কর্মকর্তাদের বেতন কমলেও সিইও’র বেড়েছে ১৩৮%
নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যবসা বেড়েছে সামান্যই, কমেছে বিনিয়োগ। লোকসান করেছে শেয়ার বাজারেও। এ অবস্থায় কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন-ভাতা কমলেও বেড়েছে মূখ্য নির্বাহীর। এ বৃদ্ধির হার ১৩৮ শতাংশ। প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মদী খানমের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির এ চিত্র উঠে এসেছে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র অনুসন্ধানে।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৪ বছরে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ২৪ শতাংশ। তবে বিনিয়োগ কমে গেছে ৫৩ শতাংশ। এ সময়ে কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন-ভাতা ৭ শতাংশ কমে গেছে।
তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালে মোহম্মদী খানম মোট বেতন নেন ৪৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭০৫ টাকা। যা প্রতি মাসে গড়ে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৯ টাকা। ২০১৮ সালে এসে তিনি বেতন নিয়েছেন ১ কোটি ৩ লাখ ৮৬ হাজার ১৫৮ টাকা। যা গড়ে প্রতি মাসে ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫১৩ টাকা। এই হিসেবে ৪ বছরে ব্যবধানে এই মূখ্য নির্বাহীর বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ লাখ ২ হাজার ২০৪ টাকা বা ১৩৮ শতাংশ।
পর্যালোচনায় আরো দেখা যায়, ২০১৫ সালে বেতন-ভাতা বাবদ মোহাম্মদী খানম তুলে নিয়েছেন ৬৪ লাখ টাকা। এ অনুযায়ী তার মাসিক বেতন-ভাতা ছিল ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৪ টাকা। আগের বছরের তুলনায় ২০১৫ সালে তার বেতন বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৪ টাকা বা ৪৭ শতাংশ।
২০১৬ সালে মোহাম্মদী খানমের বেতন-ভাতার পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ টাকা। এ হিসাবে তার মাসিক বেতন-ভাতা ছিল ৬ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের তুলনায় আলোচ্য বছরে মোহাম্মদী খানমের বেতন বেড়েছে ৬৬ হাজার ৬৬৬ টাকা বা ১৩ শতাংশ।
আর ২০১৭ সালে বেতন-ভাতা বাবদ মোহাম্মদী খানম তুলে নিয়েছেন ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫০ টাকা। এ অনুযায়ী মাসিক বেতন ছিল ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৪ টাকা। আগের বছরের তুলনায় ২০১৭ সালে তার বেতন-ভাতা বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৪ টাকা বা ৩০ শতাংশ।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতার পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৩ টাকা। যা ২০১৮ সালে কমে দাঁড়ায় ৮ কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার ২৫৮ টাকা। অর্থাৎ ৪ বছরের ব্যবধানে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমেছে ৬৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৭৫ টাকা বা ৭ শতাংশ।
২০১৫ সালে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের খরচ হয় ৯ কোটি ৭ লাখ ২৯ হাজার ৪৯ টাকা। যা ২০১৬ সালে কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৯ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমে যায় ১ কোটি ৮ লাখ ৬২ হাজার ৬৬০ টাকা বা ১২ শতাংশ।
তবে ২০১৭ সালে কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা সামান্য বেড়েছে। আলোচ্য বছরে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা ছিল ৮ কোটি ৯২ লাখ ৪১ হাজার ৯২৭ টাকা। যা ২০১৬ সালের চেয়ে ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৮ টাকা বা ১২ শতাংশ।
এদিকে, ২০১৪ সালে এ কোম্পানির গ্রস প্রিমিয়াম আয় দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে এসে তা দাড়ায় ৬৮ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ হিসাবে ৪ বছরের ব্যবধানে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের গ্রস প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা বা ২৪ শতাংশ।
কোম্পানিটির গ্রস প্রিমিয়াম আয় ২০১৫ সালে ৫৭ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০১৬ সালে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা, ২০১৭ সালে ৬৬ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০১৮ সালেই এফডিআর কমে গেছে ৮ কোটি টাকা। আর ৪ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিনিয়োগ কমেছে ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকা বা ৫৩ শতাংশ। ২০১৪ সালে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের বিনিয়োগ ছিল ৮৫ কোটি ৮৬ লাখ, যা ২০১৮ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদী খানমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।