অনাবাসিক একচ্যুয়ারি নিয়োগ পাবেন কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: অনাবাসিক একচ্যুয়ারি নিয়োগের সুযোগ রেখে বীমাখাতে একচ্যুয়ারির যোগ্যতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে সরকার। তবে অনাবাসিক একচ্যুয়ারি নিয়োগের ক্ষেত্রে ইচ্ছামতো বিধি-নিষেধ আরোপ করবে কর্তৃপক্ষ। এমনই একটি খসড়া প্রবিধান করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । খুব শিগগিরই খসড়া প্রবিধানটি চূড়ান্ত করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
খসড়া প্রবিধানে একচ্যুয়ারির যোগ্যতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক যদি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে একচ্যুয়ারিগণের প্রতিষ্ঠান বা সমিতির সদস্য হন অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত অন্য যেকোন পেশাগত একচ্যুয়ারিয়াল সংস্থার সদস্য বা সংশ্লিষ্ট একচ্যুয়ারিয়াল বিষয়ে অন্যূন ৫ বছরের সহযোগীত্তোর অভিজ্ঞতাসহ উল্লেখিত যে কোন পেশাগত একচ্যুয়ারিয়াল সংস্থার একজন সহযোগী হন তাহলে তিনি একচ্যুয়ারি হতে পারবেন।
অনাবাসিক একচ্যুয়ারির বিষয়ে বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে আইনের অধীনে যে কোন বাধ্যবাধকতা পালনের নিমিত্তে একজন অনাবাসিক একচ্যুয়ারির সেবা গ্রহণ করতে অনুমতি দেয়ার জন্য বীমাকারী কর্তৃক কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করা হয়, সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শর্ত ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ সাপেক্ষে উক্তরূপ ব্যক্তিকে নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি হিসেবে স্বাক্ষর করার আবেদন মঞ্জুর করতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলাদেশে বীমা আইন, বিধিমালা ও প্রবিধানমালার উন্নয়ন সম্পর্কে সমসাময়িক সমস্ত তথ্যাদি সম্পর্কে সম্মুখ জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। কর্তৃপক্ষের স্বীয় বিবেচনায় কৃত প্রয়োজনীয় অনুরোধ বা অনুসন্ধানের জবাবদানে কর্তৃপক্ষের অফিসে উপস্থিত হতে সমর্থ হবে এবং বীমাকারীর পরিচালকবৃন্দের পর্ষদ কর্তৃক কোন অনুসন্ধানের জবাবদানে উক্ত পর্ষদের সম্মুখে নিজেকে প্রাপ্তিসাধ্য করতে হবে।
এ ছাড়াও একজন নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি হিসেবে দয়িত্ব পালনে শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম হতে হবে। তিনি কোন বীমাকারীর উদ্যোক্তা বা শেয়ার হোল্ডার পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরিচালক বা মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নন, কোন ঋণ বা কর খেলাপী নন, রাষ্ট্রীয় কোন শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত নন, দেশের কোন আদালতে কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হবেন না। উপ-প্রবিধান (১) ও (২) এর অধীন যোগ্যতা থাকা ব্যতিরেকে একচ্যুয়ারি হিসেবে কাজের অনুমোদন পাবেন না।
একচ্যুয়ারির ক্ষমতা সম্পর্কে খসড়া প্রবিধানে বলা হয়েছে, বীমাকারীর তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত থাকা যাবতীয় তথ্য বা দলিলাদিতে একজন একচ্যুয়ারির প্রবেশাধিকার থাকবে, যদি উক্তরূপ তথ্য নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারির দায়িত্ব ও কার্যাবলী যথাযথ ও কার্যকররূপে সম্পাদনে প্রয়োজনীয় হয়।
উপ-প্রবিধান (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বীমাকারী কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট হতে নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি যে কোন তথ্য দাবি করতে পারবে। নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি বীমাকারীকে অবশ্যই নিশ্চয়তা প্রদান করবে যে, যখন প্রয়োজন হয়, বীমাকারীর পরিচালকবৃন্দের পর্ষদের সভাসহ ব্যবস্থাপনার সকল সভায় উপস্থিত হবেন এবং বিধিমালায় নির্ধারিত যে কোন বিষয়ের ওপর বক্তব্য ও আলোচনা করবেন।
একচ্যুয়ারির দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পকে প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, বীমাকারীর ব্যবস্থাপনায় বিশেষত পণ্য নকশা ও মূল্য নির্ধারণী, বীমাচুক্তির শব্দ নির্বাচন, বিনিয়োগ, অঙ্গীকার, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বীমা খাতে একচ্যুয়ারিয়াল সেবা প্রদান করা। সর্বসময়ে বীমাকারীর সলভেন্সি নিশ্চিত করা। আইনের কোন লঙ্ঘন বা পলিসি গ্রাহকগণের স্বার্থে কোন ক্ষতিসাধনের ঝুঁকি এড়াতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করা।
সময়ে সময়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পরিচালনে বীমাকারীর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করা। বীমাকারী ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত অনুরূপ অন্যান্য দায়িত্ব, বীমাকারীর লাইফ বীমা ব্যবসা পরিচালায় প্রত্যেক পঞ্জিকা বছরের সমাপ্তিতে দায়ের মূল্যায়নসহ একজন লাইফ বীমাকারীর আর্থিক অবস্থঅ তদন্ত করা। লাইফ বীমাকারী কর্তৃক ইস্যুকৃত পণ্যের হার, সুবিধা ও শর্ত সুষ্ঠ এবং কার্যকর করার বিষয়ে প্রত্যয়ন করা ইত্যাদি বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবেন একচ্যুয়ারি।
এক্ষেত্রে নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি হিসাব কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কোন বিবৃতি, লিখিত বা মৌখিক প্রদানের একজন নিয়োগকৃত একচ্যুয়ারি পদাধিকার বলে ব্যক্তিগত পরম বিশেষ সুবিধা বা অধিকার ভোগ করবে বলেও খসড়া প্রবিধানে উল্লেখ করা হয়েছে।