করোনাকালেও নন-লাইফ বীমার ৫ কোম্পানিতে প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক তথা এপ্রিল, মে ও জুন মাসে দেশের নন-লাইফ বীমাখাতে বড় ধরণের প্রভাব ফেলেছে করোনা ভাইরাস মহামারী। এই খাতের ৪৬টি বীমা কোম্পানির গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ কমেছে ২০.৪২ শতাংশ। তবে এর মধ্যেও ৫টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে।

প্রিমিয়াম সংগ্রহে প্রবৃদ্ধি দেখানো সবগুলো কোম্পানিই বেসরকারি খাতের। এর মধ্যে ৪টি বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং একটি প্রতিষ্ঠান অতালিকাভুক্ত। এই পাঁচটি কোম্পানির মধ্যে আবার ১০০ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে দু’টি কোম্পানি। সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স এবং গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে। বেসরকারি এসব কোম্পানির মধ্যে সিকদার ইন্স্যুরেন্স পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। এর মধ্যে ১০০ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে বাংলাদেশ জেনারেল ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চের তুলনায় এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে সব চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটির প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বা ১০৩ শতাংশ। এই তিন মাসে কোম্পানিটির মোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

প্রবৃদ্ধির হারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পুঁজিবাজারে অতালিকাভুক্ত কোম্পানি সিকদার ইন্স্যুরেন্স। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক তথা জানুয়ারি-মার্চে কোম্পানিটির গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ১০১ শতাংশ।

করোনাকালে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা ৯৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির অগ্নি, নৌ- কার্গো, নৌ- হাল, মটর এবং বিবিধ খাতে গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ছিল ১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।  

প্রবৃদ্ধির হারে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নন-লাইফ বীমা কোম্পানি কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা বা ৮৩ শতাংশ।

এ ছাড়াও চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চের তুলনায় এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রিমিয়াম সংগ্রহে প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির প্রবৃদ্ধির হার ৫৪ শতাংশ, টাকার অংকে যা ১২ কোটি ৮৭ লাখ। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির গ্রস প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।   

উল্লেখ্য, দেশের নন-লাইফ বীমার অগ্নি, নৌ- কার্গো, নৌ- হাল, মটর এবং বিবিধ খাতে চলতি বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৮০১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর আগে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে এই সংগ্রহ ছিল ১ হাজার ৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আর ২০১৯ সালে নন-লাইফ বীমায় সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ ছিল ৪ হাজার ৫৫০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।