দেশের বীমা সার্ভেয়রদের বেশিরভাগ কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ: এ কে এম এহসানুল হক
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বীমা সার্ভেয়রদের বেশিরভাগ কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ বীমা করপোরেশনের পরিচালক ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস)’র জেনারেল সেক্রেটারি এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই। তিনি বলেন, ইউরোপ বা অন্য সকল দেশের সার্ভেয়ররা এমন পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করেন যে, তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকে না।
রোববার (৫ জুন) বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি) এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস) আয়োজিত বীমা জরিপকারীদের জন্য ‘প্রাক-পরিদর্শন, জরিপ এবং অবলিখন বা দাবি ব্যবস্থাপনায় এগুলোর প্রভাব’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ কে এম এহসানুল হক বলেন, সার্ভে এমন একটি কাজ- এখানে কাজ করলে যেমন সুনাম আছে তেমনি দুর্নাম কুড়ানোর সুযোগও আছে; এটা কাজের ওপর নির্ভর করবে। আমি যখন দেশের বাইরের কোম্পানিতে চাকরি করেছি তখন তারা (কোম্পানি) আমার সকল প্রশিক্ষণের খরচ বহন করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছে। আমাকে তারা বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়েছে তাদের খরচে। যা আমাদের দেশে নেই বললেই চলে।
সাধারণ বীমা করপোরেশনে কাজ করে আমার অনেক ফাইল বা ক্লেইম দেখার সুযোগ হয়েছে । এতে করে আমি যে কথা বুঝেছি তাতে আমাদের সার্ভেয়রদের আরো প্রচুর প্রশিক্ষণের ও পড়াশুনার দরকার। আর সার্ভেয়রদের কাছে এই বিষয়ে প্রচুর পরিমাণে তথ্য রাখতে হবে, যা আমিও করি।
কর্মশালায় অংশগ্রহীতাদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের সার্ভেয়রেরা কতটুকু সঠিকভাবে সার্ভে করে! আমি একটি ফাইল দেখেছি সেখানে তারা ০.৫ শতাংশ পিএমএল (সম্ভাব্য সর্বাধিক ক্ষতির) উল্লেখ করেছে। এটা কখনো সম্ভব নয়। কেমনে কি করেছে তারা! তাদের কি পিএমএল সম্পর্কে ধারণা আছে, কতটুকুইবা তারা জানে এ বিষয়ে!
তিনি বলেন, যারা সার্ভে করে তাদের স্বতন্ত্র হতে হবে, নিরপেক্ষতা দেখাতে হবে। আর ভালো সার্ভেয়র হতে হলে এই বিষয়ে একাডেমিক শিক্ষা থাকতে হবে। বিভিন্ন দেশে যারা সার্ভে করে তারা এই বিষয়ে বড় বড় ডিগ্রিধারী। এ ছাড়াও আমাদরে মনে রাখতে হবে, আমরা দেশের জন্য কাজ করছি।
আমাদের দেশে অধিকাংশ আগুন লাগে শর্ট সার্কিট এবং ধুমপানের কারণে। আর শর্ট সার্কিটের বেলায় ওভার লোডিং হওয়ার কারণে অগ্নিকাণ্ড লেগে থাকে। যেখানে আমাদের ধারণক্ষমতা দু’টা মেশিন সেখানে যদি আমরা তিনটা ব্যবহার করি তাহালে তো শর্ট সার্কিট হবেই। এসব লক্ষ্য রেখে সার্ভে করতে হবে।
আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ধুমপানের জন্য ৫০ শতাংশ আগুন লাগে। এজন্য কোথাও সার্ভে করতে গেলে বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমাদের ভালোভাবে সার্ভে করতে হবে, নিরপেক্ষভাবে সার্ভে করতে হবে।