সোনালী লাইফে বহিস্কৃতদের পুনর্বহাল ও পূর্বের মতো সুবিধা দিতে আইডিআরএ’র চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক: সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বহিস্কৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বহাল করতে কোম্পানিটির প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। একইসঙ্গে কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উন্নয়ন কর্মীদের পূর্বের মতো সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) কর্তৃপক্ষের সদস্য কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বর্তমান প্রশাসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফেরদৌসকে পাঠানো হয়েছে। একেইসঙ্গে চিঠির অনুলিপি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকেও পাঠানো হয়েছে।
তবে পূর্বের মতো সুযোগ-সুবিধা বলতে কি বোঝানো হয়েছে তা ওই চিঠিতে ব্যাখ্যা করেনি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । বিধান অনুসারে আইডিআরএ’র নিয়ম বহির্ভুত কোন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার সুযোগ নেই।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইডিআরএ’র এই নির্দেশনাকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেয়ার সুযোগ থেকে যায়। যদি বীমা কোম্পানিটির দেয়া অবৈধ সুযোগ-সুবিধা বহাল রাখা হয় তাহলে এ খাতের বাকী কোম্পানিগুলো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
গতকালের আন্দোলন সমঝোতায় প্রথম শর্ত ছিল- সোনালী লাইফের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও উন্নয়ন কর্মীদের পূর্বের মতো তাদের সুযোগ-সুবিধা বহালের বিষয়ে আইডিআরএ থেকে প্রশাসককে নির্দেশনা দেয়া হবে এবং যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসককে নির্দেশনা দেয়া হবে।
তবে এই সমঝোতাতেও সোনালী লাইফের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উন্নয়ন কর্মীরা পূর্বের মতো নিয়মবহির্ভুত কোন সুযোগ-সুবিধা পাবে কিনা তা সুস্পষ্ট করা হয়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাঠকর্মীদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করে একাধিক অফিস সার্কুলার জারি করে সোনালী লাইফের সাসপেন্ডেড পর্ষদ। এসব সার্কুলারে স্বাক্ষর করেন কোম্পানিটির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী রফিকুল ইসলাম।
সেলস পলিসির নামে মোট ৭টি সার্কুলারে এফএ, ইউএম, বিএম এবং এক্সিকিউটিভ বেনিফিট নামে বিশেষ এসব আর্থিক সুবিধা দেয়ার ঘোষণা করা হয়।
এসব সুবিধার মধ্যে ছিল আইডিআরএ’র নির্ধারিত কমিশনের বাইরে কোম্পানির ফাইন্যান্সিয়াল এসোসিয়েটরা ২০ হাজার টাকা প্রিমিয়াম আয় করলে অ্যালাওয়ান্স হিসেবে পাবেন অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা।
আবার ইউনিট ম্যানেজাররা ১ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করলে পাবেন সাড়ে ১২ হাজার টাকা। আর ব্রাঞ্চ ম্যানেজাররা মাসে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রিমিয়াম আয়ে এলাওঅ্যান্স পাবেন ৫০ হাজার টাকা।
এসব বিশেষ আর্থিক সুবিধা বন্ধ করতে গত ২ জুলাই একটি অফিস আদেশ জারি করেন আইডিআরএ নিযুক্ত সোনালী লাইফের প্রশাসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফেরদৌস। অফিস আদেশটি ১ মার্চ ২০২৪ তারিখ থেকে কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়।
এ নিয়ে আন্দোলন শুরু করলে গত ৭ জুলাই সোনালী লাইফের শীর্ষস্থানীয় ৫ কর্মকর্তাকে বহিস্কার করা হয়। পরে ১১ জুলাই কোম্পানিটির আরো ১৩ কর্মকর্তাকে বহিস্কার করা হয়। আর্থিক অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সনদ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বহিস্কার করা হয়।
এই প্রেক্ষিতে আন্দোলন আরো জোরদার করে সোনালী লাইফের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উন্নয়ন কর্মকর্তারা। বীমা কোম্পানিটির প্রশাসককে অপসারণ এবং আইডিআরএ চেয়ারম্যানের পদত্যাগও দাবি করা হয় আন্দোলনে।