কৃষকের ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে শস্য বীমা গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার: এডিবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু দুর্যোগের আগেই কৃষকদের প্রস্তুত করতে পারলে এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারলে ক্ষতি পরবর্তী খরচ কমে আসবে। এক্ষেত্রে কৃষকের ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে শস্য বীমা গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই শস্য বীমার ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন।
এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)'র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পরকাশ। আজ রোববার রাজধানীতে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।ফিনান্সিয়াল প্রোটেকশন টুওয়ার্ডস এগ্রিকালচার রিস্ক মিটিগেশন ইন বাংলাদেশ শীর্ষক দু'দিনব্যাপী এ সেমিনার আয়োজন করে এসবিসি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান।
মনমোহন পরকাশ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতার কারণে বাংলাদেশের কৃষিখাত হুমকির মধ্যে রয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোর কৃষিজমি বন্যা ও খরা প্রবণ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর কৃষিক্ষেত ঘূর্ণিঝড় ও লবণ পানির শিকার। ফলে এসব অঞ্চলে চরম দারিদ্রতা ও খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়।
অথচ কর্মসংস্থান তৈরি, দারিদ্র দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে কৃষিখাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের মোট জিডিপি'র ১৬ শতাংশই এ খাতের অবদান। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের শ্রমশক্তির ৪৭ শতাংশই এখাতে নিয়োজিত। এমনকি আজকে যারা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন তাদের অনেকের পিতা-মাতা কৃষক ছিলেন। তাদের পড়ালেখার খরচের যোগান হয়েছে এই কৃষিখাত থেকেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরিজিৎ চৌধুরী বলেন, কৃষকের ঝুঁকি হ্রাসে কৃষি বীমা গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে ৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে তিনটি জেলার কৃষকদের বীমা সুবিধা দেয়া হয়েছে। এতে কৃষকরা আশাব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। সরকার কৃষি বীমার ওপর জোর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বলেন, শস্য বীমার যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেটি সফল। প্রান্তিক কৃষকরা এর সুফল পাচ্ছেন। প্রিমিয়াম হ্রাসের কারণে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের সুবিধা হচ্ছে। খরা প্রবণ রাজশাহী, বন্যা প্রবণ সিরাজগঞ্জ ও ঘূর্ণিঝড় প্রবণ নোয়াখালীতে চলছে শস্য বীমার ষষ্ঠ পাইলট প্রকল্প।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য গকুল চাঁদ দাস বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ও এডিবি'র সহযোগিতায় সাধারণ বীমা করপোরেশন ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শস্য বীমা প্রকল্প চালু করেছে। এটা কৃষি ক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাস করছে। কৃষকরা তাই শস্য বীমার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।
এসবিসি'র ডিজিএম ও আবহাওয়া সূচক ভিত্তিক শস্য বীমা প্রকল্পের পরিচালক ওয়াসিফুল হক জানান, ৬টি পাইলট প্রকল্পের আওতায় তিনটি জেলায় ২০টি আবহাওয়া স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ১৫শ' কৃষককে শস্য বীমা সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে এবং ৯শ' কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।