শস্য বীমার আওতায় ৩ জেলার ৫৩৯৯ কৃষক
আরেফিন ফয়সাল: জলবায়ু ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় আর্থিক ক্ষতিপূরণের আওতায় শস্য বীমার আবরণে আনা হচ্ছে ৩ জেলা।খরাপ্রবন অঞ্চল রাজশাহী, বন্যাপ্রবন অঞ্চল সিরাজগন্জ এবং সাইক্লোনপ্রবন অঞ্চল নোয়াখালীকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচন করে ৫৩৯৯ জন কৃষককে এ বীমা সুরক্ষার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি নন-লাইফ বীমাকারী সাধারণ বীমা করপোরেশন।
বুধবার সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি) আয়োজিত 'ড্রাফট রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক ফর ওয়েদার ইনডেক্স বেইজড ক্রপ ইন্স্যুরেন্স' শীর্ষক ওয়ার্কশপে এ তথ্য জানানো হয়।
ওয়র্কশপে উপস্থাপিত পত্রে জানানো হয়, প্রতিবছর অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি হ্রাস ও তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে শস্যবীমা প্রকল্পের টিপিপি অনুমোদন করা হয় ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ওই বছরই ২৫ মার্চ গ্রান্ট চুক্তি স্বাক্ষর এবং জুলাই ২০১৩ হতে জুন ২০১৭পর্যন্ত প্রকল্পের সংশোধিত বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) পক্ষ থেকে।
প্রকল্প এলাকায় এ পর্যন্ত ৪টি পাইলটিং এর মাধ্যমে ৬ হাজার ৭৭২ জন কৃষকের কাছে শস্য বীমা পলিসি ইস্যু করেছে সাধারণ বীমা। অন্যদিকে ৩টি পাইলটিং এর আওতায় ১৭ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬৪ টাকা বীমা দাবী পরিশোধ করা হয়েছে।
প্রথম পাইলটিং এর আওতায় পরিক্ষামূলক ভাবে খরা ঝুঁকি আবরিত ২০০ বিঘা জমিতে ১৬৫ টি পলিসি ইস্যু করা হয় রাজশাহী জেলার পবা উপজেলায়।, অতিবৃষ্টি ও রোগের ঝুঁকি আবরিত পবা ও তানোর উপজেলায় ২য় পাইলটিং হিসাবে ৬৩.৫০ বিঘা জমির অনুকূলে পলিসি ইস্যু করা হয় ১৬৭ টি। ৩য় পাইলটিং এর আওতায় ৪৮৩৫.৫০ বিঘা জমিতে আমন ধানের ৫০৬৭টি,পলিসি ইস্যু করা হয় অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি বন্যা ঝুঁকি অবারিত রাজশাহী ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন ইপজেলায়।রাজশাহী, সিরাজগন্জ ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪র্থ পাইলটিং এর আওতায় বোরো ধানের অনুকূলে ১,৩৭৩টি আবহাওয়া সূচক ভিত্তিক শস্য বীমা পলিসি ইস্যু করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত প্রকল্প এলাকায় ৩টি পাইলটিং এর আওতায় ১৭ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬৪ টাকা বীমা দাবী পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানায় সাধারণ বীমা।
১ম পাইলটিংয়ে বিঘা প্রতি ১০০ টাকা হারে প্রিমিয়াম অর্জিত হয়েছে ২০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি দাবী হিসাবে পরিশোধ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৪০০ টাকা। ২য় পাইলটিংয়ে প্রিমিয়াম আদায় হয়েছে ১০০০ টাকা হারে ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যদিকে দাবী পরিশোধ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭৫০ টাকা। ৩য় পাইলটিংয়ে প্রিমিয়াম আদায় হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৭৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং দাবী পরিশোধ করা হয়েছে ১৬ লাখ ৯৩ হাজার ৪১৪ টাকা। ৪র্থ পাইলটিংয়ে প্রিমিয়াম অর্জিত হয়েছে ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৪৭৫ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ৫৩৮টি এফজিডি এবং ট্রেনিং এর মাধ্যমে ১০ হাজার ২৭ জন কৃষককে এ সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে । আবশিষ্ঠ ১ হাজার ৯৯৩ জনকে এপ্রিল ২০১৭ এর মধ্যে দূর্যোগ সম্পর্কিত বিষয়ে সচেতন করার কাজ চলছে।
এ ছাড়া স্টেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানের ৪০০ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে সরকার (জিওবি) ও এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক। প্রকল্পেরে মোট ব্যয় ২১ কোটি ৩৪ লাখ ২১ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে জিওবি দিয়েছে ৪৯ কোটি ৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ১৬ কোটি ৩৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।