গ্রাহক স্বার্থে ৭৬ নং সার্কুলার

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’র সংবাদগুলো আমলে নিয়েছে আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে দেশে চলমান সাধারণ ছুটিতে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা দাবিসহ বিভিন্ন বীমা দাবি নিষ্পত্তির বিষয়ে সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। একইসঙ্গে লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে সমস্যা হওয়ায় গ্রেইস পিরিয়ড বাড়ানো এবং প্রিমিয়াম ছাড়াই মটর বীমার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়েও সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়াও গ্রাহকদের প্রয়োজনের সময় বীমা কোম্পানির অফিস বন্ধ এবং বীমা কর্মীদের আর্থিক সংকটের বিষয়টিও তুলে ধরা হয় দেশের জনপ্রিয় এই পোর্টালে।

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’তে প্রকাশিত এসব সংবাদ আমলে নিয়ে বীমা শিল্প ও গ্রাহকদের স্বার্থে গত ১৯ এপ্রিল রোববার সার্কুলার নং ৭৬/২০২০ জারি করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । ওই সার্কুলারে লাইফ বীমায় মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসিসমূহের বিপরীতে প্রাপ্য দাবি ৯০ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে প্রিমিয়াম জমা দেয়ার অতিরিক্ত সময় (গ্রেইস পিরিয়ড) আরো ৪৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও বীমা গ্রাহকদের সহায়তায় বিনামূল্যে অতিরিক্ত ৪৫ দিন মটর বীমা কভারেজ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইডিআরএ।

গ্রাহকের আবেদন ছাড়াই ৩০ দিনের মধ্যে বীমা দাবি পরিশোধের নির্দেশ:

লাইফ বীমায় মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসিসমূহের বিপরীতে প্রাপ্য দাবি ৯০ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । ১৯ এপ্রিল রোববার নিয়ন্ত্রক সংস্থার জারিকৃত ৭৬/২০২০ নং সার্কুলারে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থসংকটে বীমা গ্রাহকদের সহযোগিতা করার স্বার্থে এই নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বিষয়টি নিয়ে ‘বীমা কোম্পানির অফিস বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাহক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। ১৯ এপ্রিল প্রকাশিত ওই সংবাদে তুলে ধরা হয়- হাজার হাজার বীমা গ্রাহক রয়েছেন যারা বিপদের এই সময়ে পাশে পাচ্ছেন না তাদের বীমা কোম্পানিকে। মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা দাবি, সার্ভাইভাল বেনিফিট, বীমা পলিসির বিপরীতে ঋণ ও মৃত্যুদাবিসহ বিভিন্ন বীমা দাবি নিষ্পত্তির কার্যক্রম এখন আটকে গেছে। অফিস বন্ধ থাকায় এসব বীমা দাবি পরিশোধ করতে পারছে না বীমা কোম্পানিগুলো। যার ভুক্তভোগী এখন হাজার হাজার বীমা গ্রাহকরা।

প্রিমিয়াম জমা দেয়ার সময় বাড়লো আরো ৪৫ দিন:

লাইফ বীমায় প্রিমিয়াম জমা দেয়ার অতিরিক্ত সময় (গ্রেইস পিরিয়ড) আরো ৪৫ দিন বাড়িয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । গত ২৫ মার্চ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে যেসব বীমা পলিসির গ্রেইস পিরিয়ড শেষ হবে সেসব পলিসির ক্ষেত্রে এই বিধান কার্যকর হবে। এই সময়ে পলিসিগুলোর অধীনে বীমা ঝুঁকি আবরিত থাকবে এবং পলিসিগুলো চলমান হিসেবে বিবেচিত হবে। সার্কুলার নং ৭৬/২০২০ জারি করে এই বিধান কার্যকর করেছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বিষয়টি নিয়ে ‘প্রিমিয়াম জমা দেয়ার সময় বাড়ানোর কথা ভাবছে আইডিআরএ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। ৯ এপ্রিল প্রকাশিত ওই সংবাদে তুলে ধরা হয়- চলমান সাধারণ ছুটিতে বন্ধ রয়েছে দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান। এই প্রেক্ষিতে বীমার প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধের নির্ধারিত দিনের পরে দেয়া অতিরিক্ত সময় (গ্রেইস পিরিয়ড) আরো এক মাস বাড়িয়ে দু’মাস করার কথা ভাবছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। এর ফলে বর্তমান আইনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রাহকরা প্রিমিয়ামের টাকা জমা দিতে না পারলেও বীমা পলিসি চালু থাকবে।

প্রিমিয়াম ছাড়াই মটর বীমার মেয়াদ ৪৫ দিন বাড়ানোর পরামর্শ:

বিনামূল্যে অতিরিক্ত ৪৫ দিন মটর বীমা কভারেজ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইডিআরএ। সার্কুলার নং ৭৬/২০২০ জারি করে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোকে এই পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী যানবাহন চলাচল সীমিত থাকায় অধিকাংশ গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব মটর বীমার মেয়াদ আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হচ্ছে কিন্তু নতুনভাবে রিনিউ করতে পারছেন না, সেসব পলিসির মেয়াদ কোন প্রিমিয়াম ছাড়াই আরো ৪৫ দিন বর্ধিত করা যেতে পারে।

এর আগে বিষয়টি নিয়ে ‘বিনামূল্যে এক মাস অতিরিক্ত মটর বীমা কভারেজ দিচ্ছে ভারত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত ওই সংবাদে তুলে ধরা হয়- করোনা ভাইরাসের এই মহামারীতে গ্রাহকদের সহযোগিতা করতে বিনামূল্যে এক মাস অতিরিক্ত মটর বীমা কভারেজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের আকো জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। বীমা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, লকডাউনের সময় গ্রাহকরা যেহেতু তাদের যানবাহন ব্যবহার করতে পারছে না তাই তাদের বীমা পলিসিও অব্যবহৃত থাকবে।

এ ছাড়াও আইডিআরএ’র সার্কুলারে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ছুটিকালীন সময়ে বীমা আইন ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক রিপোর্ট ও রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা প্রদেয় তারিখ থেকে আরও ২ মাস বাড়ানো হলো।বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করপোরেশন ও কোম্পানিগুলো বাধ্যতামূলক বা জরুরি বোর্ড সভাগুলো ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে করার জন্য উৎসাহিত করা হলো।

এর আগে এসব বিষয় নিয়ে ‘সপ্তাহে এক দিন অফিস খোলা রাখার দাবি বীমাখাতে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি। ১৫ এপ্রিল প্রকাশিত ওই সংবাদে তুলে ধরা হয়- সপ্তাহে অন্তত এক দিন অফিস খোলা রাখার দাবি উঠেছে দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমাখাতে। কোম্পানিগুলো বলছে, বীমা কর্মীদের বেতন-ভাতা ও কমিশন প্রদানসহ সরকারকে ভ্যাট দেয়ার জন্য হলেও অফিস খোলা প্রয়োজন। তাছাড়া বীমা গ্রাহকরা এখনো অনলাইন মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। তাই প্রিমিয়াম জমা ও পলিসি ইস্যুর প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখা দরকার।