নন-লাইফ বীমায় শূন্য মূল্য হিসেবে গণ্য হবে ১০ প্রকারের সম্পদ
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোম্পানি গঠনের প্রাথমিক ব্যয়, অনাদায়ী প্রিমিয়াম, আসবাবপত্র, সফটওয়্যার, স্টেশনারি মালামালসহ ১০ প্রকারের সম্পদকে শূন্য মূল্য হিসেবে গণ্য করতে হবে নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সম্পদ মূল্যায়নে। অর্থাৎ কোম্পানির মোট সম্পদের হিসাবে এসব সম্পদমূল্য দেখানো যাবে না।
এমন বিধান করে গত ১৫ অক্টোবর ‘নন-লাইফ বীমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা, ২০২৪’ এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এই সলভেন্সি মার্জিনে ৬টি প্রবিধান এবং ৩টি তফসিল সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রবিধান ৩-এ প্রত্যেক নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে সম্পদের মূল্যায়ন বিবরণী প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। প্রবিধান ৪-এ দায়ের পরিমাণের একটি বিবরণী প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। প্রবিধান ৫-এ প্রয়োজনীয় সলভেন্সি মার্জিন এবং সলভেন্সি মার্জিনের একটি বিবরণী প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। আর প্রবিধান ৬-এ নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সলভেন্সি অনুপাত নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
নন-লাইফ বীমা কোম্পানির ৪ ধরণের দায়ের কথা বলা হয়েছে সলভেন্সি মার্জিনে, যা দায় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে গণ্য করতে হবে। এতে বলা হয়েছে-
অপরিশোধিত দাবির বিপরীতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে রিজার্ভ নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বীমাকারীর অপরিশোধিত দাবির পরিমাণ জ্ঞাত হলে দাবির সমপরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। আর যেক্ষেত্রে অপরিশোধিত দাবির পরিমাণ বীমাকারী কর্তৃক যুক্তিসঙ্গতভাবে নিরুপণ করা যায় সেক্ষেত্রে বীমাকারী প্রতিটি পলিসির ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে নির্ধারণ করবে অথবা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
যেক্ষেত্রে দাবিসমূহ গৃহীত হয়েছে কিন্তু তার প্রতিবেদন প্রদত্ত হয়নি সেই ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসরণ করে নির্ধারণ করিতে হবে। মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া ঝুঁকির বিপরীতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে রিজার্ভ নির্ধারণ করতে হবে।
অন্যান্য দায়ের মধ্যে রয়েছে-
মন্দ ও সন্দেহযুক্ত ঋণের বিপরীতে রিজার্ভ; ঘোষিত বা সুপারিশকৃত ডিভিডেন্ডি এবং পূর্ণ অপরিশোধিত ডিভিডেন্ডের বিপরীতে রিজার্ভ; করের বিপরীতে রিজার্ভ; বিবিধ পাওনাদারের বিভিন্ন প্রাপ্য; সঞ্চিত প্রিমিয়াম; অপ্রত্যাশিত ক্ষতির বিপরীতে রিজার্ভ; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে ঋণ ও ঋণের অপরিশোধিত সুদ; বীমা ব্যবসায়রত অন্য বীমা কোম্পানির নিকট বকেয়ার পরিমাণ; বকেয়া নেট দাবিসমূহ; এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যেকোনো দায়।
শূন্য মূল্য হিসেবে গণ্য হবে যেসব সম্পদ-
আদায়যোগ্য নয় এরূপ সকল ঋণ; অ-আদায়যোগ্য অগ্রিমসমূহ; আসবাবপত্র, স্থাপিত জিনিসপত্র, ডেড-স্টক, সফটওয়্যার ও স্টেশনারি মালামাল; পূর্বপরিশোধিত খরচসমূহ; লাভ ও ক্ষতির হিসাব সমন্বয় স্থিতি; পুনর্বীমাকারীর ৬ মাস অধিককালের অনাদায়ী স্থিতি; কোম্পানি গঠনে প্রাথমিক ব্যয়সমূহ; অস্পর্শযোগ্য (ইনট্যানজিবল) সম্পদ;
অনাদায়ী প্রিমিয়াম যা ১ মাসের মধ্যে অথবা আইনের ধারা ৩২ অনুযায়ী নিরীক্ষক কর্তৃক রিটার্ন স্বাক্ষর হওয়া পর্যন্ত, যা পূর্বে ঘটে, সংগৃহীত হয় নাই; এবং এজেন্টের স্থিতি যা আইনের ধারা ৩২ অনুযায়ী নিরীক্ষক কর্তৃক রিটার্ন স্বাক্ষর হওয়া পর্যন্ত সমন্বয় করা হয় নাই।
নন-লাইফ বীমা কোম্পানির সম্পদ বিবরণীতে যা থাকবে-
নগদ এবং নগদতুল্য; সরকারি সিকিউরিটিস (ফেয়ার ভ্যালু অথবা বাজারমূল্য এর মধ্যে যা কম হয়); স্থায়ী আমানত (যে পরিমাণ আদায়যোগ্য হয়); শেয়ারে বিনিয়োগ (ফেয়ার ভ্যালু অথবা বাজারমূল্যের মধ্যে যা কম হয়); মিউচুয়াল ফান্ড (ফেয়ার ভ্যালু, নেট অ্যাসেট ভ্যালু এবং বাজার মূল্যের মধ্যে যা কম হয়)
ডিবেঞ্চার/বন্ড (ফেয়ার ভ্যালু এবং বাজার মূল্যের মধ্যে যা কম হয়); অন্যান্য সিকিউরিটিস (ফেয়ার ভ্যালু অথবা বাজারমূল্যের মধ্যে যা কম হয়); স্থাবর সম্পত্তিতে বিনিয়োগ- স্থাবর সম্পত্তি (ক্রয় মূল্য, অথবা ফেয়ার ভ্যালুর মধ্যে যা কম হয়); অন্যান্য স্পর্শনীয় সম্পদ (ক্রয় মূল্য, অবচায়িত মূল্য, অথবা ফেয়ার ভ্যালুর মধ্যে যা কম হয়) ।