2666

03/29/2024

জমি ছাড়া প্রায় সব টাকাই শেষ পদ্মা ইসলামী লাইফের

প্রকাশ: ৩ জুন ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহক পাবে প্রায় ৭১ কোটি টাকা। সম্বল বলতে জীবন বীমা তহবিলের ৫ কোটি টাকা আর রয়েছে জমিটুকু। এছাড়া গেল বছরগুলোতে গ্রাহকের জমা রাখা টাকার সবই শেষ। সবশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০১৯ সালে এসে এমনটিই আর্থিক অবস্থা পদ্মা ইসলামী লাইফের।

সূত্র মতে, গেল ৪ বছরে মোট প্রিমিয়াম আয়, বিনিয়োগ, বিনিয়োগ থেকে আয়, কোনোটাই বাড়েনি। উল্টো এসব সূচকের সবগুলো অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। ফলে লাইফ ফান্ড তো বাড়েনি বরং লাইফ ফান্ড থেকে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতে করতে সেই লাইফ ফান্ডও এখন প্রায় শূন্য।

তথ্য অনুসারে, পদ্মা ইসলামী লাইফের মোট প্রিমিয়াম আয় ২০১৬ সালের ১৩৩ কোটি ৬ লাখ টাকা থেকে কমে ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। মোট বিনিয়োগ ২০১৬ সালের ১৬৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা থেকে ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। লাইফ ফান্ড ২০১৬ সালের ২৭৩ কোটি ৩ লাখ টাকা থেকে ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।

সবশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০১৯ সালের পদ্মা ইসলামী লাইফের ব্যবসার প্রতিবেদন অনুসারে, গেলো বছরে কোম্পানিটি সর্বমোট ৬০ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে। এরমধ্যে প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম আয় ১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং নবায়ন ৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ ছাড়াও ব্যাংক ডিপোজিটসহ অন্যান্য খাতে ৮ কোটি ৪১ লাখ ২৯ হাজার ২ টাকা আয় করে পদ্মা ইসলামী লাইফ। অর্থাৎ গেলো বছরে কোম্পানিটির সর্বমোট আয় ৬৮ কোটি ৮১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০২ টাকা।

অন্যদিকে ২০১৯ সালে পদ্মা ইসলামী লাইফ মৃত্যুদাবি, এসবি, সমর্পন, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং প্রভিশন অন ক্লেইম বাবদ ৭০ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩২৪ টাকা পরিশোধ করেছে। এ ছাড়াও ২০১৯ সালে বীমা কোম্পানিটি কমিশন ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করেছে ১৬ কোটি ৭৩ লাখ ১৬ হাজার ৮২৮ টাকা এবং প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় করেছে ২১ কোটি ৫৯ লাখ ১৩ হাজার ৬১৩ টাকা।

তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালের হিসাব শেষে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের লাইফ ফান্ড ছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তবে ২০১৯ সালে এসে প্রিমিয়াম এবং বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয় দিয়ে বীমা দাবি ও অন্যান্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে কোম্পানিটি ৪০ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৬৩ টাকা ঘাটতিতে পড়ে। যা কোম্পানিটির লাইফ ফান্ড থেকে যোগান দেয়া হয়। ফলে বছর শেষে বীমা কোম্পানিটির লাইফ ফান্ড দাঁড়ায় ৫ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৮ টাকা।

এদিকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চের এক হিসাবে পদ্মা ইসলামী লাইফ দেখিয়েছে, ভবন ও জমিসহ কোম্পানিটির স্থাবর সম্পদের মূল্য ৮৮ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৩২ টাকা। এর আগে ২০১৪ সালে পদ্মা লাইফ টাওয়ারসহ কোম্পানিটির স্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ৯০ কোটি ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির স্থাবর সম্পদের পরিমাণও কমে গেছে।

উল্লেখ্য, মোট প্রিমিয়াম থেকে আইনে নির্ধারিত হারে কমিশন ও ব্যবস্থপনা খাতে ব্যয় করার পর যা থাকে সেই টাকা এবং বিনিয়োগ ও অন্যান্য খাত থেকে আয়ের টাকা জমা হয় লাইফ ফান্ডে। এ কারণে লাইফ বীমা কোম্পানির আর্থিক অবস্থার নিণয়ক বলা হয় লাইফ ফান্ডকে।

এসব বিষয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিসি) মো. মোরশেদ আলম সিদ্দিকী ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন করতে সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে অফিস ব্যবস্থাপনা ব্যয় এবং কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমিয়ে কোম্পানির খরচের পরিমাণ অনেক কমানো হয়েছে। ব্যবসা সংগ্রহের খরচ কমানোর পাশাপাশি আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।