ডেল্টা লাইফের সাসপেন্ড পরিচালনা পর্ষদের অনিয়ম দুর্নীতি: আর্থিক ক্ষতির অস্বাভাবিক তথ্য আইডিআরএ’র

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেল্টা লাইফের সাসপেন্ড পরিচালনা পর্ষদের আমলে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি কত তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। লাইফ বীমা খাতে শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠান ২০২১ সাল জুড়েই দেশের বীমা খাতে আলোচিত সমালোচিত ছিল। বিশেষ করে কোম্পানিটির অনিয়ম দুর্নীতি সহ আর্থিক ক্ষতি কত টাকা হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার অভিযোগে আইডিআরএ ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ সাসপেন্ড করে। আইডিআরএ’র নিয়োগকৃত প্রশাসকদের আমলে দুর্নীতি অনিয়ম তদন্তে একাধিক বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ করা হয়। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন মেয়াদে নিরীক্ষা তদন্ত করে একেক সময় একেক ধরণের আর্থিক ক্ষতির হিসাব দেয়।

সর্বশেষ বিশেষ নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান একনাবিনের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন অনুসারে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদের আমলে কোম্পানিটির ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে চিঠি দেয় আইডিআরএ। ডেল্টা লাইফের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে দফায় দফায় নিয়োগকৃত বিশেষ নিরীক্ষকদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য, কোম্পানিটির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন, বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির হিসাবে বড় ধরনের অসঙ্গতির চিত্র উঠে এসেছে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র অনুসন্ধানে।

সূত্র মতে, ডেল্টা লাইফে বিশেষ নিরীক্ষার জন্য চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ফার্ম একনাবিনকে নিয়োগ দেয়া হয় চলতি বছরের ৫ আগস্ট। এর আগে বীমা আইন ২০১০ এর ৮৪ ধারা অনুসারে ফেমস এন্ড আর কে নিয়োগ দেয়া হয় ৬ অক্টোবর ২০১৯ সালে। এছাড়াও বীমা আইন ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুসারে হাওলাদার ইউনুস এন্ড কোং কে নিয়োগ দেয়া হয় ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে।

এর মধ্যে হাওলাদার ইউনুস ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল সময়ের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করেন ১৪ জুলাই ২০১৯ সালে, ফেমস এন্ড আর ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ১৪ জানুয়ারি ২০২১ সালে।  অন্যদিকে ডেল্টা লাইফে প্রথম প্রশাসকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দেয়া হয় ৬ জুন ২০২১ সালে।  কোম্পানিটিতে প্রশাসক নিয়োগ করা হয় ১১ ফ্রেবুয়ারি ২০২১।  

একনাবিন ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল ৯ বছরের বিশেষ নিরীক্ষার সাময়িক অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে ৭০টি নিরীক্ষা আপত্তি তুলে ধরা হয়।  এ বিষয়ে আইডিআরএ থেকে অর্থমন্ত্রণালয়কে ১ ডিসেম্বর পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ডেল্টা লাইফে নিয়োগেকৃত নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান একনাবিন এর সাময়িক অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানিটিতে প্রাথমিকভাবে উৎঘাটিত ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে- অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি রাজস্ব ফাঁকি/ বকেয়া এবং অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।  

একনাবিন ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল এই ৯ বছরের বিশেষ নিরীক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিল করে গেল সপ্তাহে। ৭৪ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র হাতে আসে।

এতে দেখা যায়, প্রতিবেদনটির ৭০টি অডিট আপত্তির সম্ভাব্য অনিয়মের ১ নং এ বলা হয়, পরিচালকরা নগদ লভ্যাংশ নিতে উইন্ডো ড্রেসিং করে ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ না করে লাইফ ফান্ড বাড়িয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ সংক্রান্ত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যের সঙ্গে কোম্পানির কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত তথ্য পরীক্ষা করে লাইফ ফান্ড বাড়ানোর এমন চিত্র পেয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান একনাবিন।

তবে আর্থিক ক্ষতির এমন চিত্রের কোনো বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি ৭৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে। আবার ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার মধ্যে কোন বছরে কত টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি কম দেখানো হয়েছে তারও কোন পরিসংখ্যান দেয়া হয় নাই।

একনাবিনের অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্টের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবির প্রভিশন করা হয়নি। অর্থাৎ গড়ে প্রতি বছর ২৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা দাবি বকেয়া রাখা হয়েছে। অথচ আর্থিক প্রতিবেদনে তা প্রভিশন রাখা হয়নি। এতে প্রতিবছর গড়ে ২৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা লাইফ ফান্ড বেড়েছে, সেই সাথে বেড়েছে সারপ্লাস।

তবে হাওলাদার ইউনুসের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা দাবি, মৃত্যুদাবি ও সারভাইবাল বেনিফিট, পলিসি বোনাস ও অন্যান্য সহ সর্বমোট ২৫৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা কম দেখানো হয়েছে। 

এর মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি কম দেখানো হয়েছে ২০১৫ সালে ১১১ কোটি ৬৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৯৯ টাকা, ২০১৬ সালে ১৩০ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ২৬৮ টাকা এবং ২০১৭ সালে ১১ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৯ টাকা।

আইন অনুসারে সারপ্লাস বা উদ্বৃত্ত অর্থের ৯০ শতাংশ মুনাফা হিসেবে পলিসি হোল্ডার বা কোম্পানির বীমা গ্রাহকদের মধ্যে বন্টন করা হয়। বাকি ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ট (লভ্যাংশ) হিসেবে বন্টন করা হয় শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে।

এই হিসেবে মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ না করে ডেল্টা লাইফ প্রতিবছর গড়ে ২৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা সারপ্লাস বৃদ্ধি করে থাকলে কোম্পানিটির শেয়ার হোল্ডাররা ১০ শতাংশ হিসেবে ডিভিডেন্ট বা লভ্যাংশ পেয়েছেন ২৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আর মোট শেয়ারের কমপক্ষে ৪০ শতাংশের মালিক ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ। এই হিসেবে পরিচালকরা পেয়েছেন মোট ডিভিডেন্টের ৪০ শতাংশ বা ১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ আলোচ্য ৯ বছরে পরিচালকরা নগদ ডিভিডেন্ট নিয়েছে ১০০ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

অপর দিকে সারপ্লাস বৃদ্ধির এই হিসাব ধরা হলে ডেল্টা লাইফের পলিসি হোল্ডার বা বীমা গ্রাহকরা সারপ্লাসের ৯০ শতাংশের অংশীদার হিসেবে প্রতিবছর গড়ে বোনাস পেয়েছেন ২৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিগত ৯ বছরে কোম্পানিটির বীমা গ্রাহকরা বোনাস পেয়েছেন ২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা।

একনাবিনের অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্টে মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ না করে লাইফ ফান্ড ও সারপ্লাস বৃদ্ধির কথা বলা হলেও  ডেল্টা লাইফের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ২০২১ সালের ৫ জুন পর্যন্ত ডেল্টা লাইফের কোনো বীমা দাবি বকেয়া নেই।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার পর ২০২১ সালের ৫ জুন পর্যন্ত সময়ে ২৬০ কোটি টাকার মৃত্যুদাবি, মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি ও অন্যান্য দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন যেসব বীমা দাবি বকেয়া ছিল তা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে কোন বকেয়া দাবি নেই।

তবে, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সাল পর্যন্ত ডেল্টা লাইফে ১৩৮ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি ও মৃত্যুদাবি দীর্ঘদিন বকেয়া রাখা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয় অভ্যন্তরীন নিরীক্ষার অন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদনে। অভ্যন্তরীন এ নিরীক্ষা করেন প্রথম প্রশাসক সুলতান-উল আবেদীন মোল্লা। ফলে ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা দাবি পরিশোধ না করে লাইফ ফান্ড ও সারপ্লাস বাড়িয়ে নগদ লভ্যাংশ নেয়ার মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির যে কথা বলা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ডেল্টা লাইফের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সাল শেষে কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে ৩ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হলে কোম্পানিতে ৪ হাজার ৩৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা সম্পদের হিসাবটি অস্বাভাবিক।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির মোট প্রিমিয়াম আয় ৩ হাজার ৮২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ সময়ে মোট দাবি পরিশোধ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩০ কোটি ২৯ লাখ টাকা, মোট ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। ২০১৮ সাল শেষে কোম্পানিটির মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। তবে ডেল্টা লাইফের ২০১৯ ও ২০২০ সালের কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নাই।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বীমা আইন ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুসারে ডেল্টা লাইফে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় হাওলাদার ইউনুস এন্ড কোং চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ফার্মকে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ প্রদান করে।

নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটি ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিষয়ে মোট ২৬টি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ফার্ম হাওলাদার ইউনুস এন্ড কোং।

প্রতিবেদনটির ৫৪ ও ৫৬ নং পৃষ্ঠার ৩(ই) ১ এর (II) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি, মৃত্যুদাবি, সারভাইবাল বেনিফিট, পলিসি বোনাস ও অন্যান্য সহ সর্বমোট ২৫৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা কম দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি কম দেখানো হয়েছে, ২৫৩ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ টাকা। মৃত্যুদাবি কম দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল ৩ বছরের কোম্পানির ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড তদন্ত করে বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করেন।

অপর দিকে ফেমস এন্ড আর চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ফার্মকে তদন্তের জন্য নিয়োগ দেয়া হয় ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি। বীমা আইন ২০১০ এর ৪৮ ধারা অনুসারে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ডেল্টা লাইফের অনিয়ম তদন্তে এ নিয়োগ দেয়া হয়। তবে ফেমস এন্ড আর এর বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা দাবি কম দেখিয়ে লাইফ ফান্ড বাড়ানোর কোনো তথ্য দেয়া হয় নাই।

ফেমস এন্ড আর তদন্ত প্রতিবেদনে ৯০ দিনের মধ্যে বীমা দাবি পরিশোধ না করার অভিযোগসহ ২৬টি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে।

এ বিষয়ে বীমা খাত সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। তবে আলাপকালে তারা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে তারা বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ না করে লাইফ ফান্ড বাড়িয়ে নগদ লভ্যাংশ নেয়া আর্থিক ক্ষতি। তবে ডেল্টা লাইফের যে এই বিপুল অংকের মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা দাবি পরিশোধ না করে লাইফ ফান্ড বাড়ানোর তথ্য দেয়া হচ্ছে তা অস্বাভাবিক। নগদ লভ্যাংশ নিতে এটি করা হলে এ বিপুল পরিমাণ মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবি অপরিশোধিত থাকার কথা। অপর দিকে প্রতি বছর বকেয়া দাবি যদি প্রভিশন করা না হয় তাহলে তা অনিয়ম হতে পারে।

তারা আরো বলেন, এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়ে থাকলে কোম্পানিটির সম্পদ বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। অথচ আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য সে কথা বলে না।  

তাদের মতে, দফায় দফায় নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে অস্বাভাবিক তথ্য দিলে তা গোটা বীমা খাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই বিষয়টির দ্রুত সুরাহার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বর্তমান প্রশাসক মো. কুদ্দুস খান ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। তাই এ বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবে। তাছাড়া আমি মাত্র কয়েকদিন হলো প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছি। তাই এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি কথা বলার বিষয় উল্লেখ করে মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।