বিলম্বে দাবি পরিশোধ

গ্রাহককে কোনো সুদ দিচ্ছে না প্রাইম ইসলামী লাইফ

আবদুর রহমান:

মেয়াদ শেষ হলেও সময়মতো গ্রাহককে দাবির টাকা দিচ্ছে না প্রাইম ইসলামী লাইফ। মেয়াদ শেষের পর নানা অজুহাতে বছর পার করে দেয়া হচ্ছে বীমা দাবি। দেরিতে দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্রাহককে কোনো সুদও দিচ্ছে না কোম্পানিটি। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাহকরা। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে এ সুযোগ নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দাবি পরিশোধে কোম্পানির এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কোম্পানির দাবি তারা সময়মতই দাবি পরিশোধ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের প্রিমিয়াম বাবদ জমা করা টাকা থেকে চলছে কোম্পানির যাবতীয় খরচ। মোটা অংকের বেতন ভাতা নিচ্ছেন কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ব্যবহার করছেন দামি গাড়িও। এসব খরচ মেটাতে নানা অজুহাতে কোটি কোটি টাকা ব্যবস্থাপনাখাতে অতিরিক্ত খরচও করছে কোম্পানিটি।

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’র কাছে এক গ্রাহকের ই-মেইল বার্তায় পাঠানো অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের ৭২ গ্রাহকের পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও গত এক বছরেও তাদের টাকা দেয়নি প্রাইম ইসলামী লাইফ।

সম্প্রতি কিছু সংখ্যক গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করা হলেও বিলম্বে পরিশোধ করা জন্য তাদের কোনো সুদ দেয়া হয়নি। অন্যদিকে পলিসির করার সময় দ্বিগুণ মুনাফার আশ্বাস দেয়া হলেও মেয়াদ শেষে তেমন কোনো মুনাফা দিচ্ছে না কোম্পানিটি। এতে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে এসব গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রাহকরা কোম্পানির কাছে বারবার ধরণা দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

নাটোরের বাহাদুরপুর গ্রামের মো. রকিব হাসান ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’র কাছে অভিযোগ করেন, পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণের ১ বছর পরও তিনি চেক পাননি। প্রাইম ইসলামী লাইফে তার পলিসি নম্বর ০০২৬০০৩৭৪৫-২। ১০ বছর মেয়াদী ১২ হাজার টাকা বীমা অংকের তার পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। মেয়াদ শেষে তিনি পাশবই, রসিদ, বয়স প্রমাণ, আবেদনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন একই বছরের ২৭ মার্চ। ৬ মাস পর ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি  নির্বাহী রশিদ পেয়েছেন। নির্বাহী রশিদ পুরণ করে ব্যাংক স্লিপসহ ৯ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখনও তিনি চেক পাননি। 

প্রাইম ইসলামী লাইফের বড়াইগ্রামের গ্রাহক হাফিজুর রহমান। তার পলিসি নম্বর ০০২৬০০৩৮৬০-৮। তিনি ১০ বছর মেয়াদী ১২ হাজার টাকা বীমা অংকের একটি পলিসি গ্রহণ করেন। অন্যের জমিতে কাজ করে ৩ ছেলেসহ ৫ সদস্যের সংসার চালান হাফিজ। এর মধ্যেই সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করেছেন তিনি। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। সকল কাগজপত্র জমা দেয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মেয়াদপূর্তির টাকা পেয়েছেন।

হাফিজুর রহমান বলেন, দ্বিগুণ লভ্যাংশ দেয়ার কথা বলে বীমা করানো হলেও মেয়াদ শেষে তাকে মাত্র ১৫ হাজার ৩৮৫ টাকা দিয়েছে। তাও আবার দীর্ঘ এক বছর পর। ১০ বছরে ১২ হাজার টাকা জমিয়ে মুনাফা এসেছে ৩ হাজার ৩৮৫ টাকা। নির্ধারিত সময়ের পর বীমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদসহ প্রদানের নিয়ম থাকলেও তা দেয়া হয়নি বলে জানান হাফিজুর রহমান।

নাটোরের গুরদাসপুর থানার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াপদা বাজারের বাসিন্দা আবদুল হাকিম। প্রাইম ইসলামী লাইফে তার পলিসি নম্বর ০০২৬০০৫২৬৩-২। জানান, ভাই-বোনসহ তারা ৭ জন বীমা করেছেন ওই কোম্পানিতে। এরমধ্যে দু’জনের টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তার নিজের পলিসিসহ ৫ জনের পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর বছর পার হয়ে গেলেও তারা এখনো চেক পাননি।

কামিল পাস করা আবদুল হাকিম জানান, চন্দ্রপুরে বাস করলেও জন্মস্থান তার সিরাজগঞ্জের চৌহালিতে। নদীভাঙনে সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নাটোরের চন্দ্রপুর অবদা বাজারে। বর্তমানে তিনি এলোপ্যাথিক ওষুধ বিক্রি করে কোন মতে সংসার চালান। এ অবস্থায় তার বন্ধু শফিকুল ইসলাম মানিক প্রাইম ইসলামী লাইফে পলিসিটি করিয়েছেন। ইসলামী শরীয়ত সম্মত বলে তিনিও পলিসিটি কেনেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে বছর পার হলেও টাকা পাচ্ছেন না।

একই অবস্থার তার ভাই আনোয়ার হোসেন, বোন আসিয়া বেগম, ভাবী মোছা. শেফালী বেগম ও ভাতিজী মোছা. বেলি বেগমের পলিসির। তাদের সবার পলিসি প্রায় একই সময়ে করা হয়েছে। মেয়াদ শেষও হয়েছে একই সঙ্গে। কিন্তু এখনো তারা বীমার টাকা পাননি। ৪ জনের নির্বাহী রশিদ পেলেও বাকী রয়েছে ভাই আনোয়ারের। তিনি এখনো নির্বাহী রশিদ হাতে পাননি। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। ২৪ হাজার টাকা বীমা অংকের পলিসিটির নম্বর ০০২৬০০৩৬৪২-৩। 

বেলি বেগমের পলিসি নম্বর ০০২৬০০৩৭৬৩-৬। ২৪ হাজার টাকা বীমা অংকের এই পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬-তে। নির্বাহী রশিদ পাঠিয়েছেন ২৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে। এখন চেকের অপেক্ষায় আছেন বেলি বেগম। একই দিনে পলিসি করেছেন আসিয়া বেগম। যার পলিসি নম্বর ০০৬০০৩৬৪১-০। তার পলিসি অবস্থাও একই। শেফালী বেগমের পলিসি নম্বর ০০২৬০০৩৬৪৩-৯। ২৪ হাজার টাকা বীমা অংকর এই পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তে। মেয়াদ শেষে ১০ মাস পর পেয়েছেন নির্বাহী রশিদ। সকল কিছু ঠিক থাকার পরও বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু চেক পাননি শেফালি বেগম। কবে পাবেন তাদের বীমার টাকা, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানায়নি প্রাইম ইসলামী লাইফ।

বড়াইগ্রাম উপজেলার পুজাইল গ্রামের মোছা. রিক্তা গোলাপ জানান, বাবা, মা, বোন ও ফুপুসহ তারা ৫ জন প্রাইম ইসলামী লাইফে বীমা করেছেন। প্রায় একই দিনে সবার পলিসি করা হয়েছে। রিক্তা (পলিসি নম্বর- ০০২৬০০৪৯৪১-৬) ও তার বোন নার্গিস পারভীনের বীমা অংক ৬০ হাজার টাকা করে। বাবা আবদুস সাত্তার ও মা হাসিনা বেগমের (পলিসি নম্বর- ০০২৬০০৪৪১০-৬) বীমা অংক ২৪ হাজার টাকা করে এবং ফুপু সামেনা খাতুনের বীমা অংক ১২ হাজার টাকা।

রিক্তা গোলাপ জানান, গত বছরের ২৮ মার্চ তার পলিসির মেয়াদপূর্ণ হয়েছে। তবে এক বছর হয়ে গেলেও তিনি বীমার টাকা পাননি। ডিগ্রিতে পড়া অবস্থায় মৌখাড়া গার্লস স্কুলের স্যার ইয়াকুব তাদের বীমা করান। বর্তমানে দুই মেয়ে নিয়ে তার স্বামীর সংসার। থাকেন নাটোরের সিংগ্রায়। পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয় বীমা অফিসে যোগাযোগ করেছেন। তার সকল কাগজপত্র জমা নেয়ার পর অফিস থেকে বলা হয়েছে তাড়াতাড়িই বীমার টাকা পাবেন। তবে বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তিনি টাকা পাননি।

একই অবস্থা তার বাবা, মা ও বোনের পলিসির ক্ষেত্রে। একই দিনে তাদের পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখনো তারা টাকা পাচ্ছেন না। তবে ফুপু সামেনা খাতুনের বীমা অংকের মেয়াদ শেষ হয়েছে এ মাসেই। তিনি জানান, ১ হাজার ৭শ' টাকা বাকী ছিল। গত মাসে কাগজপত্রসহ সব টাকা দেয়া হয়েছে। সামেনার পলিসির ব্যাপারে কোম্পানিটির বিসি ইয়াকুব জানান, গত মাসে তার পলিসি মেয়াদ শেষ হয়েছে। সব কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এ মাসেই তার কাগজপত্র প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

বড়াইগ্রামের কৃষক আবদুর রউফ প্রাইম ইসলামী লাইফ থেকে ১০ বছর মেয়াদী ১২ হাজার টাকা বীমা অংকের একটি পলিসি কিনেছেন। অনেক কষ্টে সবগুলো কিস্তি পরিশোধের পর ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। কিছু দিন আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরও নিয়েছে কোম্পানি। কিন্তু মেয়াদ পূর্তির প্রায় এক বছর হলেও তিনি চেক বা টাকা পাননি।

আবদুর রউফ বলেন, ইসলামী নাম দেখে বীমা করলাম, যাতে ভালো কিছু করতে পারি। প্রথমে অল্প টাকা দিয়ে বীমা করার অভ্যাস করতে চেয়েছিলাম, পরে বেশি টাকা জমানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এখন তারা এলোমেলো করছে। প্রায় ১ বছর হলেও তারা টাকা দিচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ৫ সদস্যের তার পরিবার। টাকার অভাবে বড় ছেলের পড়ালেখা বন্ধ করে কাজে নামিয়েছেন। ছোট ছেলে ক্লাস ফাইভ-এ পড়ে। মেয়েটাকেও স্কুলে ভর্তি করেছেন। তবে ঠিক মতো তাদের খরচ যোগাতে পারছেন না। এসময় বীমা টাকাগুলো পেলে কিছুটা হলেও তার উপকারে আসবে বলে জানান আবদুর রউফ।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বড়াইগ্রাম থানার মৌখাড়া রিজিওনাল অফিসের ইনচার্জ (আরসি) নজরুল ইসলাম ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, সাধারণত পলিসির মেয়াদপূর্তির সপ্তাহখানিকের মধ্যেই আমরা প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেই। এরপরও কোন কাগজপত্র প্রয়োজন হলে বা কোন ভুল হলে যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করে দেই। এক্ষেত্রে সপ্তাহের বেশি সময় লাগে না বরং আরো কম সময়ের মধ্যে আমরা তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করি। তার পরও দাবি পরিশোধে বছর পার হয়ে যায়।

বিলম্বে দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদসহ প্রদান করা হয় কিনা এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম বলেন, সুদ তো দূরের কথা অনেক সময় মূল লাভেও কম দেয়। মেয়াদপূর্তির পর কোন কারণে বকেয়া কিস্তি পরিশোধ করা হলে সেটার কোন লাভ তো দেয়ই না এমনকি সেটাকে মূল কিস্তির মধ্যে গণ্যও করে না।

তিনি বলেন, নির্বাহী রশিদ প্রদানের পর আর কোন চাহিদা থাকে না কোম্পানির। কারণ, নির্বাহী রশিদ প্রদান করার অর্থই হলো দাবি পরিশোধের সকল শর্ত পূর্ণ করা হয়েছে। নির্বাহী রশিদ প্রদানের পরও দাবি পরিশোধে মাসের পর মাস বিলম্ব করা হয়। কিন্তু কেন তা করা হয় আমাদের জানা নেই। তবে মাসে দু’একবার আমাদের শুনতে হয় যে, কোম্পানির ফান্ড সঙ্কট যাচ্ছে তাই দাবি পরিশোধে দেরি হচ্ছে।

মৌখাড়া রিজিওনাল অফিসের বিসি (ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর) ইয়াকুব আলী ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে জানান, মেয়াদপূর্তি হওয়া সকল গ্রাহকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কোম্পানি যখন যে কাগজ চায় আমরা তা সরবরাহ করি। কিন্তু এরপরও গ্রাহকদের দাবি সময়মতো পরিশোধ করা হচ্ছে না। প্রধান কার্যালয়ে হিসাব বিভাগসহ যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন তাও করে থাকি। কয়েক দিন আগেও প্রধান কার্যালয়ে স্বশরীরে যোগাযোগ করেছি। প্রধান কার্যালয় থেকে বলা হচ্ছে ফান্ড সঙ্কটের কারণে সময় মতো দাবি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। কোম্পানি হাতে যখন অর্থ আসে তখন কিছু কিছু করে দাবি পরিশোধ করা হয়।

এ বিষয়ে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলমগীর হোসেন ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে জানান, বেশিরভাগ দাবি হিসাব বিভাগে আটকে আছে। সেখান থেকে চেক ইস্যু করার কথা। তবে কেন আটকে আছে সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা না বলে জানানো যাচ্ছে না। বিলম্বে দাবি পরিশোধে সুদ প্রদান করা হয় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সফটওয়ারে যা আছে সেভাবেই দাবি পরিশোধ করা হয়। বিলম্বে সুদ প্রদানের বিষয়ে আমার জানা নেই। আইটি বা অ্যাকচ্যুয়ারিয়াল ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে বলতে পারবে।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম এফসিএ ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, গ্রাহকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হলে দাবি পরিশোধে কখনো দেরি করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রাহকের প্রয়োজনীয় তথ্য যথাযথভাবে উপস্থাপন না করার কারণে দাবি পরিশোধে দেরি হয়। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনায় যেটুকু সময় অতিবাহিত হয়, সেটুকুই বিলম্ব হয় দাবি পরিশোধে।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, একজন গ্রাহক সব কাগজপত্র জমা দিয়েছে কিন্তু তার নামে বা স্বাক্ষরে মিল নেই। তখন আবার সেই ভুল সংশোধন করতে বলা হয়, যার জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বীমা বিষয়ে ভালো জানে না উল্লেখ করে বলেন, সব কিছু ঠিকমতো জমা দেয়া হয়েছে দাবি করলেও অনেক সমস্যা থেকেই যায়। যার কারণে দাবি পরিশোধে দেরি হয়।

বিলম্বে দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদসহ প্রদান করা হয় কিনা এমন প্রশ্নে প্রাইম ইসলামী লাইফের এই মূখ্য নির্বাহী বলেন, আমরা দাবি পরিশোধে কোন বিলম্ব করি না। তাই সুদ প্রদানের প্রয়োজন নেই। তাছাড়া যখন একটা পলিসির নির্বাহী রশিদ প্রদান করা হয় তখন কম্পিউটারে ওই পলিসির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে সুদ হিসাবের কোন প্রশ্ন থাকে না। আমরা মানুষের সেবার জন্য এখানে এসেছি, কাউকে ভোগান্তি দেয়ার জন্য নয়, দাবি করেন শাহ আলম।

উল্লেখ্য, বীমা আইন ২০১০ এর ৭২ ধারায় বলা হয়েছে মেয়াদ শেষের ৯০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ করতে হবে। এতে দেরি হলে প্রচলিত ব্যাংক রেটের অতিরিক্ত শতকরা ৫ ভাগ হিসেবে মাসিক ভিত্তিতে সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।