উন্নয়নের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত বীমাখাত: ড. আতিউর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ইন্স্যুরেন্স বিষয়টি আমাদের উন্নয়নের সাথে খুবই গভীরভাবে সম্পর্কিত। কিন্তু বিষয়টিকে আমরা শিক্ষাক্রমে কিংবা রেগুলেটরি নীতিমালাতে এখনো সেভাবে তুলে আনতে পারিনি। ইন্স্যুরেন্স সেক্টরটা বিশেষভাবে অবহেলিত ছিল, এখনো আছে। শক্তিশালী রেগুলেটরি বডি আমরা এখনো পাইনি। শুধু ইন্স্যুরেন্স সেক্টর নয়, যেকোন খাতে রেগুলেটরি বডি শক্তিশালী হলে সে খাতটিও শক্তিশালী হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আবদুল্লাহ ফারুক মিলনায়তনে সম্প্রতি ‘ফান্ডামেন্টালস অব ইন্স্যুরেন্স’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম এবং ইন্স্যুরেন্স কনসালটেন্ট বিডি'র পরিচালক একেএম এহসানুল হক এফসিআইআই বইটির যৌথ লেখক। বইটি প্রকাশ করেন প্রকাশক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।

ড. আতিউর রহমান বলেন, আমি মনে করি, রেফারি যদি শক্তিশালী হয়, নিরপেক্ষ হয়, স্বচ্ছ হয়, সহসী হয়- খেলা ভালো জমে। সুতরাং যারা মনে করেন রেগুলেটরি বডিকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন নেই, তারা আসলে সেক্টরের মঙ্গল চান না।

তিনি বলেন, আমি যে ক'দিন রেগুলেটরিতে ছিলাম, রেগুলেটরি বডিকে শক্তিশালী করেছি। তাই বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা অনেক সাফল্যের সাথে আমরা মোকাবেলা করেছি। বাংলাদেশের আর্থিক খাত অত্যান্ত স্থিতিশীয় একটা পর্যায়ে ছিল এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে এটি কাজ করেছে। আমার ধারণা- ইন্স্যুরেন্সকেও যদি রেগুলেশন্সের মধ্যে রাখা যায় তাহলে তারাও বড় ধরণের কাজ করতে পারবে।

ইন্স্যুরেন্সের গুরুত্ব বোঝাতে ড. আতিউর রহমান বলেন, আজকে একজন রিকশাওয়ালা যদি দুর্ঘটনায় তার একটা পা হারান, তাহলে পরিবারটির কি অবস্থা দাঁড়াবে! রিকশা চালানো ছাড়া তার তো আর কোন কাজের সুযোগ নেই। তাহলে তার পরিবারটি কতটা বিপদের মধ্যে পড়বে! কিন্তু যদি তাকে ইন্স্যুরেন্সের আওতায় রাখা যেতো তাহলে কত সহজেই পরিবারটিকে রক্ষা করা যেত।

এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইন্স্যুরেন্স গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য ইন্স্যুরেন্স যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি অন্যান্য ইন্স্যুরেন্সও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন বড় বড় বিনিয়োগ করি তখনও কিন্তু দেখা হয় কোন কোন ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে এবং সেগুলোর জন্য ইন্স্যুরেন্স করতে হয়, বলেন ড. আতিউর রহমান।

তিনি আরো বলেন, আজকের দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ। এই ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে যেসব ঝুঁকি আসছে সেগুলোর বীমা আমরা করছি না বা করতে পারি না। আমাদের দেশে এটার কাভারেজ দেয়া এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তার ইন্স্যুরেন্স নীতিমালার মধ্যেই ক্লাইমেট চেঞ্জ সম্পর্কিত যেসব ঝুঁকি আছে সেগুলোর বীমা করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মো. আখতারুজ্জামান, অর্থসচিব ইউনুসুর রহমান, সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর একে আজাদ, প্রো-ভিসি ড. মুহাম্মদ সামাদ, ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন একচ্যুয়ারী, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)'র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন ও আনিস-উদ-দৌলা।