3031

03/28/2024

থার্ড পার্টি বীমা পরিকল্প বাতিল করেছে আইডিআরএ

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা তথা  থার্ড পার্টি বীমা পরিকল্প বাতিল করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ রহিত করার মাধ্যমে সরকার থেকে যানবাহনের থার্ড পার্টি বীমা তুলে দেয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। গত রোববার (২০ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৮২/২০২০ জারি করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, দেশের জিডিপিতে বীমাখাতের পেনিট্রেশন বৃদ্ধি এবং অর্থনীতিতে বীমাখাতকে প্রবৃদ্ধির খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, বীমাখাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও বীমা পলিসি গ্রাহকদের স্বার্থ নিশ্চিত করার নিমিত্তে নন-লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য এই সার্কুলার জারি করা হলো।

আইডিআরএ’র সার্কুলারে যাত্রী বা মোটরযানের বীমা বিষয়ে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’র দু’টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো-

> কোনো মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলে তার মালিকানাধীন যে কোনো মোটরযানের জন্য যে সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট করা তাদের জীবন ও সম্পদের বীমা করতে পারবে।

> মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের অধীন পরিচালিত মোটরযানের জন্য যথানিয়মে বীমা করবেন এবং মোটরযানের ক্ষতি বা নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বীমার আওতাভুক্ত থাকবে। বীমাকারী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ধারা ১০৯ অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি তথা থার্ড পার্টি বীমা বাধ্যতামূলক ছিল এবং এর অধীনে ১৫৫ ধারায় দণ্ডের বিধানও ছিল। তবে নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-তে তৃতীয় পক্ষের বীমা তুলে দেয়া হয়েছে।

আইনের এ বিষয় তুলে ধরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানায়, তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা না থাকলে সংশ্লিষ্ট মোটরযান বা মোটরযানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার কোনো সুযোগ নেই। বিআরটিএ’র এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পুলিশ মহাপরিদর্শক, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, হাইওয়ে পুলিশপ্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে গত অক্টোবরে আইডিআরএ’কে দেয়া একটি চিঠিতে বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশেন জানায়, মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ রহিত করে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ প্রতিস্থাপন করায় থার্ড পার্টি বীমার আবশ্যকতা নেই। তবে নতুন আইনে মোটরযানের জন্য যথানিয়মে বীমা করার বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশেনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ রহিত করে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ প্রতিস্থাপনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

ফলে মোটরযান অধ্যাদেশের ১০৯ ধারা অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বীমা (থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স) গ্রহণ করার যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা আর নেই। তবে সড়ক পরিবহন আইনে প্রতিটি মোটরযানকে বাধ্যতামূলক বীমার আওতায় আনয়নের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে।

তবে নতুন আইনে মোটরযানের বীমার বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র পত্রের বিষয়বস্তু নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে মোটরযান মালিকরা মোটরযানের বীমা করতে আগ্রহী হচ্ছে না বলে ওই চিঠিতে জানায় বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশেন।