নতুন পলিসি করতে পারবে না স্বদেশ লাইফ
নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন পলিসি বিক্রি করতে পারবে না স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে। গত ৩ মে কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহীকে লেখা এক চিঠিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
চিঠির তথ্য অনুসারে, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, লাইফ ফান্ড গঠন করতে না পারা, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ও মূলধন থেকে অর্জিত সুদের অর্থ খরচ করা, পলিসি নবায়নের হার কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে কোম্পানিটিকে নতুন পলিসি বিক্রি না করার এ নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্বদেশ ইসলামী লাইফ সহ ১৩টি কোম্পানির সক্ষমতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়া হয়। এর ভিত্তিতেই স্বদেশ ইসলামী লাইফে তদন্ত করে আইডিআরএ। তদন্তে কোম্পানিটির আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করেই এ সিদ্ধান্ত নেয় আইডিআরএ।
তদন্তে স্বদেশ ইসলামী লাইফের আর্থিক সক্ষমতার যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে দেখা যায়-
কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ৮ বছরে (২০১৪ সাল হতে ২০২১ সাল) ২১৯%, ১৪৯%, ১২৬%, ৯৪%, ১১৫%, ৪১%, ৪৫% অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে। অনুমোদিত সীমার চেয়ে এই অতিরিক্ত ব্যয়ের হার ৭৮%; যা বীমা আইন ২০১০ এর ৬২ ধারার লঙ্ঘন।
এই সময়ে কোম্পানিটির প্রিমিয়াম আয় ৪২ কোটি টাকা। অথচ মোট ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রিমিয়াম আয়ের চেয়ে ১১ কোটি টাকা বেশি খরচ করেছে। এ কারণেই কোম্পানির লাইফ ফান্ড তৈরী হয়নি। ফলে গ্রাহকের দাবি পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়েছে। অপর দিকে কোম্পানি পরিশোধিত মূলধন ও মূলধন হতে অর্জিত সুদও খরচ করেছে বীমা কোম্পানিটি।
২০২১ সালে স্বদেশ ইসলামী লাইফের ২য় বর্ষে নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহের হার মাত্র ২৫%। ৩য় থেকে পরবর্তী বছরগুলোতে পলিসি নবায়নের এ হার আরও কমে যায়। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, কোম্পানিটির সামগ্রিক ব্যবসায়িক মডেল বা কৌশল অত্যন্ত দুর্বল।
আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তদন্ত দল মনে করছে, কোম্পানির বীমা ব্যবসার কার্যক্রম বীমাগ্রহীতা তথা বীমা শিল্পের স্বার্থের পরিপন্থী। বীমা গ্রাহকরা ঝুঁকিতে আছে। এ অবস্থায় নতুন বীমা পলিসি (প্রথম বছরের) ইস্যুর মাধ্যমে আরও অধিক সংখ্যক গ্রাহককে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।