জরিপের টাকা পরিশোধে ৯ বছর!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি বৈদ্যতিক শর্ট সার্কিট থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয় গাজীপুরের আর বি ইন্টারন্যাশনাল। ক্ষতিগ্রস্ত এ প্রতিষ্ঠানের বীমাকারী ছিল বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স। নিয়ম অনুযায়ী অগ্নি দুর্ঘটনার পর ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে জরিপকারী নিয়োগ দেয় বীমা কোম্পানিটি। ইনসাফ ইন্সপেকশন ছিল এ ঘটনার জরিপকারী।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করে জরিপ প্রতিবেদন দেয় ইনসাফ ইন্সপেকশন কোম্পানি। এর ভিত্তিতে বীমা দাবিও পরিশোধ করে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে জরিপকারীর বিল পরিশোধ করেনি বীমা কোম্পানিটি। এ অবস্থায় মৌখিক নিবেদন ও বারবার তাগাদাপত্র দেয় ইনসাফ ইন্সপেকশন। সবশেষ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিযোগ দাখিলের হুমকি দিলে গত ৩০ মে বিল পরিশোধ করে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স।

শুধু গাজীপুরের আর বি ইন্টারন্যাশনালের ক্ষেত্রেই এমন তিক্ত ঘটনার জন্ম দেয়নি রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স। বরং ইনসাফ ইন্সপেকশনের সঙ্গে এমন আরো অনেক ঘটনারই জন্ম দিয়েছে বেসরকারি এ নন-লাইফ বীমা কোম্পানি। বনানীর ইন্ট্রামেক্স ফ্যাশনস লিমিটেড, ঢাকার অনন্তা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেডসহ এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের জরিপের বিল পরিশোধেও দীর্ঘ সূত্রিতা দেখিয়েছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স।

ইনসাফ ইন্সপেকশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা অংশীদার পি এম এম কামাল ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, ২০১০ সালে অনুমোদন লাভের পর আমরা প্রথম জরিপের কাজ পাই রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স থেকে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রথম বিল (আইআইসি/২০১০-০০১) দাখিল করা হয় এই বীমা কোম্পানিতে। গত ৩০ মে যে বিল পরিশোধ করলো রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স।

পি এম এম কামাল বলেন, বীমায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জরিপ প্রতিবেদন। এর ভিত্তিতেই বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়। জরিপ প্রতিবেদন সঠিক না হলে বীমা গ্রাহক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তেমনি বীমা কোম্পানিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমন আচরণ, তাদেরকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয়ার সামিল।

এ বিষয়ে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ-উল-হাসান ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, অনেক সময় বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে দেরি হলে জরিপকারীর বিল পরিশোধেও দেরি হয়ে থাকে। তবে জরিপকারীর কাজ সম্পন্নের পর তার বিল পরিশোধ করাই নিয়ম। এ কোম্পানিতে নতুন দায়িত্ব নেয়ায় এমন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে এ ধরণের বিল আমার কাছে আসলে আমি তা দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেই।