গ্রামীণ খাতে বীমার দায়বদ্ধতা লঙ্ঘন

শহর কেন্দ্রিক মেটলাইফের বীমা ব্যবসা

অনুপ সর্বজ্ঞ: তৃণমূল পর্যায়ে বীমা সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে গ্রামীণ বা সামাজিক খাতে বীমাকারীর দায়বদ্ধতা প্রবিধানমালা কার্যকর হয়েছে ২০১৩ সালে। তবে এরপর ছয় বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও গ্রামে বীমা ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারেনি বহুজাতিক বীমা কোম্পানি মেটলাইফ। তবে দেশে ব্যবসা শুরু করা আরেক বিদেশি কোম্পানি এলআইসি’র পরিকল্পনা শুধু গ্রামীণ খাত থেকেই ১০ শতাংশ ব্যবসা সংগ্রহের। আইডিআরএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গ্রামীণ বা সামাজিক খাতে বীমার দায়বদ্ধতা প্রবিধানমালা ২০১২ অনুসারে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোকে প্রথম বছরে কমপক্ষে ১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ৩, তৃতীয় বছরে ৬, চতুর্থ বছরে ৯ এব‌ং পঞ্চম ও পরবর্তি বছরগুলোও কমপক্ষে ১২ শতাংশ ব্যবসা গ্রাম থেকে আনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার পরও গ্রামে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেনি মেটলাইফ। মূলত শহরের করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও নগরবাসীই এ কোম্পানির মূল গ্রাহক।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক বীমা কোম্পানি মেটলাইফ ইনকরপোরেশনের একটি শাখা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এদেশে ব্যবসা করছে মেটলাইফ। বর্তমানে সারা দেশে ২০০টি এজেন্সি রয়েছে তাদের। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা, যশোর ও বগুড়ায় প্রতিষ্ঠানটির সেলস অফিস থাকলেও তার সেবা শহরের গন্ডি পেরিয়ে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না।

আইডিআরএ বলছে, দেশের সব মানুষকে বীমার আওতায় আনতেই আইনটি পাশ করা হয়েছিল। কিন্তু গ্রামে মেটলাইফের কোন শাখা নেই। তবে এলআইসি আইন অনুযায়ী গ্রামেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।  বিদ্যমান কোম্পানিগুলো দেশের তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছতে পেরেছে কিনা তা জানতে চেয়ে কর্তৃপক্ষ শিগগিরই সবাইকে চিঠি দেবে।

জানা গেছে, এরইমধ্যে নারায়ণগঞ্জ, যশোর ও চট্টগ্রামে শাখা অফিস খুলেছে এলআইসি। সেখানে এজেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে, যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে নিয়ে কাজ করবে। এজেন্ট নিয়োগেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ভারতীয় এ প্রতিষ্ঠান। তাদের এজেন্টের তালিকায় স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই প্রাধান্য পাবেন।

এ বিষয়ে এলআইসি বাংলাদেশের সিইও অরূপ দাসগুপ্ত বলেন, আমরা ১০ শতাংশ ব্যবসা গ্রাম থেকে আনার পরিকল্পনা করেছি। প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট নিয়োগেও আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরাই এ প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট হেত পারবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেটলাইফের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের একটা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা আছে। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা ব্যবসা সংগ্রহ করছি।