মাইগার্ডিয়ান এ্যাপস উদ্বোধনে আইডিআরএ চেয়ারম্যান

বীমাখাতের উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ১০%

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমাখাতের উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৯ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে এ জন্য সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। আজ গার্ডিয়ান লাইফের মোবাইল এ্যাপস উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এখন ৭ প্লাস। বীমাখাত খুবই সম্ভাবনাময় খাত। সারা বিশ্বেই বীমাখাতের উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমান সরকারও বীমাখাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বীমা আইন ২০১০ কার্যকরের মধ্য দিয়ে বীমাখাতের উন্নয়ন ত্বড়ান্বিত হবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি এ সেক্টরের স্টেক হোল্ডারদের এগিয়ে আসতে হবে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র চেয়ারম্যান আরো বলেন, বীমার কথা শুনলেই অনেকে নেতিবাচক কথা-বার্তা বলে। এখানে ইমেজ সংকট রয়েছে, এটা দূর করা এবং বীমা দাবি নিষ্পত্তি দু'টোই আমাদের উদ্দেশ্য।  

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিন এক সম্মেলনে বলেছেন, এটাকে চাঙ্গা করতে হবে এবং বীমা কি কাজ করে জনগণকে জানাতে হবে। সর্বোপরি বীমার ইমেজ বিল্ডআপ করতে হবে এবং বীমার ক্লেইমগুলো সেটেল করতে হবে। আমরা এ লক্ষ্যেই কিন্তু কাজ শুরু করেছি।

শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে বীমা আইন ২০১০ এক্টিভ আছে। ১৯৩৮ সালের বীমা আইন আর নেইা। তবে দু'একটি ধারা বোধ হয় এখনো আছে। যেহেতু আমরা প্রবিধানমালা করতে পারি নাই। করতে পারলে আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই ২০১০ কার্যকর করতে পারব। তখন ডিসিপ্লিনটা ফিরে আসবে।

তিনি বলেন, প্রচারের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই বীমা মেলা আয়োজন করেছি। কারণ, মানুষকে বুঝাতে হবে। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের দায়িত্ব কিন্তু বিরাট। আপনারা যারা আজকে প্রেসক্লাবে, আমি ও আমার সদস্য মহোদয় হয়তো এভাবে কখনো মুখোমুখীভাবে আসা হয়নি।

আইডিআরএ চেয়ারমান বলেন, আমাদের বিল্ডিংয়ে সাংবাদিকরা যায়, সেখানে আলোচনা হয়। কিন্তু আজকের আয়োজন আমি মনে করি বিরাট একটা পদক্ষেপ। এটা ভালো করে প্রচার করতে হবে। আমাদের কিন্তু সদিচ্ছা আছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনগণ জানুক যে, বীমা করলে বীমার টাকা ফেরত পাওয়া যায়।  

২০১৭ সালে গার্ডিয়ান লাইফের ২৪ হাজার ৪১৪টি বীমা দাবি নিষ্পত্তিকে অভূতপূর্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, বিগত ৫ মাসে আমারই উদ্যোগে ৩১ হাজার লাইফ ও নন-লাইফ বীমা দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে, বলেন শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নত দেশে প্রবেশের যাত্রা শুরু করেছে। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা চুপ করে বসে থাকব। আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। জিডিপি'তে আমাদের এই সেক্টরের অবদান একেবারেই কম। প্রতিবেশি দেশ ভারতে দেখেন, তাইওয়ানেও অনেক বেশি। ভারতে সাড়ে ৩%। কাজেই আমাদের কিন্তু অনেক করার আছে, যেটা অতীতে করা হয়নি। গতি কিন্তু খুব স্লো ছিল। ওটার ওপর আমরা জোর দিয়েছি।

গার্ডিয়ান লাইফের এ্যাপসটিকে অদ্ভুত প্রযুক্তি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এখন সবাই স্মার্ট ফোন ইউজ করে। ফেসবুক সবাই চালাতে পারে। লেখাপড়া না জানলেও এটা চালাতে পারে। তাই এটাও পারবে। প্রযুক্তি অনেক কাছে চলে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি তাহলে জাতীয় অর্থনীতিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি যা এখন ৭ প্লাস, তা ৯/১০ এ পরিণত হতে পারে।

তিনি বলেন, বিদেশে কিন্তু ব্যাংক গ্যারান্টি নেয় না, ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টি নেয়। এটা এতো গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই আমারা হতাশ হওয়ার কারণ নাই। আমাদের এখানেও একদিন আসবে যে, ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টি দেন। ব্যাংক গ্যারান্টির প্রয়োজন নাই।আমরা আশাবাদি, আসুন আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে, সবাই মিলে এগিয়ে যাই। আশা করি আমরা আরো বড় কিছু করতে পারব।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এর ব্যবস্থপনা পরিচালক তপন চোধুরী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান প্রেসক্লাবে আয়োজন করার একটা উদ্দেশ্য হলো আপনাদের মুখোমুখী হওয়া। যাতে আপনাদের সকল অভিযোগ-অনুযোগ সরাসরি আমাদের বলতে পারেন। আমরা চাইলে এ অনুষ্ঠান অন্য কোন ফাইভ স্টার হোটেলে করতে পারতাম।

তিনি বলেন, সব যায়গায় এখন ডিজিটালের ছোঁয়া। ক্যাশ নিয়ে কেউ ঘোরে না। জীবন বীমাখাতে এ শূন্যতাটা দূর করার জন্য আজকে গার্ডিয়ান লাইফের এ উদ্যোগ। আমরা চাই অফিসে গিয়ে যাতে আর ধর্ণা দিতে না হয়। তিনি বলেন, দেশে অনেক বীমা কোম্পানি হয়েছে কিন্তু সেগুলো স্ট্রং হয়নি। আমরা সে বিষয়টি সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।

আইডিআরএ সদস্য গকুল চাঁদ দাস বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ এ যখন ক্ষমতায় আসেন তখন তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দেন। সে সময় আমরা চিন্তিত ছিলাম যে, আমরা কম্পিউটার-ই চালাতে পারি না। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে ডিজিটাল বিপ্লব এটা কিন্তু একটা বিশাল জাম্প দেয়া।

তিনি বলেন, দেশে ৬/৭ কোটি মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে। যা পৃথিবীর অনেক দেশে এত সংখ্যক লোক-ই নেই। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মাইগার্ডিয়ান এ্যাপস-কে বীমাখাতের একটি যুগান্তকারি ঘটনা বলে উল্লেখ করেন বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সদস্য।

গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এমএম মনিরুল আলম বলেন, আমরা গ্রাহকদের খুব কাছে পৌঁছাতে চাই। গ্রাহকবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে গার্ডিয়ান লাইফ। উদ্ভাবনী সেবা ও নতুন ধারার গ্রাহক অভিজ্ঞতা প্রদানে এ কোম্পানি একটি আলোড়ন সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। মাইগার্ডিয়ান তারই একটি প্রতিফলন।