বীমাখাত অবিশ্বাসের জায়গা নয়, বিশ্বাস করবেন বেনিফিট নিবেন: অর্থমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমাখাত সম্পর্কে জনগণের যে অভিযোগ ছিল সে অভিযোগ আর নেই। বীমাখাত এখন আগের জায়গায় নেই। বীমাখাতকে বিশ্বাস করবেন বেনিফিট নিবেন। আমরা প্রাণীসম্পদ বীমা, কৃষি বীমা, প্রবাসী বীমা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারাও জনগণকে বলবেন বীমাখাত অবিশ্বাসের জায়গা নয়।
আজ রোববার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বীমা মালিক ও মূখ্য নির্বাহীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে বীমাখাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাই বীমাখাত উন্নয়নে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অনেক ভবনই বীমার আওতায় নেই। মটরগাড়ির বীমাও ঠিকভাবে করা হয় না। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে সে অনুযায়ী বীমাখাতের উন্নয়ন ঘটেনি। অর্থনীতিতে বীমার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করার জন্য বীমাখাতকে শক্তিশালী করা অপরিহার্য। এটাকে খাটো করে দেখার কিছু নেই।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে গেছে। আগামী ৩০ সাল পর্যন্ত জিডিপিতে আমরা এগিয়ে থাকব। তাই বীমাখাতকে শক্তিশালী করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীমাখাতের প্রতি আস্থা রাখেন। তাই তিনি খাতটিকে শক্তিশালী করতে সব ধরনের সহায়তা দিতে চান। আপনারা যেভাবে বলবেন আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে সব ধরনের সহযোগিতার ব্যবস্থা করব।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা রাস্তায় বের হই কিন্তু আমাদের কোনো গাড়ির বীমা কভারেজ নেই। হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে তাদের কোনো বীমা নেই। অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এ অবস্থায় এভাবে ঝুঁকির মধ্যে থাকা যায় না। এটা দেশের জন্য ক্ষতি, দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতি।
তিনি বলেন, একটি খাতে সমস্যা থাকতে পারে। আমরা সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে সেসব সমস্যার সমাধান করব। বীমাখাতের আস্থার সংকট রয়েছে। তা আমাদের দূর করতে হবে। এজন্য আপনাদের বিনিয়োগ করতে হবে। প্রচার-প্রচারণায় আসতে হবে। আপনারা ব্যবসা করবেন খরচ করবেন না, তাহলে ব্যবসা কীভাবে বাড়বে।
বীমা মালিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। আজ যদি আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করতে পারি তাহলে তারাই এ খাতের উন্নয়ন ধরে রাখবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে। বীমা পেশার ছেলে মেয়েদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষা কারিকুলামে বীমাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইন্স্যুরেন্স একাডেমিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, অনেকে এজেন্টকে দালাল মনে করেন। এতে অনেকে মনে করেন ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। এজেন্টের নাম পরিবর্তন করে বীমা কর্মকর্তা রাখেন। এতে সমস্যা কেটে যাবে। খাতটি উন্নয়নের জন্য যা করলে ভাল হয় আপনাদের তারই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার কোনো খাতের পরিবর্তন করে দিতে পারে না। সরকার নীতিমালা করতে পারে। তা বাস্তবায়ন করতে হবে আপানাদের।
মন্ত্রী আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বীমা পেশায় ছিলেন, বীমা পেশায় চাকরি করতেন। এটা আমাদের প্রেরণা উৎস। তাই দেশ প্রেম থেকে, দেশাত্ববোধ থেকে, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে বীমাখাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
বীমা মালিকদের উদ্দেশ্যে এসময় মন্ত্রী বলেন, আমরা কঠোর হতে চাই না। আমরা ভালোবাসা দিয়েই একটি খাতের পরিবর্তন আনতে চাই। তবে কেউ দিনের পর দিন, বছরের পর বছর আইন লঙ্ঘন করে যাবে তা হতে পারে না। এক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনে পদক্ষেপ নিতে হবে।