বীমা কোম্পানিতে বসেই ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা কোম্পানিতে বসেই বঙ্গবন্ধু ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল তখন বঙ্গবন্ধু বীমা কোম্পানিতে যোগদান করেন। এর ফলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করতেন এবং স্বাধীনতার বিষয়টিকে ধীরে ধীরে আরো মানুষের চেতনায় নিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে এই বীমা কোম্পানিতে বসেই ৬ দফা প্রণয়ন করেন।
বুধবার (১ মার্চ) জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। শুধু রাজনীতিই নয়, ঢাকার বাইরে তিনি যেতে পারবেন না; সেই শর্ত দেয়া হয়েছিল। ঢাকার বাইরে যেতে পুলিশকে খবর দিয়ে অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। আমরা তখন ৭৬ নং সেগুনবাগিচার দ্বোতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে আমরা ছিলাম।
তিনি বলেন, সেখানে আমাদের বাবা আমাদের সাথে থাকা শুরু করলেন সেই সময় তিনি (বঙ্গবন্ধু) জীবন-জীবিকার জন্য বীমা কোম্পনিতে যোগদান করেন। সে সময় বীমা কোম্পানিতে যিনি ছিলেন, তিনি বাবার বন্ধু ছিলেন -অনেক আগে থেকেই। তিনি তাকে (বঙ্গবন্ধু) বললেন বীমা কোম্পানির এই অঞ্চলের দায়িত্বটা তাকে নিতে হবে। সেই থেকে তিনি বীমা কোম্পানিতে এ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে আমাদের জীবনটাই এমন চড়াই-উৎরাইয়ের। মা (শেখ ফজিলাতুন্নেসা) প্রায়ই বলতেন যে আইয়ুব খানকে আমি একটা ব্যাপারে ধন্যবাদ দেই যে, বীমা কোম্পানিতে চাকরি নেয়ার পর তিনি (বঙ্গবন্ধু) মাসে একটা বেতন পেতেন এবং তার নিয়মানুবর্তিতা ছিল। আমরাও আমাদের বাবাকে কাছে পেয়েছিলাম -এটাও বাস্তব কথা। বলতে গেলে জীবনে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ এসেছিল। যদিও এটা বেশিদিন ছিল না। তিনি আবার ’৬২ সালে গ্রেফতার হন।
শেখ হাসিনা বলেন, যদিও বঙ্গবন্ধুকে ঢাকার বাইরে যেতে অনুমোদন নিতে হতো। তবুও বীমা কোম্পানির কাজের জন্য তিনি প্রায়ই ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় জেলায় যেতেন। সে সময় রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং সবাই প্রায় গ্রেফতার তারপরও ওই যাওয়ার ফলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করতেন এবং স্বাধীনতার বিষয়টিকে ধীরে ধীরে আরো মানুষের চেতনায় নিয়ে আসার সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন।
বীমা কোম্পানিতে বসে ৬ দফা প্রণয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৪ সালে যখন আব্বার মন্ত্রী পরিষদ বাতিল করে শাসনতন্ত্রের ৯২ (ক) ধারা জারী করা হয় তখন আমাদেরকে মিন্টো রোডের বাসা থেকে ১৪ দিনের নোটিশে বের করে দেয়া হয়। তখন নাজিরা বাজার লেনে হানিফের (মোহাম্মদ হানিফ) ফুফুর একতলা বাসায় ছিলাম। সে সময় হানিফ বিএ পাস করলে তাকে টাইপ শেখানো হয় এবং আব্বা (বঙ্গবন্ধু)’র পিএ হিসেবে তাকে বীমা কোম্পানিতেই চাকরি দেন। ওই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই তখন ৬ দফা প্রণয়ন করেন।