গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ না করায়

গোল্ডেন লাইফের চেয়ারম্যান ও সিইও'র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান এবং মূখ্য নির্বাহীসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পাওনা টাকা আদায়ে কুষ্টিয়ার ৯৭ জন গ্রাহকের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ান জারি করেন কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। রোববার শুনানী শেষে এ আদেশ দেন আমলি ২য় আদলতের বিচারক এম এ মোর্শেদ। মামলা নং-সিআর-১২০/২০১৭, স্মারক নং-৬৮২/২০১৭। মামলার বাদী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মামলা আরজি সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির ভেড়ামারা ইউনিট প্রধান শাহনাজ পারভীন গত ১৯ জুন, ২০১৭ তারিখে কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ৪র্থ আদালতে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় এ মামলা করেন। মামলার আসামীরা হলেন- গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক ফিরোজ আলম, বন্ধু বীমা প্রকল্পের পরিচালক এবং আইন বিভাগের মো. জহির উদ্দীন।

কোম্পানিটির বন্ধুবীমা প্রকল্পে ৯৭ জন গ্রাহকের ৭ লাখ ৫ হাজার ৭’শ টাকা জমা করে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা ইউনিট। পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের জন্য তাগিদ দেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিট। কিন্তু কোম্পানিটি গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এতে গ্রাহকের টাকা পাওয়া নিয়ে শংকা দেখা দেয়। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানের ওপর চাপ দিতে থাকে গ্রাহকরা।

এরপর গ্রাহকদের পক্ষে বাদী হয়ে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে মামলা দায়ের করেন গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভেড়ামারার ইউনিট প্রধান শাহনাজ পারভীন। মামলা নং সি আর ১৭১/১৬। তিনি নিজেও একজন বীমা গ্রাহক। মামলায় আসামি করা হয় কোম্পানিটির তৎকালীন মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত প্রামাণিক, (বর্তমানে বায়রা লাইফের মূখ্য নির্বাহী) বন্ধুবীমা প্রকল্প পরিচালক এজেডএম মাসুদ আজাদী এবং অর্থ ও হিসাব পরিচালক ফিরোজ আলমকে।

এরপর মামলাটি আপোষের জন্য গোল্ডেন লাইফ আগ্রহ প্রকাশ করলে বাদীও সম্মত হন। গত ২২ মার্চ, ২০১৭ তারিখে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কোম্পানি বাদীর দাবি মেনে নিলে আপোষের বিষয় চূড়ান্ত হয়। পরে আপোষের শর্তানুযায়ী আদালতে আপোষনামা দাখিল করে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে আপোষের শর্তানুসারে মামলা প্রত্যাহারের পর ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহকদের সকল দাবি পরিশোধে না করায় ১৭ মে, ২০১৭ তারিখে বাদী আসামিদের বরাবরে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। তারই প্রেক্ষিতে ৫ জুন আসামিরা আবারো বিষয়টি নিয়ে বাদী ও স্বাক্ষীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনার এক পর্যায়ে আসামিগণ টাকা প্রদানের অস্বীকৃতি জানায় এবং দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ঘটনার পর গত ১৯ জুন ২০১৭ তারিখে কোম্পানিটির ভেড়ামারা ইউনিট প্রধান শাহনাজ পারভীন কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ৪র্থ আদালতে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় নতুন করে মামলা করেন। এরই প্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেফতারে আজ রোববার পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এ বিষয়ে জানতে গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়ার মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

কোম্পানিটির আইন বিভাগের কর্মকর্তা মো. জহির উদ্দীনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি মামলার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন।