‘আমার ভাই পুলিশ কমিশনার’ বলে হুমকি দিলেন জনতা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী প্রার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আপনি এই যে আমার সাথে অনেকগুলো কথা বলেছেন- আমি রেকর্ডে রেখেছি। রেকর্ডে রাইখা আমি আমার ভাই কমিশনার, ওর কাছে দিমু। দেয়ার পর ও বলবে যে আপনি ওরে এইগুলি চার্জ করছেন কেন? তখন আপনার বিরুদ্ধে আরেকটা অভিযোগ হয়ে যায় না! এ রকম সবাই অভিযোগ করে। অভিযোগ করার আনলিমিটেড প্রসেস আছে। কথা বুঝেছেন? আমার ভাই পুলিশ কমিশনার, বর্তমান মতিঝিল এরিয়া। আমি যদি বলি এরা আমারে টর্চারিং করতাছে মানসিকভাবে, তুমি দেখো তো! এক ঘণ্টার মধ্যে সব আবার অভিযোগ হয়ে গেল না! তো এরকমই সবগুলো ব্যাপার, এ রকমই হয়।’
মূখ্য নির্বাহী পদে নিয়োগ অনুমোদনের আবেদনে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ এবং আইডিআরএ’র তদন্তের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে হুমকীর সুরে এসব কথা বলেন জনতা ইন্স্যুরেন্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির আহমেদ। প্রায় পৌঁনে ২ বছর ধরে তিনি কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহীর চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। সম্প্রতি তার নিয়োগ অনুমোদনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আবেদন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বেলা ১২.৩৮টার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়। কথোপকথনের রেকর্ডটি ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি'র কাছে সংরক্ষিত আছে।
মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগের অনুমোদন পেতে মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া নথি দাখিল করে আবেদন করার অভিযোগ উঠেছে জনতা ইন্স্যুরেন্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত মো. বশির আহমেদের বিরুদ্ধে। আইডিআরএ অভিযোগটি করেছেন বীমা কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডারবৃন্দের নামে।
তবে অভিযোগপত্রে কারো নাম না থাকলেও প্রমাণ হিসেবে নথিপত্র দেয়া হয়েছে। গত ৩ আগস্ট এবং ১৫ জুলাই দু’দফা এই অভিযোগ করা হয়। ইতোমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক (আইন) এস এম শাকিল আখতারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অভিযোগ করা হয়েছে, আইন অনুসারে বশির আহমেদের নন-লাইফ বীমা ব্যবসায় ১৫ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা এবং মুখ্য নির্বাহীর অব্যবহিত নিম্নপদে ৩ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা নেই। কোম্পানিটির আইনজীবিও একই মতামত দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। একই সাথে আইনজীবির মতামত পত্রটি অভিযোগের সাথে দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বশির আহমেদ প্রভাব খাটিয়ে অর্ধস্তন কর্মকর্তা সাম্মী রেজা, এইচআর বিভাগের প্রধানকে একটি জাল প্রত্যয়নপত্র প্রদানে বাধ্য করেছেন। উক্ত প্রত্যয়ন পত্রে দেখা যায়, ১ জুলাই ১৯৮৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৬ পর্যন্ত জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে অফিসার গ্রেড- ২ এ উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে বশির আহমেদ জনতা ইন্স্যুরেন্সে ইতোপূর্বে কখনও কর্মরত ছিলেন না। তখন তিনি ছাত্র ছিলেন।
ইতোপূর্বে জনতা ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত ছিলেন এর স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র যেমন- নিয়োগপত্র, অব্যাহতিপত্র বা অন্য কোন রেকর্ড দেখাতে পারবে না। বিষয়টি উক্ত কোম্পানির চেয়ারম্যান অবগত আছেন বিধায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের অনুমোদনের জন্য আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তার পরিবর্তে ভাইস চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করেছেন।
জাল প্রত্যয়নপত্র প্রমাণের জন্য কোম্পানির নিকট রেকর্ড চাওয়া হলে কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রেকর্ড প্রদানে অবশ্যই ব্যর্থ হবেন। কারণ এ ধরণের কোন রেকর্ড কোম্পানিতে নেই। বশির আহমেদের প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
এদিকে অভিযোগের সাথে দাখিলকৃত নথিপত্রের তথ্যে দেখা যায়, ১৯৮৯ সালের ১ জুলাই থেকে জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে অফিসার গ্রেড-২(এ) হিসেবে কাজ করেছেন বলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দাখিলকৃত জীবন বৃত্তান্তে (ফরম বীউনিক-গ) উল্লেখ করেছেন বশির আহমেদ।
অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দাখিলকৃত সিভিতে তিনি লিখেছেন, ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এই ৭ বছর একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে অফিসার (গ্রেড-২) হিসেবে ব্যবসা উন্নয়নে কাজ করেছেন। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেছেন তা উল্লেখ করেননি ওই সিভিতে।
২০২০ সালের জুনে মৃত ন্যাশনাল লাইফের মুখ্য নির্বাহী জামাল এম এ নাসের এবং বিআইএ প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেনকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ওই সিভিতে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মো. বশির আহমেদ, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব)কে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ্য কিনা- তার আইনগত দিক বিবেচনার জন্য কোম্পানির আইন উপদেষ্টার নিকট আইনি পরামর্শ নেয়ার জন্য যে বায়োডাটা পাঠানো হয়েছে তাতে ১ জুলাই ১৯৮৯ থেকে ৩১ আগস্ট ১৯৯৬ পর্যন্ত জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন এমন কোন তথ্য দেয়া হয়নি।
অভিযোগের সাথে দাখিলকৃত আইনজীবীর মতামত পত্রে দেখা গেছে, জনতা ইন্স্যুরেন্সের ২৭ মে ২০২১ তারিখের চিঠির প্রেক্ষিতে একই দিন অর্থাৎ ২৭ মে ২০২১ তারিখে বীমা কোম্পানিটির আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন তার আইনি মতামত দিয়েছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, “এই বিষয়ে আমার মন্তব্য হলো- প্রবিধানমালা ২০১২ অনুসারে জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মতো যেকোন বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করেনি বশির আহমেদ।”
আইনী মতামত নেয়ার জন্য ২৭ মে ২০২১ কোম্পানির আইন উপদেষ্টার কাছে যে বায়োটা পাঠানো হয় সেখানেও তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত জনতা ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত ছিলেন এমন তথ্য দেননি। অথচ এই ৭ বছর জনতা ইন্স্যুরেন্সে কাজ করার বিষয়ে তিনি যে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছেন, সেটা নেয়া হয়েছে এর দু’দিন আগে ২৫ মে ২০২১।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, বশির আহমেদের দাখিলকৃত বায়োডাটায় দেখানো হয়েছে তিনি ২১ এপ্রিল ২০১৯ থেকে ডিএমডি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অথচ তাকে ২৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে কোম্পানির ১৮১তম বোর্ড সভায় ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে এবং ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
তার দাখিলকৃত বায়োডাটায় দেখানো হয়েছে, ১ জুন ২০১৯ থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ তিনি ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে। কাজেই ১ জুন ২০১৯ থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনের প্রশ্নই ওঠে না।
২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বশির আহমেদ জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২ জুলাই ২০১৯ সালে তিনি কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কোম্পানি সেক্রেটারি হিসেবে বার্ষিক প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেছেন এবং এমডি এবং ইডি’র পর তার অবস্থান। কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনের ২০ নং পাতায় পদবি ক্রমানুসারে ৩ নং এ দেখানো হয়েছে।
বশির আহমেদ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ সাল থেকে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চলতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অথচ বীমা আইনের ৮০ ধারা অনুযায়ী কোন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ একাধারে ৩ মাসের বেশি শূন্য রাখা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে উক্ত সময়সীমা আরো ৩ মাস বর্ধিত করতে পারেন। উক্ত আইন অনুযায়ী বশির আহমেদের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন শেষ হওয়ার কথা ২৪ জুন ২০২০ তারিখে। অথচ তিনি অবৈধভাবে এখনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং কোম্পানি থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন।
এ বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্মসচিব) ও মূখপাত্র এস এম শাকিল আখতার ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, বশির আহমেদের বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ আবেদনে বেশ কিছু জালিয়াতির অভিযোগ সম্বলিত একটি চিঠি আমাদের হাতে এসেছে। ঘটনার তদন্তে আমাকে প্রধান করে এরইমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শাকিল আখতার বলেন, আগামী মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) অথবা বুধবার (১১ আগস্ট) আমরা জনতা ইন্স্যুরেন্সে যাবো ঘটনার তদন্ত করতে। আমাদের হাতে যেহেতু সময় খুবই কম, তাই অভিযোগ পত্রের মাধ্যমে যেসব ক্লু বা সূত্র পেয়েছি সেগুলো ধরেই আমরা এগিয়ে যাব। তদন্ত শেষ হলেই কেবল আমরা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে কিছু বলতে পারব।
অভিযোগের বিষয়ে মতামত চেয়ে বশির আহমেদের মোবাইল ফোনে যেসব কথপোপকথন হয়েছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
প্রতিবেদক: আসসালামু আলাইকুম। বশির আহমেদ ভাই বলছেন?
বশির আহমেদ: ওয়ালাইকুমুসসালাম। জ্বি বলছি.....
প্রতিবেদক: আমি আবদুর রহমান ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি.কম পত্রিকা থেকে। কেমন আছেন। আমি একটা বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য ফোন দিলাম, বিষয়টা হচ্ছে আইডিআরএ আপনার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ গেছে, যেখানে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাগজপত্র দাখিল করেছেন। সেখানে আইডিআরএ’র কন্ডিশনগুলো ফিল হয়নি। অর্থাৎ আপনার কর্ম অভিজ্ঞতা ১৫ বছর পূর্ণ হয়নি। আবার সেকেন্ড পোস্ট যেটা সেখানেও ৩ তিন বছর পূর্ণ হয়নি।
বশির আহমেদ: আপনি শোনেন, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সে আমি এমডির পরে ২ বছর ৮ মাস চাকরি করে এসেছি, এমডি’র পরের পোস্ট। তারপর আমি প্রোগ্রেসিভে চাকরি করেছি সাড়ে ৪ বছর। আর সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের সিস্টার কনসার্ন
প্রতিবেদক: প্রগ্রেসিভ তো লাইফ।
বশির আহমেদ: যেখানে আইনে বলা আছে- ইন্স্যুরেন্স ব্যবসার সাথে জড়িত আছে কিনা।
প্রতিবেদক: না না, যে ধরনের বীমার জন্য আপনি আবেদন করেছেন।
বশির আহমেদ: আপনি আইনটা দেখেন...। আগে অনেক এমডিরা শুধু এজেন্ট দেখাতো। কিন্তু আমিতো এজেন্ট... অমুক সমুক কিছু না। আমি চাকরি করেছি, দীর্ঘ দিন আমি চাকরি করেছি ইন্স্যুরেন্স লেভেলে। আমি ওইটার অভিজ্ঞতা দিয়েছি। কাগজপত্র আছে, সব কাগজপত্র সাবমিট করছি। অভিযোগ করবেই, স্বার্থবাদী লোকেরা অভিযোগ করবেই, এইটা স্বাভাবিক। আমার কাগজপত্র দেখেন। কাগজপত্র দেখে যেটা সঠিক সেটা বিচার করবেন, নাকি!
প্রতিবেদক: আমি যে কাগজপত্র এখানে দেখলাম, আইডিআরএ সাবমিট করা, সেটা দেখলাম। সেটাও হয় না সে অনুযায়ী।
বশির আহমেদ: সেইটা না হলে আপনি আমাকে উপদেশ দিয়ে লাভ আছে...? আমার বক্তব্য হলো- আমাকে বোর্ড... জোর করে কোথাও কি এমডি হতে পারে! ...এমডি কে করে বলেন... বোর্ড করে। একটা বোর্ড দেখে তার কাজের অভিজ্ঞতা, কাজের দক্ষতা, তার বৃদ্ধি, তার যাবতীয় বিষয় বিচার বিবেচনা করে ইন্টারভিউ নিয়ে তারপর এমডি’র প্রস্তাব পাঠায়।
এখন বোর্ড যদি প্রস্তাব পাঠায়, সেই ক্ষেত্রে যদি কোন কাগজপত্রের ভুল আইডিআরএ ধরে ৬ মাস পরে আইসা, সেটা ধরার কথা ১৫ দিনে। আইসা যদি ৬ মাস পরে ধরে তবে সেখানে আমাদেরও একটু ভাবার ব্যাপার আছে এবং আইন-কানুনের একটা ব্যাপার আছে না!
তয়, এগুলো এখন আপনারা যদি আমাদের বিভ্রান্তি করেন। এমনিতেই ইন্স্যুরেন্সে ভালো লোক আসে না। তারপরে আমরা যারা অভিজ্ঞতা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করতেছি, ইন্স্যুরেন্সকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করতেছি। যদি আপনারা ধ্বংশ করে দিতে চান, আমরা আমাদের পেশা অনেক আছে...
প্রতিবেদক: ধ্বংস করা আমাদের উদ্দেশ্য কখনই না, ধ্বংস আমারা কখনোই করার পক্ষে না। আমাদের উদ্দেশ্য ইন্স্যুরেন্স সেক্টর যাতে এগিয়ে যায। ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটা ধরিয়ে দেয়া আমাদের কাজ।
বশির আহমেদ: যেই কোম্পানি মরা কোম্পানি ছিল। সেই কোম্পানি এখন সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ট দিছে। এই কোম্পানির হিসাবগুলো দেখেন, আগের ৫ বছরের হিসাব আর এখন আমার যুগ থেকে হিসাবগুলো দেখেন... তাহলে আমার দক্ষতাটা বিচার করতে পারবেন- ইন্স্যুরেন্সে ভালো করছি না খারাপ করছি!
এখন আপনারা যদি আমাদের বিভ্রান্তি করেন, হয়রানি করেন- সেটা অন্য বিষয়। সেটা আমি কিছু বলবনা।
প্রতিবেদক: বিভ্রান্তি হয়রানি করা তো আমাদের উদ্দেশ্য না। মূল ফ্যাক্টটা তুলে ধরা আমাদের কাজ।
বশির আহমেদ: আইডিআরএ অনেক অভিযোগ যাবে, আমার আপনার সবারই বিরুদ্ধে যখনই কোন স্বার্থন্বেষী মহল তার স্বার্থ উদ্ধার করতে পারবে না, তখন অনেক অভিযোগ যাবে।
প্রতিবেদক: সেটা অভিযোগ যেতে পারে, সেটা অন্য বিষয়
বশির আহমেদ: আইডিআরএ আমলে নিয়ে তদন্ত করবে। এইটা আমি আর আপনি অভিযোগ দিয়ে কোন লাভ নাই। এটা আইডিআরএ-ই বুঝবে।
আমরা কাগজপত্র আবার দিচ্ছি, আবার চ্যালেঞ্জ করতেছি। আইডিআরএ যদি মনে করে এই কাগজপত্র দিয়ে তার সাফিসিয়েন্ট সে করবে। আর যদি সাফিসিয়েন্ট না হয়, তাহলে বোর্ডকে জানাবে। বোর্ডকে জানালে আমার আবার কোয়ারি করার... হাইকোর্ট পর্যন্ত যাওয়ার, সুপ্রীম কোর্ট পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ আছে আইনে। আমি ওই পর্যন্ত যাবো।
প্রতিবেদক: আপনি যেটা বলছেন, আপনি যে কাগজপত্র দাখিল করেছেন সেটা ঠিক আছে। আইডিআরএ সেট বিচার করবে। এইতো বিষয়!
বশির আহমেদ: আচ্ছা- কাগজপত্র ঠিক ছাড়া এমডির পারমিশন চাওয়া যায়?
প্রতিবেদক: না, সেটার তো সুযোগ নাই। এখানে আমরা অভিযোগকারির যে কাগজপত্র দেখলাম।
বশির আহমেদ: আরে অভিযোগ কেন করেছে... অভিযোগ করেছে- তার কোটি কোটি টাকার স্বার্থ হাসিল করতে পারে নাই বা বাটপারি-চিটারি করেছে, ঢুকতে পারে নাই, দুর্নীতি করেছে। এখন সে তো করবেই। দুর্নীতি ধরা পড়ছে, এই কারণে সে চাইবে- আরেকজন এমডি কি করে আটকিয়ে রাখা যায়। যদি কারো আটকিয়ে রাখার ইচ্ছা থাকে সে তো কতো অভিযোগ করবে।
আপনি এই যে আমার সাথে অনেকগুলো কথা বলেছেন- আমি রেকর্ডে রেখেছি। রেকর্ডে রাইখা আমি আমার ভাই কমিশনার, ওর কাছে দিমু। দেয়ার পর ও বলবে যে আপনি ওরে এইগুলি চার্জ করছেন কেন? তখন আপনার বিরুদ্ধে আরেকটা অভিযোগ হয়ে যায় না।! এর রকম সবাই অভিযোগ করে। অভিযোগ করার আনলিমিটেড প্রসেস আছে। কথা বুঝেছেন?
আমার ভাই পুলিশ কমিশনার, বর্তমান মতিঝিল এরিয়া। আমি যদি বলি এর আমারে টর্চারিং করতাছে মানসিকভাবে, তুমি দেখো তো! এক ঘণ্টার মধ্যে সব আবার অভিযোগ হয়ে গেল না! তো এরকমই সবগুলো ব্যাপার, এ রকমই হয়। আমরা কাজ করতে আইছি....
...সত্য প্রমাণিত হওয়ার পরে না ....আমি আর আপনি কি বলব।
ওকে ঠিক আছে ভাইয়া। আমার সামনে ৪/৫ জন আছে, কথা বলতেছি...