহীতাদেরও দায়বদ্ধতা আছে বলে আমি মনে করি। তবে বীমা কোম্পানিগুলো যদি একযোগে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ বাদ দিয়ে টেকসই উন্নতির কথা চিন্তা করে ব্যবসা পরিচালনা করে তবে সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, শিক্ষিত জনবল ও উৎকর্ষ প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে, নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ, জনবল নিয়োগ, প্রতিযোগিতামূলক অনৈতিক মনোভাব ত্যাগ করাসহ, সময় মতো বীমা দাবী পরিশোধ করে এই সংকটের মোকাবেলা করা যেতে পারে।

মনে রাখতে হবে যে, এই সংকটের ফলে রাষ্ট্র আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এই সংকট মোকাবেলায় সবাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি করা গেলে এ সংকট এমনিতেই বিলীন হয়ে যাবে ।

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি:

দেশের অর্থনীতির আকার বাড়ছে, ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই বলা যায়, এ অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে বীমার চাহিদাও বাড়বে । এই চাহিদা মেটাতে কোম্পানিগুলোর বর্তমান বাস্তবতাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. শফিক শামিম:

হ্যাঁ, বিগত দশক থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক  কর্মকাণ্ড ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ করতে পেরেছে। এই উন্নয়ন একদিনে হয়নি। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যাওয়ার ফলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। এই উন্নয়নকে যেকোন মূল্যে ধরে রাখতে হবে ।

বর্তমানে বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, যেকোন ঝুঁকি গ্রহণেই আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আপনারা জানেন যে, সম্প্রতি নেপালের ত্রিভুবন বিমান বন্দরে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাটির কথা। সেখানে ইউএস-বাংলার পুরো বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়াসহ ২৭ বাংলাদেশি নিহত হয়। আপনাদের সকলের দোয়ায় আমরা পুরো বিমানটির ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ নিহত ২৭ যাত্রীর মধ্যে ইতিমধ্যে ১৬ যাত্রীর পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের অর্থ তুলে দিতে পেরেছি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। পুরো বীমাখাত এই ঝুঁকি বৃদ্ধির বিষয়টি অনুধাবন করে এবং একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’র বিষয়টিকে বাস্তবায়ন করে চলেছে।