ডেল্টা লাইফের ৩৬৮৭ কোটি টাকার ক্ষতি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন জেয়াদ রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ডেল্টা লাইফের ৩৬৮৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদ, মন্ত্রণালয়কে আইডিআরএ’র চিঠি’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেয়াদ রহমান। এই প্রতিবাদের সংযুক্তিতে ৩ পাতার একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  ই-মেইলে ডেল্টা লাইফের পরিচালক হিসেবে জেয়াদ রহমান এ বিবৃতি পাঠান। 

ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য বিবৃতিটি বানান সংশোধন করে হুবহু প্রকাশ করা হলো।

“ডেল্টা লাইফের ৩৬৮৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদ, মন্ত্রণালয়কে আইডিআরএ’র চিঠি” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে বিবৃতি

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে গত ০১ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে অনলাইন পত্রিকা “ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি” কর্তৃক প্রকাশিত অপ্রাসঙ্গিক, অযৌক্তিক, মিথ্যা ও বানোয়াট খবরের মাধ্যমে সম্মানিত শেয়ারহোল্ডার, পলিসিহোল্ডার, কর্মকর্তা-কর্মচারী, এজেন্ট এবং শুভানুধ্যায়ীদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং উক্ত বিষয়ে আমাদের অবস্থান নিম্নে তুলে ধরছি।

দেশের স্বনামধন্য, প্রথিতযশা ও প্রতিষ্ঠিত অনলাইন পত্রিকা “ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি” বীমা শিল্পের শীর্ষস্থানীয় জীবন বীমা কোম্পানি ও পরপর পাঁচ বার AAA রেটেড প্রাপ্ত ডেলটা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে একতরফা প্রতিবেদন প্রকাশ করা খুবই দুঃখজনক ও বীমা শিল্পের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (IDRA) চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন, এফসিএ, তাহার ঘুষ দাবির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে প্রত্যাহারে ব্যর্থ ও ব্যক্তিগত আক্রোশের বশীভূত হয়ে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে অবৈধভাবে প্রশাসক নিয়োগ দেন এবং “প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ হবে না” মর্মে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক ইতিমধ্যে রুল জারি হয়েছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং তারিখে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে চার মাসের মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন এবং তার নিয়ন্ত্রনাধীন অডিট ফার্ম ও অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা বিভাগের অসাধু ও পথভ্রষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টায় মাতোয়ারা হয়ে উঠেন। গত আট মাসে উনার নিয়োগকৃত তিনজন প্রশাসকের মধ্যে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের কারণে দুজন ডেল্টা লাইফ ছাড়তে বাধ্য হয় এবং তাহাদের বিরুদ্ধে দুটি করে অর্থ আত্মসাৎ এবং অনিয়মের মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, তিনজন প্রশাসকেরই নিয়োগ পত্রে নিরীক্ষা কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ (IDRA) বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকা সত্ত্বেও ড. মোশাররফ তার দাবিকৃত ঘুষ ও বিভিন্ন পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে উঠে আসা দূর্নীতিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে বিতর্কিত করার পায়তারা করছেন। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তারই তত্ত্বাবধানে ২টি ফার্মের (Howladar Yunus এবং Fames & R.) মাধ্যমে নিরীক্ষা করেও যখন তিনি তার মনগড়া প্রতিবেদন পাচ্ছেন না, তখন তিনি তার নিয়ন্ত্রনাধীন ফার্মের (আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী - AHKC) পার্টনার ড. জামশেদ সানায়েত চৌধুরী ও অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা বিভাগের মাধ্যমে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, নিরীক্ষক হিসেবে প্রশাসক কর্তৃক দায়েরকৃত একটি মিথ্যা মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ড. জামশেদ-এর বিরুদ্ধে Financial Reporting Council (FRC) এবং Institute of Chartered Accountants of Bangladesh (ICAB) তে অভিযোগ দাখিল হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ্য যে, কোম্পানীতে নিযুক্ত অডিট ফার্ম মেসার্স একনবিন এর দেয়া তথাকথিত প্রভিশনাল ইন্টেরিম প্রতিবেদনে উল্লেখিত টাকার মানিলন্ডারিংসহ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, রাজস্ব ফাঁকি ও অব্যবস্থাপনার যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বলে বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অলৌকিক, মিথ্যা, বানোয়াট এবং কোম্পানীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অপপ্রয়াস মাত্র।

বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট ও পরিষ্কার এবং প্রশ্ন থাকে যে, কেন চেয়ারম্যান (IDRA) ৪ মাসের জন্য অবৈধভাবে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে, ১১ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা ও অন্তবর্তীকালীন নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এহেন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, যাহা বীমা শিল্প তথা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ।

এখানে উল্লেখ্য যে, ড. মোশাররফ হোসেন, চেয়ারম্যান, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA) এর সদস্য ও চেয়ারম্যান পদের বৈধতা নিয়ে ইতোমধ্যে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক রুল ইস্যু হয়েছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) ও বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (BFIU) কে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তার অবৈধ অর্জন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্যগুলি অনুসন্ধান ও তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।

প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রতিবেদনটিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র চিঠি থেকে প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোন বক্তব্য নেই। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠি ও চিঠিতে সংযুক্ত ৭৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দেয়া তথ্যের কোন দায় ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র নয়।