২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিক

তামাদি পলিসির সংখ্যায় শীর্ষে বায়রা, শতাংশে এনআরবি গ্লোবাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের লাইফ বীমাখাতে ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পলিসি তামাদি হয়েছে বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে। জানুয়ারি থেকে মার্চ এই ৩ মাসে কোম্পানিটির ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮০টি পলিসি তামাদি হয়েছে।

অন্যদিকে শতাংশের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি পলিসি তামাদি হয়েছে এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সে। কোম্পানিটিতে দ্বিতীয় বর্ষের ৯৮ শতাংশ পলিসি তামাদি হয়েছে এবং তৃতীয় ও তদূর্ধ্ব বর্ষে পলিসি তামাদি হয়েছে ৯৬ শতাংশ।

২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসার দক্ষতার মূল্যায়ন শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।

তামাদি পলিসির হার বেশি থাকা ১৯টি বীমা কোম্পানিকে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে এবং তা হ্রাসে গৃহীত পদক্ষেপ জানাতে ৭ দিনের সময় দিয়ে গত ২ আগস্ট একটি চিঠিও দিয়েছে বীমাখাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

আইডিআরএ বলছে, প্রথম বর্ষ ব্যবসার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এজেন্ট কর্তৃক সংগৃহীত নতুন পলিসির আইন্ডাররাইটিং এর গুণগত মান ভালো না থাকায় পলিসি তামাদি হয়। তাছাড়া নবায়ন কমিশনের হার কম থাকায় এজেন্টের কাছ থেকে গ্রাহকরা পলিসি নবায়ন সম্পর্কিত সেবাও ঠিকভাবে পায় না, তাই পলিসি তামাদি হয়।

কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, বেশি তামাদি হওয়া কোম্পানিগুলো বীমা আইন ২০১০ এর ৬২ ধারা এবং বীমা বিধিমালা ১৯৫৮ এর ৩৯ বিধিতে নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অনুমোদিত সীমার চেয়ে অধিক পরিমাণে ব্যয় করে নতুন পলিসি সংগ্রহ করে। তবে নতুন পলিসির দ্বিতীয় বা তদূর্ধ্ব বর্ষে নবায়ন সংগৃহীত না হলে কোম্পানির লাইফ ফান্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আইডিআরএ'র তথ্য মতে, ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে লাইফ বীমার ৭ লাখ ৯২ হাজার ৩৩৪টি পলিসি তামাদি হয়েছে। এরমধ্যে ৭২.৬৬ শতাংশ অর্থাৎ ৫ লাখ ১০ হাজার ৩৬৩টি তামাদি পলিসি বায়রা ও ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের। এ প্রান্তিকে পলিসি তামাদির ক্ষেত্রে কোম্পানি দু'টিকে অধিক দায়ি বলছে কর্তৃপক্ষ।

লাইফ বীমায় দ্বিতীয় বর্ষ এবং তৃতীয় ও তদূর্ধ্ব বর্ষের পলিসি তামাদির হার বেশি থাকা ১৯টি কোম্পানির মধ্যে আলফা ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষের ৬৩ শতাংশ এবং তৃতীয় ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৪৯ শতাংশ পলিসি তামাদি। বেস্ট লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে তামাদির হার ৭২ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৮৬.৫৪ শতাংশ। ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৪৭.৫৬ শতাংশ ও তদূর্ধ্বে ২৪.০৮ শতাংশ পলিসি তামাদি।

গার্ডিয়ান লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ২৪.৮৪ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৬৩.২৩ শতাংশ; হোমল্যান্ড লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৫৫.৬২ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৫৮.৪৩ শতাংশ; যমুনা লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৮৪.২৩ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৬৯.৮৬ শতাংশ; মেঘনা লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৬৮ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ২.৯০২ শতাংশ পলিসি তামাদি।

এ ছাড়াও মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৬৫ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৪০ শতাংশ; ন্যাশনাল লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৪৮.২৪ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৫৩.৬৫ শতাংশ; এনআরবি গ্লোবাল লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৯৮ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৯৬ শতাংশ; পপুলার লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৫৯ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ২৬ শতাংশ পলিসি তামাদি।

প্রগতি লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৫৩.০৭ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ১৭.৩৮ শতাংশ; প্রাইম ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৪৮.৭৩ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৩১.৩৮ শতাংশ; সোনালী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৪৫ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ২৭ শতাংশ; সানলাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৮৯ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৮২ শতাংশ পলিসি তামাদি।

সানফ্লাওয়ার লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৮৯.৬৯ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৩২.১৭ শতাংশ; স্বদেশ লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৭৭.৪৮ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৪৮.৮৮ শতাংশ; ট্রাস্ট ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৬১ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ১৪ শতাংশ এবং জেনিথ ইসলামী লাইফে দ্বিতীয় বর্ষে ৪৯ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব বর্ষে ৭৯ শতাংশ পলিসি তামাদি।