১৭ লাইফ বীমা কোম্পানি অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় প্রায় শতকোটি টাকা কমিয়েছে দেশের সরকারি-বেসরকারি ১৭ লাইফ বীমা কোম্পানি। ২০১৬ সালে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের পরিমাণ আগের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালের তুলনায় ৫ শতাংশ কমিয়েছে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে কোম্পানিগুলোর দাখিল করা তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সূত্র মতে, ২০১৬ সালে ১৭টি লাইফ বীমা কোম্পানি মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৫ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করে ২ হাজার ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ১ হাজার ৮৮৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অতিরিক্ত ব্যয় করে ১৮৬ কোটি ১ লাখ টাকা। যা অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে ৯.৮৫ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে ২০১৫ সালে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৫ হাজার ৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ব্যয় করে ২ হাজার ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অনুমোদন ছিল ১ হাজার ৭৫৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ অতিরিক্ত ব্যয় করে ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। যা অনুমোদিত ব্যয়র সীমার চেয়ে ১৪.৮৪ শতাংশ বেশি। এ হিসাবে ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে এসে ব্যবস্থাপনা খাতে কোম্পানিগুলোর ব্যয় কমে প্রায় ৫ শতাংশ।

ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় কমাতে ২০১২ সাল থেকে কোম্পানিগুলোকে তাগিদ দিয়ে আসছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এরপর কোম্পানিগুলো ব্যয় কমাতে গড়িমসি করতে থাকে। পরবর্তীতে গত বছর “১৮ জুন ‌‍‌গ্রাহেকর ১৭৮১ কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে ১৭ লাইফ বীমা কোম্পানি” শীষর্ক সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। পরে ওই সংবাদের ভিত্তিতে কোম্পানিগুলোতে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । এরপরেই ব্যয় কমাতে তৎপর হয় কোম্পানিগুলো।

আইডিআরএ’র তথ্য মতে, ২০১৬ সালে সরকারি-বেসরকারি ১৭টি লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে শতাংশের হিসাবে সবচেয়ে কম ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।আলোচ্য বছরে ২৮৭ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৮৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৯২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা বা প্রায় ৯ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এর আগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৯০ কোটি ২৭ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৮৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করে। অনুমোদন ছিল ৮৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অনুমোদিত সীমার চেয়ে কোম্পানিটি ১ কোটি ১ লাখ টাকা বা ১.১৫ শতাংশ কম ব্যবস্থাপনা ব্যয় করে।

২০১৬ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহে ব্যবস্থাপনা খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স। আলোচ্য বছরে ৩৩ কোটি কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে গোল্ডেন লাইফ ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ২৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা খাতে অতিরিক্ত ব্যয় করেছে। যা অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৭৫ শতাংশের বেশি।

আগের বছরে গোল্ডেন লাইফে ৫৪ কোটি ২২ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যয় হয়েছে ৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তবে অনুমোদন ছিল ২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা বা প্রায় ৭৩ শতাংশ।

ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় কম করার দিক থেকে ২য় অবস্থানে রয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটি ৫৮৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ১৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে সীমার চেয়ে ২ কোটি ৮ লাখ টাকা বা ১.২৩ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এরআগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৫১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ১৫৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় করে। অনুমোদন ছিল ১৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে সীমার চেয়ে ২৪ লাখ টাকা বা ১৫ শতাংশ কম ব্যয় করে ডেল্টা লাইফ।

ব্যবস্থাপনা খাতে কম ব্যয় করার দিক থেকে ৩য় অবস্থানে রয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ। ২০১৬ সালে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৩১২ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ১১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ২৫ লাখ টাকা বা .২২ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এর আগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ২৪৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৯৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় করে। অনুমোদন ছিল ৮৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা বা ১০ শতাংশ বেশি ব্যয় করে  প্রাইম ইসলামী লাইফ।

প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৬ সালে ২২০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৭৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৮০ কোটি ৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে অনুমোদিত সীমার চেয়ে প্রগতি লাইফ ১৭ লাখ টাকা বা 0.২১ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এরআগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৭৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয় করে। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৬৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে এ বছরে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ১৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করে প্রগতি লাইফ।

ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৬ সালে ৮১৭ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ২৪৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ২৪৯ কোটি ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ ন্যাশনাল লাইফ ব্যবস্থাপনা খাতে সীমার চেয়েও ১৪ লাখ টাকা বা 0.০৬ শতাংশ কম ব্যয় করেছে। এর আগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৭৭৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ২৪০ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করে। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ২৩৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ২ শতাংশ বেশি ব্যয় করে।

২০১৬ সালে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৬০০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ২৫০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ২৪৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা খাতে ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা প্রায় ২ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৬৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ২২২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ২৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স গত বছর ৪২৪ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১৩৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা খাতে ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ২ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৪৪২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ১৫৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ১৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা।অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

২০১৬ সালে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১১৭ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৫০ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে।ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা বা ৯ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৩৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে।অনুমোদন ছিল ৪৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ৪৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা বা ১১ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৬ সালে ১৩৩ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৬৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৫৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ১১ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৬৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। অনুমোদন ছিল ৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ৯ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ১৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

২০১৬ সালে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৯২৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৩৯৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৩৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি ৪৫ কোটি ৫ লাখ টাকা বা প্রায় ১৩ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৮৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে।ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৩৩৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অনুমোদন ছিল ২৭৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৫৯ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২১ শতাংশ বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে।

সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স গত বছর ১৮১ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৭৪ কোটি ৮ লাখ টাকা। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৬৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ১৩ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ২১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৮৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।অনুমোদন ছিল ৭৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এ হিসেবে ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বা ১৭ শতাংশ বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে।

২০১৬ সালে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স ১২৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৭৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৬২ কোটি ৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বা প্রায় ২৪ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৬১ কোটি ১২ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করে। ব্যয় করেছে ১১৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৮৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২৯ কোটি ৩ লাখ টাকা বা ৩৪ শতাংশ বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে।

সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স গত বছর ১১৪ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৫২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা বা ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৯৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৫৭ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। অনুমোদন ছিল ৩৮ কোটি ৪ লাখ টাকা।অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা খাতে ১৯ কোটি ৬ লাখ টাকা বা ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৬ সালে ৭৩ কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ব্যয় করে ৩৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ বছরে ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা বা প্রায় ৫৪ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৮৫ কোটি ২১ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। ব্যয়ের সীমা ছিল ২৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৪৬ শতাংশ বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে।

বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স গত বছর ১৮ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা বা প্রায় ৫৮ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। আগের বছর ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা খাতে ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা বা ৪৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানার লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশন ২০১৬ সালে সর্বমোট ৩৯৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১৮৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। অনুমোদিত ব্যয়ের সীমা ছিল ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।এ হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি ৬৯ কোটি ১০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। যা ৬০ শতাংশ ।

আগের বছরে জীবন বীমা করপোরেশন ৩৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে ১৫৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অথচ ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ১১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৪২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা প্রায় ৩৮ শতাংশ বেশি ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে।

এদিকে বিদেশী মালিকানাধীন মেটলাইফ আলিকোর বাংলাদেশ শাখা ২০১৬ সালে ২১৫০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৫৪৭ কোটি টাকা। ব্যয়ের অনুমোদিত সীমা ছিল ৫৯৪ কোটি টাকা। ব্যবস্থাপনা খাতে সীমার চেয়ে ৪৭ কোটি টাকা বা প্রায় ৮ শতাংশ কম ব্যয় করেছে মেটলাইফ আলিকো। এরআগে ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১৮১৭ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করতে ৪৬১ কোটি টাকা ব্যয় করে। অনুমোদন ছিল ৪৯৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৩২ কোটি টাকা বা ৬.৪৯ শতাংশ কম ব্যয় করে মেটলাইফ আলিকো।

Published on: Tuesday, February 7 2017, 21:35