বঙ্গবন্ধু বীমা কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন
আবদুর রহমান আবির: হাজার বছরের শেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীমা পেশায় ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানে আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। সেই সময়ে তিনি মাসে বেতন পেতেন প্রায় ২ হাজার টাকা।
এমনটাই তথ্য দেয়া হয়েছে “আমি সিরাজুল আলম খান” নামক বইয়ের ৪৫ নং পৃষ্ঠায়। বইটির লেখক শামসুদ্দিন পেয়ারা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বইটি প্রকাশ করে মাওলা ব্রাদার্স। বইটি মূলত একটি রাজনৈতিক জীবনালেখ্য।
বইটিতে আরো বলা হয়েছে, আলফা ইন্স্যুরেন্সের মালিক ছিলেন পাকিস্তানের এক অতি ধনাঢ্য ব্যক্তি ও প্রখ্যাত শিল্পপতি ইউসুফ হারুন। জিন্নাহ এভিনিউয়ে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) ভাম এন্ড কোম্পানির পাশের বিল্ডিং এর দোতলায় ছিল আলফা ইন্স্যুরেন্সের অফিস।
বঙ্গবন্ধুর বীমা পেশায় থাকার বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আনেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত শস্য ও ক্ষুদ্রবীমা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু বীমা কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
বীমা পেশাজীবীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এক সময়ে বীমা পেশায় ছিলেন এটা আমাদের গর্ব। তাকে আমরা প্রেরণার উৎস মনে করি। আমরা তার প্রেরণা নিয়ে সামনে এগুতে চাই। তার বীমা খাতের উন্নয়নে আমাদের সবাইকে আরো আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল এম এ নাসের বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীমা পেশায় কাজ করেছেন এটা আমাদের জন্য প্রেরণা। তাই যখনই তার কথা আলোচনায় আসে তখন আমাদের মধ্যে প্রেরণা জাগে। বীমা খাতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরো বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্য পেশায় কাজ করেছেন কিনা তা জানা নেই, তবে বীমা পেশায় তার কাজ করার বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ জন্য তাকে আমাদের অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। আরো আন্তরিকতা নিয়ে বীমা খাতের উন্নয়নে আমাদের কাজ করতে হবে।
গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা চৌধুরী ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, বঙ্গবন্ধু বীমা পেশায় ছিলেন, কাজ করেছেন। এতে আমরা গর্ববোধ করি। বিভিন্ন সময় আমি তার শোক সভায় বলে থাকি- বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। মাথা উচু করে চলাও শিখিয়েছেন।
ফারজানা চৌধুরী আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের প্রেরণা। তার শিক্ষা মাথায় নিয়ে আমাদের বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। বীমা খাতে আমরা কমপ্লায়েন্ট হবো। তাহলেই তার আত্মা শান্তি পাবে।
এ বিষয়ে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, হাজার বছরের শেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীমা খাতে কাজ করেছেন। তিনি বীমা পরিবারেরই সদস্য। এটা আমাদের জন্য গর্ব ও আনন্দের বিষয়।
স্বাধীনতার পরে ৪৯টি বীমা কোম্পানিকে জাতীয়করণ করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু সাধারণ বীমা করপোরেশনে (এসবিসি) বসতেন। আমিও সাধারণ বীমা করপোরেশনে কাজ করেছি। এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধু যে চেয়ার টেবিল ব্যবহার করতেন সেটা এখন সংরক্ষিত আছে।
সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আহসানুল ইসলাম টিটু ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, বঙ্গবন্ধু বীমা পেশায় কাজ করার বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই আমাদের জানিয়েছেন। যেহেতু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ পেশায় ছিলেন এতে আমরা অবশ্যই গর্বিত।
আমি মনে করি গার্বিত হওয়ার সাথে সাথে আমাদের দায়িত্বশীলতার যায়গাটাও অনেক বেশি অনুধাবন করা উচিত। তার যে পেশা ছিল সেটাকে আরো সামনে দিকে এগিয়ে নিতে হবে। জনগণের উপলব্ধির উন্নয়ন করতে হবে যে, আমরা তার কাজটাই করছি এবং এই পেশায় আছি।
আইডিআরএ’র সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, হাজার বছরের শেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সময়ে যে পেশায় ছিলেন আজ আমি সে পেশাজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার একজন সদস্য- এটা আমার জন্য গর্বের। তার জন্ম না হলে দেশ স্বাধীন হতো না।
তিনি আরো বলেন, আজ আমি বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার একজন সদস্য, আমি কিন্তু তা হতে পারতাম না। এটা যে কত বড় একটি বিষয় তা আমাদের ভাবতে হবে। তার আদর্শের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার আদর্শকে ভালোবেশে আমাদের বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু বীমা পেশায় কাজ করার বিষয়ে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)’র প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, এরইমধ্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি। একটি রেকর্ড পাওয়া গেছে, সেটা আমরা বের করবো।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত সালে এবং কত তারিখে বীমা পেশায় যোগদান করেছিলেন সেটা আমরা জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করবো। আমি আজকে যে ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এটা আমার জন্য একটা গর্বের বিষয়।