3736

04/19/2024

একচ্যুয়ারির যোগ্যতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রবিধানমালা চূড়ান্ত করতে মতামত চেয়েছে আইডিআরএ

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমাকারীর একচ্যুয়ারির যোগ্যতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রবিধানমালা, ২০২১ চূড়ান্ত করতে স্টেকহোল্ডারদের মতামত আহবান করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । গতকাল মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর, ২০২১) প্রবিধানমালাটির খসড়া বীমা কোম্পানিগুলোকে পাঠিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মতামত আহবান করা হয়েছে।

খসড়া প্রবিধানে একচ্যুয়ারির যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক যদি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে একচ্যুয়ারিগণের প্রতিষ্ঠান বা সমিতির সদস্য হন অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত অন্য যেকোন পেশাগত একচ্যুয়ারিয়াল সংস্থার সদস্য বা সংশ্লিষ্ট একচ্যুয়ারিয়াল বিষয়ে অন্যূন ৫ বছরের সহযোগীত্তোর অভিজ্ঞতাসহ উল্লেখিত যে কোন পেশাগত একচ্যুয়ারিয়াল সংস্থার একজন সহযোগী হন তাহলে তিনি একচ্যুয়ারি হতে পারবেন।

অনাবাসিক একচ্যুয়ারির বিষয়ে বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে আইনের অধীনে যে কোন বাধ্যবাধকতা পালনের নিমিত্তে একজন অনাবাসিক একচ্যুয়ারির সেবা গ্রহণ করতে অনুমতি দেয়ার জন্য বীমাকারী কর্তৃক কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করা হয়, সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শর্ত ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ সাপেক্ষে উক্তরূপ ব্যক্তিকে নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি হিসেবে স্বাক্ষর করার আবেদন মঞ্জুর করতে পারবে।

একইসঙ্গে নতুন এই প্রবিধানমলায় শর্ত দেয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশে একচ্যুয়ারি পেশার উন্নয়নের স্বার্থে আবাসিক একচ্যুয়ারিকে তার অধীনে ন্যূনতম একজন একচ্যুয়ারিয়াল পেশায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী অথবা অধ্যয়নরত সার্টিফাইড একচ্যুয়ারিয়াল এনালিস্ট (সিএএ) অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে একচ্যুয়ারিয়াল বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীকে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

একচ্যুয়ারির অযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, উপ-প্রবিধান (১) এ উল্লেখিত ব্যক্তি একচ্যুয়ারি হিসেবে প্রত্যয়নকারী বা স্বাক্ষরকারী হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য যোগ্য হবেন না যদি- তিনি আইন এবং আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালা, প্রবিধানমালা ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময়ে সময়ে জারীকৃত নির্দেশনাবলী সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানের অধিকারী না হন; তিনি কোন বীমাকারীর উদ্যোক্তা বা শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরিচালক বা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থাকেন;

তিনি কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক খণখেলাপী ঘোষিত হন; তিনি শারীরিক বা মানসিক অসামর্থের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; তিনি কোন আদালত কর্তৃক দেউলিয়া বা অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন; তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক অন্যুন ৬ মাস বা তদুর্ধ্ব মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং উক্ত দণ্ড হইতে মুক্তি লাভের পর ৫ বৎসর সময় অতিক্রান্ত না হয়।

একচ্যুয়ারির ক্ষমতার বিষয়ে বলা হয়েছে, বীমাকারীর তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত থাকা যাবতীয় তথ্য, হিসাব ও হিসাবের বহি বা দলিলাদিতে একজন একচ্যুয়ারির প্রবেশাধিকার থাকিবে, যদি উক্তরুপ তথ্য, হিসাব ও হিসাবের বহি বা দলিলাদি নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারির দায়িত্ব ও কাযার্বলী সম্পাদনে প্রয়োজনীয় হয়। উপ-প্রবিধান ১ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বীমাকারীর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট হতে নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি যেকোন তথ্য, হিসাব ও হিসাবের বহি বা দলিলাদি চাইতে পারবে।

এ ছাড়াও আইনের ধারা ৩০ এর অধীন প্রণীত একচ্যুয়ারি প্রতিবেদন ও সংক্ষিপ্তসার যেই পর্যদ সভায় উপস্থাপিত হবে সেই পর্ষদ সভায় নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি যোগদান করতে পারবে এবং পরিচালনা পর্ষদকে একচ্যুয়ারি প্রতিবেদন ও সংক্ষিপ্তসারসহ বীমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, বিনিয়োগ আয় ইত্যাদি সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবে।

একচ্যুয়ারির দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়ে বলা হয়েছে, বীমাকারীর ব্যবস্থাপনায়, বিশেষত, পরিকল্প প্রণয়ন, প্রিমিয়াম বা বীমা অংক নির্ধারণ, বীমাচুক্তির উপাদান নির্ধারণ, বিনিয়োগ, ব্যবস্থাপনা ব্যয় ও পুনর্বীমা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে একুচ্যয়ারিয়াল সেবা ও পরামর্শ প্রদান; বীমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন নিরূপণ, এতদৃসংক্রান্ত অনুসন্ধান এবং অনুসন্ধানের ফলাফলের ভিত্তিতে পরামর্শ প্রদান; অনুত্তীর্ণ ঝুঁকির জন্য সঞ্চিতিসমূহের পর্যাপ্ততা নিরুপণ; কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত নির্দেশনাবলি পরিপালনে বীমাকারীর ব্যবস্থাপনা পর্যদকে পরামর্শ বা সহায়তা প্রদান;

লাইফ বীমাকারীর ক্ষেত্রে- প্রত্যেক বছরে অন্তত একবার দায়ের মূল্যায়নসহ বীমাকারীর আর্থিক অবস্থা নিরুপণের জন্য অনুসন্ধান পরিচালনা করা; লাইফ বীমাকারী কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিকল্পের হার, সুবিধা ও শর্ত সংক্রান্ত প্রত্যয়ন করা এবং উক্ত হারে পরবর্তীতে কোন পরিবর্তন প্রত্যয়ন করা; দায়ের মূল্যায়ন ও অংশগ্রহণকারী পলিসি গ্রাহকগণকে উদৃত্ত বন্টনের বিষয়ে যুক্তিসত প্রত্যাশা বিবেচনা করা হইয়াছে মর্মে নিশ্চিত করা;

নন-লাইফ বীমাকারীর ক্ষেত্রে- প্রিমিয়াম হারসমূহ যথাযথ মর্মে প্রত্যয়ন করা; বীমাকারীর নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠিত দাবি কিন্তু যা অবহিত করা হয় নাই এর জন্য যথাযথ প্রভিশন রাখা হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন করা; বীমা পলিসিগ্রাহক এবং অন্যান্য অংশীজন এর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রতীয়মান হয়, এমন বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট গোপন প্রতিবেদন পেশ করা।