নূন্যতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণে ৩০ বীমা কোম্পানিকে নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: নূন্যতম ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের জন্য দেশের ৩০টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে নির্দেশ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। একই সাথে মূলধনের ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদেরকে রাখার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
রোববার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বীমা কোম্পানিগুলোকে পাঠিয়েছে আইডিআরএ। কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপ-সচিব) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বীমা আইন ২০১০ এর ২১(৩) ধারা পরিপালনপূর্বক আগামী এক মাসের মধ্যে তফসিল-১ অনুযায়ী নূন্যতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
নন-লাইফ বীমার যেসব কোম্পানিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে সেগুলো হলো- অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স,বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স,সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স,কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ, জনতা ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স ও মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স।
এ ছাড়াও নিটল ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স এবং ইষ্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মূলধন ও শেয়ারধারণ সম্পর্কিত পূরণীয় শর্তের বিষয়ে বীমা আইন ২০১০ এর ২১(৩) ধারা বলা হয়েছে, এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশের বাহিরে নিগমিত কোন বীমাকারীকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়সীমার মধ্যে উপ-ধারা (১) এর অধীনে উহার মূলধন থাকার শর্ত পূরণ করিতে হইবে।
অন্যদিকে উপ-ধারা (১) এর বলা হয়েছে, এই আইন বলবৎ হইবার পূর্বে বাংলাদেশে যে কোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসায়ে নিয়োজিত ছিল এইরূপ বীমাকারী ব্যতীত, অন্য কোন বীমাকারী এই আইন বলবৎ হইবার পর কোন শ্রেণীর বীমা ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিবন্ধীকৃত হইবে না, যদি তাহার তফসিল- ১ এ বিধৃত পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন না থাকে এবং তাহার শেয়ারসমূহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী পরিশোধিত না হইয়া থাকে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করিতে পারিবে: আরো শর্ত থাকে যে, উদ্যোক্তাগণ নিবন্ধনের আবেদন করার পূর্বে পরিশোধিত মূলধনে তাহাদের নিজ নিজ অংশ দায় মুক্তভাবে বাংলাদেশে কোন তফসিলী ব্যাংকে কোম্পানীর নামে জমা করিবেন এবং উক্ত অর্থ দায়মুক্তভাবে জমা হিসাবে থাকিবে।
এদিকে বীমা আইন, ২০১০ এর তফসিল-১ এর ধারা ১(খ) –তে বলা হয়েছে, নন-লাইফ বীমা ব্যবসার জন্য বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোম্পানির ক্ষেত্রে নূন্যতম পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ২৪ কোটি টাকা উদ্যোক্তগণ কর্তৃক প্রদত্ত হবে ও অবিশষ্ট ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ কোটি টাকা জনসাধারণ কর্তৃক প্রদানার্থে উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ’র তথ্য অনুসারে, বীমা আইন পরিপালনের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ বীমা কোম্পানিকে আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। কোম্পানিগুলো হলো- প্রভাতী ইন্সুরেন্স, অগ্রণী ইন্সুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স, ইসলামী ইন্সুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্স ও রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স। কোম্পানিগুলোকে মোট ৪২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মূলধন বাড়াতে হবে।