২৫ কোটি টাকার মানহানীর অভিযোগ

আদিবা-মঞ্জুরুর রহমানের বিরুদ্ধে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান এবং তার মেয়ে ও কোম্পানিটির সাবেক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আদিবা রহমানের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে মানহানীর মামলা করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন।

গত ১২ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। দণ্ড বিধির ৪৯৯/৫০০/৩৪/১০৯ ধারায় দায়েরকৃত সিআর মামলা নং ৫১/২১(মতিঝিল)। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির অন্য চার আসামি হলেন- মো. আবদুল আউয়াল, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মঈন উদ্দিন ফারুক এবং পল্লব ভৌমিক।

পরবর্তীতে ১৭ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে মামলার শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নং- ২৫) আবু সাইদ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা বা অসত্যতা নিরূপনপূর্বক সুস্পষ্ট মতামত সহকারে প্রতিবেদন দাখির করার জন্য  ডি আই জি (পি বি আই) ঢাকাকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

গতকাল বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১) এই মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়নি বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ডেল্টা লাইফের কিছু অনিয়ম নিষ্পত্তি করতে গত ২ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের কাছে অনুরোধ জানান কোম্পানিটির ইভিপি আবদুল আউয়াল। কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি এই অনুরোধ জানান। এ সময় তিনি ১০ লাখ টাকা গিফট এনেছেন বলে জানান আইডিআরএ চেয়ারম্যানকে, যা বীমা কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান পাঠিছেন বলে উল্লেখ করেন।

তবে গিফটের প্রস্তাব নাকোচ করেন ড. এম মোশাররফ হোসেন এবং তিনি বীমা কোম্পানিটিকে যথাযথ বিধি বিধান ও আইন পালনসহ কর্তৃপক্ষের সকল আদেশ নির্দেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন পূর্বক কোম্পানি পরিচালনা করতে বলেন। বিশেষ করে ডেল্টা লাইফের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিনের অনিষ্পন্ন দেনা পাওনা বা দাবির অভিযোগসমূহ এবং মামলাগুলোর নিষ্পত্তির নির্দেশনা প্রদান করেন। একইসঙ্গে আবদুল আউয়ালের নিয়ে আসা গিফট ফেরত পাঠান ড. এম মোশাররফ হোসেন।

মামলায় আরো বলা হয়, ওই ঘটনার পর আবদুল আউয়ালসহ অন্যান্য আসামিরা মামলার বাদী ড. এম মোশাররফ হোসেনকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও নীতিগত আদর্শচ্যূত করতে নানানভাবে অপচেষ্টা ও কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে মামলার ১ নং আসামি আবদুল আউয়াল আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফের সাথে দেখা করতে তার বাসায় হাজির হন।

এসময় বাদী ড. এম মোশাররফের সরলতার সুযোগে নানা রকম কথাবার্ত বলে গোপনে মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করেন আসামি আবদুল আউয়াল। পরবর্তীতে বাদীকে নৈতিকভাবে হেনস্তা করার অপচেষ্টায় এই রেকর্ড সংযোজন বিয়োজন করে কথোপকথনের ধারাবাহিকতা না রেখে ভিন্ন অর্থে সাজিয়ে লিপিবদ্ধ আকারে দুদক, এনএসআই ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থায় প্রেরণ করে।এ ছাড়াও আসামিরা প্ররোচনা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিশ্বাসভঙ্গ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে বাদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

পিটিশন মামলায় আরো বলা হয়, বাদী ড. এম মোশাররফ হোসেনের দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারের ওপর মিথ্যা কলঙ্ক লেপন করার উদ্দেশ্যে আসামিরা বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নিকট বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য লিপিবদ্ধ করে অপপ্রচার করে অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করেছে। যার মূল্যমান ২৫ কোটি টাকার উর্ধ্বে।