আইআরএফ সদস্যদের কর্মশালায় আলোচকরা

এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বীমা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বীমা। তবে সেক্ষেত্রে সবগুলো বীমা কোম্পানিতে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকা জরুরি। এছাড়াও বীমা বিক্রয় চ্যানেল বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বীমার বাজার আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন।

-এমনটাই বলেছেন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালার আলোচকরা। চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সহযোগিতায় শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে এ কর্মশালা আয়োজন করে আইআরএফ। কর্মশালায় বীমা সংক্রান্ত মৌলিক ধারণাসহ এ খাতের বিনিয়োগ, রিটার্ন এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন। 

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকতা এস এম জিয়াউল হক বলেন, নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য একমাত্র বীমা উপযুক্ত মাধ্যম। যদিও অর্থনীতিতে বীমার অবদান মাত্র দশমিক চার শতাংশ। এই হার বাড়াতে হলে উন্নত দেশের ন্যায় ব্যাংকাস্যুরেন্সসহ আরও সাত/আটটি চ্যানেলে পলিসি বিক্রি করতে হবে।

তিনি বলেন, নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বীমার বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। চার্টার্ড লাইফ তার বাজার সম্প্রসারণে বেশ কিছু নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। প্রতিনিয়তই সেসব প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ছে বলে জানান এস এম জিয়াউল হক।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোকে যেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কম, সেখানে বিনিয়োগ করতে হয়। ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের প্রধান জায়গা হচ্ছে বন্ড। কিন্তু বন্ড থেকে যে আয় আসে সেটি খুবই অপার্যপ্ত। তাই ভালো রির্টানের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, চার্টার্ড লাইফের বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ রিটার্ন আসছে পুঁজিবাজার থেকে।

এস এম জিয়াউল হক বলেন, নতুন কোম্পানি হিসেবে আমাদের এখনও বড় ধরনের কোন বীমা দাবি পরিশোধ করতে হয়নি। তবে ২০২৫ সালের পর আমাদের বেশিরভাগ পলিসির মেয়াদ শেষ হবে। তখন আমাদের দাবি পরিশোধে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হবে। আমরা সেটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, যাতে চার্টার্ড লাইফ যেকোনও সময় স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারে।

কোম্পানিটির প্রধান ফিন্যান্সিয়াল কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বীমা। তবে সেক্ষেত্রে সবগুলো বীমা কোম্পানিতে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকা জরুরি। বীমার পলিসি থাকলে কর সুবিধা পাওয়া যায়। এই তথ্যই অনেক নাগরিক জানেন না। বীমার সুবিধাগুলো সব নাগরিকের কাছে পৌঁছে দিলে সবাই আগ্রহ পাবে বলে মনে করেন তিনি।

কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ বলেন, বীমা দাবি পরিশোধের হার ৭০ শতাংশের বেশি। মাত্র দুই-তিনটা কোম্পানির কাছে মার্কেটের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। যারা ভালো করছে তাদের বিষয়ে গণমাধ্যম ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে বিমা খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।

উল্লেখ্য, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যক্তিগত জীবন বীমা পলিসি এবং গ্রুপ জীবন বীমা পলিসি বিক্রি করে। বর্তমানে, কোম্পানিটি সারাদেশে ৩৫টি সেলস অফিস, ২৪টি শাখা অফিস এবং ১৫টি ইউনিট অফিসের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে।

ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চার্টার্ড লাইফের মোট সম্পদের পরিমাণ ৯৪ কোটি টাকা এবং লাইফ ফান্ডের আকার ৪৯ কোটি টাকা। ২০২২ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এটির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৭.৫০ কোটি টাকা।