বাজেটে বীমা মালিকরা যা চান
নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে বীমা এজেন্ট কমিশন ও পুনর্বীমা কমিশনের ওপর আরোপিত মূসক কমানোর দাবি জানিয়েছে বীমা কোম্পানির মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) ।
একইসঙ্গে বীমা কোম্পানির আয় নিরুপন সংক্রান্ত অধ্যাদেশের চতুর্থ তফসিলের অনুচ্ছেদ ৬ এর অনুচ্ছেদ (১) এর বিধান বাতিল এবং আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৫২টি ধারা বিলুপ্তিরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে এসব দাবি জানিয়েছে বিআইএ।
বীমা মালিকরা বলছেন, বীমা কোম্পানি প্রিমিয়াম গ্রহণ করলেই গ্রাহকের নিকট থেকে ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) গ্রহণ করে তা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করে। একইসঙ্গে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এই প্রিমিয়ামের একটি অংশ পুনর্বীমাকারীকে প্রদান করে পুনর্বীমা গ্রহণ করে বীমা কোম্পানি।
তারা বলছেন, যেহেতু প্রিমিয়াম গ্রহণকালে সম্পূর্ণ প্রিমিয়ামের ওপর আইন অনুযায়ী মূসক গ্রহণ করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয় এবং এই প্রিমিয়ামেরই একটি অংশ পুনর্বীমাকারীকে দেয়া হয়, তাই পুনর্বীমা প্রিমিয়ামের ওপর মূসক আরোপের কোন সুযোগ নেই। এ ধরণের মূসক ধার্য্য করা হয়ে বিষয়টিকে দ্বৈত করা বলে বিবেচিত হবে।
বিআইএ জানিয়েছে, ২০০৫-০৬ সালের অর্থ বিলের মাধ্যমে সংশোধিত বীমা কোম্পানির আয় নিরুপণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের চতুর্থ তফসিলের অনুচ্ছেদ ৬ এর অনুচ্ছেদ (১) এর বিধানের কারণে বীমা কোম্পানিকে বীমা আইন ২০১০ এর শর্ত মোতাবেক হিসাব বিবরণী তৈরি করে আয়কর বিভাগে দাখিল করতে হয়। এ ছাড়াও বীমা আইনে অনুমোদনযোগ্য খরচের অতিরিক্ত দাবিকৃত খরচ আয়কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনুমোদনযোগ্য নয়।
তবে বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রে অনুমোদনযোগ্য ব্যবস্থাপনা খরচ নির্ধারিত হয় বীমা আইন ২০১০ এর ৬৩ ধারা এবং বীমা বিধি ১৯৫৮ এর ৪০ ধারা অনুসারে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট অংক ব্যবস্থাপনা ব্যয় হিসেবে খরচ করতে পারে। যদি এর বেশি হয় তবে বীমা আইনের ১৩০ ধারা অনুযায়ী জরিমানা বা ৬৩ ধারা অনুসারে মওকুফ করতে পারে কর্তৃপক্ষ। যা আয়করের বিষয় নয়।
বীমা মালিকরা বলছেন, সকল খাতে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। তাই বর্তমান বীমা আইন ও বিধি অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য খরচের অতিরিক্ত খরচের ওপর ৪০ শতাংশ হারে আয়কর নির্ধারণ করার কারণে দুর্বল বীমা কোম্পানিগুলোর পক্ষে অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য তারা সংশোধিত বীমা কোম্পানির আয় নিরুপণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের চতুর্থ তফসিলের অনুচ্ছেদ ৬ এর অনুচ্ছেদ (১) এর বিধান বাতিল চান।
বিআইএ আরো জানিয়েছে, ২০১৪ সালে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৫২টি ধারা সন্নিবেশ করে দেশেল সকল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পলিসি গ্রহীতাদের জমাকৃত প্রিমিয়ামের অতিরিক্ত প্রদেয় বোনাসের ওপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স আরাপ করা হয়েছে। এ কারণে জনগণের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকেই বীমা পলিসি গ্রহণে নিরুৎসাহিত হয়েছে। নতুন করে পলিসি গ্রাহকের আয়ে টাক্স আরোপ করায় কোম্পানিগুলো কঠিন প্রতিকুলতার মুখে পড়েছে।