বীমার প্রিমিয়াম আয়ে শীর্ষ দশে যেসব দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বজুড়ে বীমা খাতে মোট প্রিমিয়ামের ৭৯.৬ শতাংশ এসেছে ১০টি দেশ থেকে। যার মধ্যে একটি দেশের হাতেই রয়েছে বিশ্ব বাজারের ৩৯.৬ শতাংশ প্রিমিয়াম। ‘ওয়ার্ল্ড ইন্স্যুরেন্স: ইনফ্লেশন রিস্কস ফ্রন্ট এন্ড সেন্টার’ নামের সর্বশেষ সিগমা রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক পুনর্বীমা প্রতিষ্ঠান সুইস রি গত ১৩ জুলাই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

অঞ্চল ও দেশ ভিত্তিক প্রিমিয়াম আয়, জিডিপিতে বীমার অবদান, বীমার ঘনত্ব, বীমা বাজারের প্রবণতা, সামষ্টিক অর্থনীতি সূচক ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে বিশ্বব্যাপী বীমা বাজারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে সুইস রি’র এই প্রতিবেদনে। বিশ্বের ১৪৭টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করা হলেও প্রতিবেদনটিতে স্থান পেয়েছে ৮৮টি দেশ।

জেনে নেয়া যাক প্রিমিয়াম আয়ের শীর্ষ ১০ দেশ সম্পর্কে-

প্রিমিয়াম আয়ে বিশ্ব বীমা বাজারের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালে দেশটিতে সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৩৯.৬ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আগের বছরে দেশটিতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩৩১.৮ মিলিয়ন।

বিশ্ব বীমা বাজারে প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। গেলো বছর দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৬ লাখ ৯৬ হাজার ১২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছর ২০২০ সালে ছিল ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ১০.১ শতাংশ এসেছে এই চীন থেকে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪৪৪.৭ মিলিয়ন।

প্রিমিয়াম আয়ে বিশ্ব বীমা বাজারের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাপান। ২০২১ সালে দেশটিতে সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৫.৯ শতাংশ। ২০২০ সালে জাপানের মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৪ লাখ ১৪ হাজার ৪৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১২৬.০ মিলিয়ন।

বিশ্ব বীমা বাজারে যুক্তরাজ্যের অবস্থান ৪র্থ। দেশটিতে গেলো বছর ৩ লাখ ৯৯ হাজার ১৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে। যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৫.৮ শতাংশ। এর আগের বছরে দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬৭.১ মিলিয়ন।

প্রিমিয়াম আয়ে এ বছর এক ধাপ এগিয়ে ৫ম স্থানে উঠে এসেছে ফ্রান্স। দেশটিতে গেলো বছর ২ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব বীমা বাজারে সর্বশেষ বছরে দেশটির অবদান দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশ। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮৩.২ মিলিয়ন।

অন্যদিকে প্রিমিয়াম আয়ের র‌্যাংকিংয়ে এক ধাপ পিছিয়েছে জার্মানি। দেশটির বর্তমান অবস্থান ৬ষ্ঠ। গেলো বছর জার্মানির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ৪.০ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালে দেশটির প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার ৩২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮৩.২ মিলিয়ন।

বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ২.৮ শতাংশ আসে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে দেশটির অবস্থান ৭ম। ২০২১ সালে দেশটির লাইফ ও নন-লাইফ খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছরে ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৫১.৭ মিলিয়ন।

এ ছাড়াও প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে ৮ম অবস্থানে রয়েছে ইতালি। ২০২১ সালে দেশটির লাইফ ও নন-লাইফ খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগের বছরে ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের মোট প্রিমিয়ামের ২.৮ শতাংশ আসে এই ইতালি থেকে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৫৯.২ মিলিয়ন।

কানাডা প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বের ৯ম দেশ। আন্তর্জাতিক বীমা বাজারের ২.৪ শতাংশ প্রিমিয়াম এসেছে কানাডা থেকে। ২০২১ সালে দেশটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ৬১ হাজার ২৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০ সালে এই সংগ্রহ ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩৮.২ মিলিয়ন।

প্রিমিয়াম আয়ের দিক দিয়ে বিশ্ব বাজারে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। গেলো বছর এই অবস্থানে ছিল তাইওয়ান। ২০২১ সালে ভারতের বীমা খাতে মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব বাজারের ১.৯ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালে ভারতের মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৩৯৫.১ মিলিয়ন।