লাইফ বীমায় এক বছরে ২ হাজার ৩৯৩ শাখা অফিস বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরে সারাদেশে ২ হাজার ৩৯৩ শাখা অফিস বন্ধ করেছে লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে একই সময়ে নন-লাইফ বীমা খাতের ২১টি শাখা অফিস বন্ধ করা হয়েছে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

আইডিআরএ’র তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশে ৭৮টি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রধান কার্যালয় ছাড়াও সারাদেশে এসব কোম্পানির ৫ হাজার ৪৭৮টি শাখা অফিস রয়েছে। এর মধ্যে লাইফ বীমা কোম্পানির শাখা অফিস রয়েছে ৪ হাজার ১৫৮টি এবং নন-লাইফে ১ হাজার ৩২০টি।

এর আগে ২০১৭ সালে সারাদেশে ৩২টি লাইফ বীমা কোম্পানির শাখা অফিসের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৫৫১টি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ২ হাজার ৩৯৩টি শাখা অফিস বন্ধ করেছে লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো। আর নন-লাইফ বীমায় ২০১৭ সালে ৪৬টি কোম্পানির শাখা অফিস ছিল ১ হাজার ৩৪১টি, যার মধ্যে ২১টি বন্ধ হয়েছে ২০১৮ সালে।

এ ছাড়াও ২০১৭ সালে লাইফ বীমা কোম্পানির ৪৬৫টি শাখা অফিস বন্ধ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে বন্ধ করা হয়েছে ৬৭৯টি শাখা অফিস এবং ২০১৫ সালে বন্ধ করা হয়েছে ৫৯৬টি। অন্যদিকে ২০১৬ সালে নন-লাইফ বীমা কোম্পানির শাখা অফিস ছিল ১ হাজার ৩৩৪টি এবং ২০১৫ সালে ছিল ১ হাজার ৩২২টি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ব্যবসার প্রকৃতির কারণে দেশজুড়ে বিস্তৃত শাখার প্রাপ্যতা গ্রাহকদের মধ্যে বীমা সেবা বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বীমা কোম্পানিগুলো তাদের হাজার হাজার শাখার মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন অংশে বীমা কোম্পানিগুলোর শাখা সম্প্রসারণের প্রবণতা আশাব্যঞ্জক নয়।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বীমা কোম্পানির নতুন শাখা অফিস খুলতে আইডিআরএ’র অনুমোদন নিতে হয়। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া অফিসগুলোর বেশিরভাগই ছিল অনুমোদনহীন। কোম্পানির কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে স্থানীয় বীমা কর্মকর্তারা এসব অফিস খুলেছিলেন। বর্তমানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কঠোর অবস্থান এবং ব্যবসার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারায় এসব অফিস বন্ধ করে দিচ্ছে কোম্পানিগুলো।

শাখা অফিস বন্ধের বিষয়ে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, অফিস বন্ধ করা ভালো দিক নয়। এটা যেকোন ব্যবসার জন্যই খারাপ। এতে গ্রাহকদের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। এমনিতেই বীমা বিষয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা ইতিবাচক নয়।

নতুন শাখা খোলার আগে ব্যবসায়িক অবস্থাসহ সবকিছু যাচাইবাছাই করে দেখতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত শাখা খোলা যাবে না। নতুন অফিস নিলে সেখানে প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। প্রশিক্ষিত জনবল ছাড়া ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি করা সম্ভব নয় বলে জানান এস এম নুরুজ্জামান।