২০০৫-২০১৭ সাল

লাইফ বীমায় ১৩ বছরে ৩০১.৭৯% প্রবৃদ্ধি

আবদুর রহমান আবির: দেশের লাইফ বীমাখাতে বিগত ১৩ বছরে ৩০১.৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২৭.৪২ শতাংশ এবং বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২১.০৮ শতাংশ। জীবন বীমা করপোরেশনের সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০১৪ সালে, ১৯.৬১ শতাংশ এবং বেসরাকারি কোম্পানিগুলোর সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০০৫ সালে, ৩৭.৫ শতাংশ।

২০০৫ সালে দেশের লাইফ বীমাখাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২০৪৪.৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে জীবন বীমা করপোরেশনের অংশ ১০ শতাংশ, যা ২০৩.৭ কোটি টাকা। আর বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর অংশ ৯০ শতাংশ, যা ১৮৪১.০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২১৫.৪ কোটি টাকা। তবে জীবন বীমা করপোরেশনের অংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৬৪ শতাংশ ও বাকী ৯৪.৩৬ শতাংশ বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর অংশ।

সর্বশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় ২০০৫-২০১৭ সালের হিসাবে এই চিত্র উঠে এসেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জীবন বীমা করপোরেশন (জেবিসি) এবং ৩১টি বেসরকারি লাইফ বীমা কোম্পানির হিসাব এখানে তুলে ধরা হয়েছে। হিসাব অনুসারে, দেশের সরকারি বেসরকারি লাইফ বীমাখাতে ২০০৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এ ১৩ বছরে মোট ৭২১০৬.২৯ কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে।

তবে ২০১৩ সালে লাইফ বীমাখাতে সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় -২.৪ শতাংশ। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে ১৫৯.১ কোটি টাকা কম প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়। তবে জীবন বীমা করপোরেশনের সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০১১ সালে, -১১.০ শতাংশ। অর্থাৎ বছরটিতে ৩৮.১ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় কমেছে। আর বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয় ২০১৩ সালে, -২.৩ শতাংশ। বছরটিতে প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ১৪১.৯ কোটি টাকা।  

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৬ সালে দেশের সরকারি-বেসরকারি লাইফ বীমাখাতে ৩১.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৮২.৯ কোটি টাকা। পরের বছরে ১৮.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৮১.৫ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৯০৫.৩ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২২.২৮ শতাংশ। আর ২০০৯ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৪৯৩০.৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২৬.৩ শতাংশ।

পরের বছর ২০১০ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৫৮৫৪.৯ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৮.৭ শতাংশ। ২০১১ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬২৮১.৪ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৭.৩ শতাংশ। ২০১২ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬৫৮৭.১ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ। তবে ২০১৩ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহে কোন প্রবৃদ্ধি হয়নি, বরং কমেছে। আলোচ্য বছরে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬৪২৮ কোটি টাকা, আর প্রবৃদ্ধি -২.৪ শতাংশ।

এ ছাড়াও ২০১৪ সালে দেশের লাইফ বীমাখাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭০৭৭.৯১ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৯.১৮ শতাংশ। ২০১৫ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭৩৩০.৪৮ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩.৪৫ শতাংশ। ২০১৬ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭৫৮৬.২ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩.৪৯ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৮২১৫.৪ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৮.২৯ শতাংশ।

সর্বশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষার হিসাব অনুসারে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জীবন বীমা করপোরেশন ২০০৫ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ২০৩.৭ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৪.৬ শতাংশ। এরপর ২০০৬ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২২৩.৪ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৯.৭ শতাংশ। আর ২০০৭ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২৬৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৮.৬ শতাংশ। পরের বছর ২০০৮ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩০৭.৮ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৬.২ শতাংশ।  

জীবন বীমা করপোরেশনে ২০০৯ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৩৪.৭ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৮.৭ শতাংশ। ২০১০ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৪৬ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩.৪ শতাংশ। আর ২০১১ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩০৭.৯ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি -১১.০ শতাংশ। ২০১২ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৪৩.২ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১১.৫ শতাংশ এবং ২০১৩ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩২৬ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি -৫.০ শতাংশ।

এ ছাড়াও ২০১৪ সালে সরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশনের প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৮৯.৯৩ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৯.৬১ শতাংশ। এরপর ২০১৫ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৪০১.৫০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২.৯৭ শতাংশ। ২০১৬ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৪১০.৮৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২.৩৩ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৭ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৪৬৩.২৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১২.৭৫ শতাংশ।

অন্যদিকে ৩১টি বেসরকারি লাইফ বীমা কোম্পানি ২০০৫ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১৮৪১ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৩৭.৮ শতাংশ। পরের বছরে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২৪৫৯.৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩৩.৬ শতাংশ। ২০০৭ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২৯১৬.৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৮.৬ শতাংশ। ২০০৮ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৫৯৭.৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২৩.৩ শতাংশ।

এরপর ২০০৯ সালে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৫৯৫.৮ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ২৭.৭ শতাংশ। ২০১০ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৫৫০৮.৯ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ১৯.৯ শতাংশ। পরের বছরে প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৯৭৩.৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৮.৪ শতাংশ। আর ২০১২ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬২৪৩.৯ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৪.৫ শতাংশ।

তবে ২০১৩ সালে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১৪১.৯ কোটি টাকা কমে দাঁড়ায় ৬১০২ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি -২.৩ শতাংশ। ২০১৪ সালে আবার তা ৯.৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬৮৭.৯৮কোটি টাকা। ২০১৫ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬৯২৮.৯৮ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩.৬ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭১৭৫.৩৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৩.৫৫ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৭৭৫২.১৫ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি ৮.০৪ শতাংশ।